অবশেষে স্বস্তির হাসি হেসেছে বাবর আজমের ব্যাট। দীর্ঘদিনের রান খরা কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে করলেন অর্ধশতক। ওয়ানডেতে ৩৩ নম্বর ফিফটির দেখা পেলেন ২১টি আন্তর্জাতিক ইনিংস আর সময়ের হিসাবে ২১৯ দিন পর।
নিউল্যান্ডসে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আব্দুল্লাহ শফিকের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান। ক্রিজে এসে বাবর আজম নিজের চিরাচরিত ভঙ্গিমাতেই ধীরগতিতে রান তোলার কাজ শুরু করেন। এক প্রান্ত আগলে রাখার দায়িত্ব নিলেও ব্যাট থেকে ঝড় তুলতে ব্যর্থ হন। সায়েম আইয়ুবের সাথে পাল্লা দিয়ে মাঝেমধ্যে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করলেও, দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর যেন খোলসে ঢুকে যান তিনি। ৪২ বলে ৩৩ রান করা বাবরের ফিফটিতে পৌঁছাতে লেগেছে ৭৩ বল।
ফিফটির পরেও হাত খুলতে পারেননি বাবর। রিজওয়ান শুরুতে উইকেটে থিতু হতে সময় নিলেও পরে রানে বলে এক করার চেষ্টা চালান। কিন্তু বাবরের ব্যাট থেকে পাওয়া যায়নি প্রত্যাশিত উত্তাপ। ক্রিজে যতক্ষণ ছিলেন, লড়াইটা চালিয়ে গেছেন। তবে প্রশ্ন হলো, কার বিরুদ্ধে লড়লেন তিনি? প্রতিপক্ষের বোলারদের বিরুদ্ধে, নাকি নিজের মধ্যেকার কোনো দ্বিধার বিরুদ্ধে! ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তে এসেও তার ব্যাটিং দেখে যেন মনে হয়, ফিরে যাচ্ছি নব্বইয়ের দশকের সেই ধীর গতির ক্রিকেটে।
৯৫ বলে ৭৩ রানে শেষ হয়েছে তার সংগ্রামী ইনিংস। এই ইনিংসে নেই একটিও ছক্কা। পরিসংখ্যানের পাতায় যুক্ত হলো আরেকটি অর্ধশতক। এর মধ্যেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, বর্ষসেরা ওয়ানডে ব্যাটার হিসেবেই শেষ করবেন ২০২৪ সাল। টানা চার বছর ধরে এই খেতাবের মুকুট বাবরের মাথায়। এত শতো অর্জন আর এতদিন পরে রানে ফেরাটা আত্নবিশ্বাস যোগাবে বাবর কে।
তবে এদিনের সব আলো যেন নিজের দিকে কেড়ে নিলেন মোহাম্মাদ রিজওয়ান। বাবরের সম্পুর্ণ বিপরীত ঘরনার ব্যাটিং করে দলকে নিয়ে গেছেন বড় সংগ্রহের পথে। বাবরের তৈরি করা ভিত্তিতে একটা মজবুতি দিয়েছেন তিনি। ৫৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পরা পাকিস্তানকে টেনে তুলেন তিনি। অন্যপ্রান্ত থেকে বাবরের ডটের চাপ না নিয়ে ঘুরিয়ে গেছেন রানের চাকা। বাবরকে নিয়ে গড়েছেন শতরানের জুটি। ৮২ বলে ৮০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটায় ছিল ৭টা বাউন্ডারি আর তিনটি ওভার বাউন্ডারি। একটা দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যাওয়ার আগে দলকে পৌছে দিয়েছেন বেশ শক্ত অবস্থানে।
পাকিস্তানের একান্ত আপন ‘বাবর-রিজওয়ান’ জুটির এটি ১৬তম আন্তজার্তিক শতোরানের পার্টনারশিপ ছিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ১- ০ তে এগিয়ে আছে পাকিস্তান।