দ্য হট টপিক ‘এশিয়া কাপ’

জলঘোলা পরিস্থিতি। তবে ইতোমধ্যেই এশিয়া কাপের জন্য দুইটি ভিন্ন ভেন্যু ঘোষণা করে ফেলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

‘এশিয়া কাপ’- রীতিমত হট টপিক বলা যায়। অন্তত ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ বিষয়টিকে আরও খানিকটা গরম করে তুলছে। তবে বেশ উত্তেজনার মাঝেও নিশ্চুপ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। যেন তাদের কোন মত নেই। কেবলই দর্শক দেশটির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

জলঘোলা পরিস্থিতি। তবে ইতোমধ্যেই এশিয়া কাপের জন্যে দুইটি ভিন্ন ভেন্যু ঘোষণা করে ফেলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। দুইটি ভিন্ন পর্যায়ে বিভক্ত হয়ে আয়োজিত হবে এবারের এশিয়া কাপ। প্রথমভাগের ম্যাচের জন্য নির্ধারিত ভেন্যু লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ভাগের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে।

যদিও এখনও নাটকের বেশ খানিকটা বাকি। কেননা আগে থেকেই রাজনৈতিক বৈরিতার দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের খেলতে যাওয়ার বিষয়ে অসম্মতি জানিয়ে রেখেছিল ভারত। সেই অসম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে পিসিবি হাইব্রিড মডেল প্রস্তাবনা করেছিল।

সেখানে দুইভাগে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাবনা দিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেই প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতেই ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে পাকিস্তান। এই মডেল অনুযায়ী প্রথম পর্বের চার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের লাহোরে। এরপর সূচিতে থাকা বাকি ম্যাচগুলো আয়োজিত হবে দুবাইতে। এই নিয়মানুসারে ভারতের ম্যাচগুলো দ্বিতীয় ধাপে দুবাইতে অনুষ্ঠিত হবে।

তাছাড়া টুর্নামেন্টের ফাইনাল থেকে শুরু করে বাদবাকি সব আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু হবে দুবাই। এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু এখানে প্রধান চিন্তার কারণ সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রচণ্ড গরম। যদিও বলা হচ্ছে দুবাইয়ের ম্যাচগুলো শুরু হবে সন্ধ্যার পর। তবুও তাতে খেলোয়াড়দের প্রস্তুতিজনিত ঘাটতি, সাথে ইনজুরিতে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল হতে পারে।

এদিক থেকেই সোচ্চার হওয়া উচিত  ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। তবে খানিকটা গলা পরিষ্কার করেই যেন আবার নিশ্চুপ বিসিবি। যদিও বিসিবি হাইব্রিড পদ্ধতিতে এশিয়া কাপ আয়োজনের বিষয়ে বেশ নমনীয় হয়েছে বলা চলে। তাতে আখেরে ক্ষতিটা বাংলাদেশের হওয়ার সম্ভাবনাই রয়েছে বেশি।

ভারত কিংবা পাকিস্তানের মত বাংলাদেশের পাইপলাইনে বিশ্বমানের খেলোয়াড় প্রস্তুত নেই। সেদিক বিবেচনায় বিশ্বকাপের মাস খানেক আগে এমন বৈরি কন্ডিশনে খেলতে সম্মতি জানানোর বিষয়টি ঠিক কতটা যুক্তিসংগত, সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।

অন্যদিকে, এই সম্ভাবনাও রয়েছে যে হাইব্রিড মডেলেও ভারতের অসম্মতি থাকতে পারে। কারণটা সেই অতিরিক্ত গরম। ভারত বেশ আগেভাগেই এশিয়া কাপের ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কার নাম প্রস্তাব করে রেখেছিল। এখন আবার ভারতের বেঁকে বসার প্রবল সম্ভাবনাও রয়েছে। সবকিছু জানা যেতে পারে ২৭ মে। সেদিন আহমেদাবাদে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর চূড়ান্ত তথ্য জানা যাবে।

তাছাড়া পাকিস্তান রীতিমত নাছোড়বান্দা। তারা এশিয়া কাপ আয়োজনের এই সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ। এক্ষেত্রে ব্যাবসায়িক দিকটা বড় কারণ। আবার সেদিক থেকেই ভারত পাকিস্তানকে কোনঠাসা করতে চায় কিনা, তেমন প্রশ্নও তোলা যায় চাইলেই।

যদিও শেষ অবধি পাকিস্তানের কাছ থেকে এশিয়া কাপ আয়োজনের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলে, বেশ কঠোর অবস্থানেই যাওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে না যাওয়ার কথা ইতোমধ্যেই জানিয়ে রেখেছে পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি। সেক্ষেত্রে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন দেশটির সরকারকে।

তাছাড়া বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাও খুব একটা উচ্চবাচ্য করছে না। এর পেছনের কারণও সম্ভবত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া। এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করা প্রতিটি দল, দশ লাখ ডলার পেয়ে থাকে। সেটাও বেশ বড় অংকের অর্থ। সেই অর্থ হাত ছাড়া নিশ্চয়ই কেউ করতে চাইবে না। ওদিকে শ্রীলঙ্কার বোর্ডের অবস্থা বেশ বেগতিকও বলা চলে।

এতসব কেচ্ছা-কাহিনীর শেষ ফলাফলটা কি হবে সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে এই রাজনৈতিক বৈরিতা ক্রিকেট মাঠের বিরুপ এক প্রতিচ্ছবি স্থাপন করছে। এতে করে ক্রিকেট হতে পারে কলুষিত। সম্ভাবনা কিন্তু এবার প্রচুর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...