স্পিন বিভাগ নিয়ে কত হাহাকার পাকিস্তান ক্রিকেটে, তবু সুযোগ দেয়া হয়নি সাজিদ খানকে। জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর থেকে দলের বাইরে ছিলেন তিনি। শেষমেশ দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় দলে ফিরেছেন তিনি, ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁকে স্মরণ করেন নির্বাচকরা – আর সেটার প্রতিদান সবচেয়ে সেরা উপায়ে দিলেন তিনি।
ইনফর্ম ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপের কাছে কোন জবাবই জানা ছিল না এই অফ স্পিনারের বিরুদ্ধে, একের পর এক ব্যাটার কেবল উইকেটে এসেছেন আর আত্মাহুতি দিয়েছেন তাঁর বলে। সবমিলিয়ে সাত উইকেট শিকার করেছেন তিনি; তাতেই ২৯১ রানে গুটিয়ে গিয়েছে সফরকারীরা আর পাকিস্তান পেয়েছে ৭৫ রানের বিশাল লিড।
মুলতানের এই পিচেই প্রথম টেস্টের পাঁচ দিনের খেলা হয়েছিল। তাই পিচে যে স্পিনাররা ছড়ি ঘুরাবেন সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন পাক তারকা।
অলি পোপকে দিয়ে যাত্রা শুরু, একেবারে ক্লাসিক অফ স্পিন ডেলিভারি। পঞ্চম স্ট্যাম্পে পিচ করে বল সরাসরি আঘাত হেনেছিল অফ স্ট্যাম্পে, পোপের চোখে-মুখে তখন ছিল বিস্ময়। খানিকটা বিরতি দিয়ে জো রুটকেও বোল্ড করেন তিনি, সুইপ খেলতে গিয়ে প্লেয়েড অন হয়েছেন এই ব্যাটার।
সেঞ্চুরিয়ান বেন ডাকেট কিংবা পাকিস্তানের যম হ্যারি ব্রুককে আউট করতে দরকার ছিল বিশেষ কিছুর। সাজিদ তাই করেছেন, দু’জনকেই আউট করেছেন তীক্ষ্ণ টার্নে। বাঁ-হাতি ওপেনার ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে আর ব্রুকের ব্যাট-প্যাড গলে বল আঘাত হেনেছে উইকেটে। লোয়ার অর্ডারকেও দাঁড়াতে দেননি তিনি, ব্রাইডন কার্স, ম্যাথু পটস এবং শোয়েব বশিরকে এক অঙ্কের ঘরে আউট করেন।
বেন ডাকেট যখন ব্যাট করছিলেন তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইংল্যান্ডের হাতেই; দুই উইকেটে ২১১ রান, ইংলিশরা তাই পাকিস্তানকে আরো একবার রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু একজন সাজিদ ছিলেন বলে রক্ষা, বলের ঘূর্ণিতে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছেন তিনি – অনেকদিন ধরেই তো পাকিস্তান ক্রিকেট এমন একজন ঘূর্ণিবাজকে খুঁজছে যিনি এভাবেই পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের চিত্রপট।