বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এবার করোনা ভাইরাসের কারণে হচ্ছে না। এই সময়ে বরং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজন করতে যাচ্ছে ভিন্ন একটা টি-টোয়েন্টি লিগ: বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।
পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্টর অনেক কিছুই এখন জানা হয়ে গেছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক এই টুর্নামেন্টের নানাদিক।
- খেলবে কোন কোন দল?
পাঁচটি বিভাগের নামে অনেক বিপিএলের মতো করেই এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৫টি দল। আজই মাত্র এই ৫টি দলের নাম ও তাদের পৃষ্ঠপোষকের নাম ঘোষনা করা হয়েছে। এই ৫টি দল হবে বরিশাল, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের নামে। তাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকবে ফরচুন গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, মিনিস্টার গ্রুপ, জেমকন ও গাজী গ্রুপ।
দলগুলোর নাম হবে এরকম – ফরচুন বরিশাল, বেক্সিমকো ঢাকা, মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী, জেমকন খুলনা ও গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।
- খেলবেন কারা?
কোনো বিদেশি খেলোয়াড় থাকছেন না এই টুর্নামেন্টে। দেশের শীর্ষ খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে নিলামের মতো আয়োজন-প্লেয়ার্স ড্রাফট। দেশের ১৬০ জন খেলোয়াড়ের নাম থাকার কথা এই ড্রাফটে। সেখান থেকে দলগুলো বেছে নেবে খেলোয়াড়দের।
আগামী ১২ তারিখ ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এই ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকেই প্রতিটি দলের খেলোয়াড় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। সম্প্রতি বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেছেন, ‘আমরা ২১ বা ২২ তারিখের দিকে টুর্নামেন্ট শুরু করার পরিকল্পনা করেছি। তার আগে ১২ তারিখে ১৬০ জন খেলোয়াড় নিয়ে প্লেয়ার ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে আমাদের ৯ ও ১০ তারিখে ফিটনেস টেস্ট আছে।’
- খেলোয়াড়রা কেমন টাকা পাবেন?
ছোট টুর্নামেন্ট হলেও খেলোয়াড়দের প্রাপ্তি একেবারে কম নয়। শীর্ষ ৫ জন খেলোয়াড় সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা করে পাবেন। বাকীরা গ্রেড অনুযায়ী টাকা পাবেন।
এই টাকা বন্টন হবে চারটি গ্রেডে। এ সম্পর্কে আকরাম বলেছেন, ‘এ, বি, সি, ডি চারটি গ্রেড নির্ধারণ করা হবে। চারটি গ্রেড করে আমরা প্লেয়ার দিচ্ছি। যেখানে সব প্লেয়ার থাকবে। পারিশ্রমিক এখনও চূড়ান্ত না করলেও আমরা ভেবেছি সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা করে পাবেন ‘এ’ গ্রেডের ক্রিকেটাররা। আর সর্বনিম্ম পারিশ্রমিক হতে পারে ৫ কিংবা ৪ লাখ টাকা।’
বিপিএলে আইকন খেলোয়াড় থাকলেও এই টুর্নামেন্টে আইকন থাকবে না, ‘এখানে আইকন থাকবে না। পাঁচজন খেলোয়াড় ‘এ’ গ্রেডে থাকবে। ওরাই মূলত আইকন।’
- কোচিং স্ট্যাফ কেমন হবে?
দেশী-বিদেশী মেলানো কোচিং স্ট্যাফ থাকবেন। তবে কোনো দল নিজেরা কোচদের বেছে নিতে পারবে না। পুরো সাপোর্ট স্ট্যাফই বিসিবি ঠিক করে দেবে। আকরাম এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমরা ক্রিকেট বোর্ড থেকেই সব করে দেবো। বিদেশিদের সঙ্গে সঙ্গে দেশিও অনেক ট্রেনার, ফিজিও, কোচ, ফিল্ডিং কোচ, বোলিং কোচ আছে ওদের আমরা যুক্ত (ইনভলভ) করছি। হ্যাঁ ,আমরা এখন মনে করেন যে, প্রতিটি দলকে একটা করে দিয়ে দিচ্ছি দেশিও কোচ। ওরা টিমের সঙ্গে থাকবে। পুরো সেটআপটা ক্রিকেট বোর্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে। ‘
- খেলা দেখা যাবে কী করে?
মাঠে গিয়ে খেলা দেখার উপায় থাকছে না, এটা নিশ্চিত। এটাও নিশ্চিত যে, টিভিতে ভালো মানের সম্প্রচার দেখা যাবে।
বিসিবি সম্প্রচার স্বত্ত বিক্রি করতে চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ৯ তারিখ সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত এই স্বত্ত কিনতে চেয়ে আবেদন করা যাবে। ইতিমধ্যে ভালো সাড়া পাচ্ছে বিসিবি। তারা ১০ তারিখের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে যে, কারা সম্প্রচার স্বত্ত পেলো এবং কোন কোন টিভিতে খেলা দেখা যাবে।
- সূচী জানা গেছে?
না। তবে দ্রুতই এটা জানিয়ে দেবে বিসিবি।
- কেন এই টুর্নামেন্ট?
এটাকে বিসিবি মূলত একটা পরীক্ষা হিসেবে দেখছে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তানে জৈব বলয়ের মধ্যে আর্ন্তজাতিক খেলা শুরু হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। ভারতেও মুম্বাইকে কেন্দ্র করে খেলা হবে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ফেরানো জরুরী বলে মনে করছে বিসিবি। আর তা না হলে বিসিবির করোনা কালের লোকসান দীর্ঘায়িত হবে।
করোনাকালে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ফেরানোর জন্য একটা বড় মহড়া হিসেবে দেখা হচ্ছে এই টুর্নামেন্টটিকে। এখানে প্রায় আশিজন খেলোয়াড়সহ শতাধিক ব্যক্তিকে জৈব বলয়ের মধ্যে রেখে আয়োজন করা হবে টুর্নামেন্ট। ফলে এই পরীক্ষায় পাশ করলে বিদেশী দলও বাংলাদেশ সফর করতে রাজী হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ হতে যাচ্ছে হয়তো বাংলাদেশ সফর করা করোনার পর প্রথম দল।