মেহেদী হাসান মিরাজ, বেশ হাঁপিয়ে গেছেন। একই দশা মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও। বাকিরাও দ্রুতই অক্সিজেনের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টাই করে গেছেন। চলছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ফিটনেস ট্রেনিং। দু’দিন আগেই হয়েছে ইয়ো ইয়ো নামক মানদণ্ডের পরীক্ষা। সেখানে খেলোয়াড়দের ফিটনেস লেভেলটা যাচাই করা হয়েছে। দেশের ক্রিকেটাঙ্গন যখন নতুন কোচ খুঁজে হয়রান, তখন ফিটনেসে থাকাটাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বাংলাদেশ দল। তামিম ইকবালের পদত্যাগের ঘটনা খুব বেশি ছুঁয়ে যায়নি তাঁদের।
পাস নম্বর ১৮.৪ থাকলেও, লেটার মার্ক পেয়ে উতরে গিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাকিরা গড়পড়তা ১৭-১৮ নম্বর করে পেয়েছেন। তবে তাতে অবশ্য কিছু আসে যায় না। এই নম্বর স্রেফ মূল্যায়ন। ওই যে বোর্ড পরীক্ষার আগে হওয়া টেস্ট আরকি।
সবার হাতেই রয়েছে পর্যাপ্ত সময়। আসল পরীক্ষাক্ষেত্র তো বিশ্বকাপ। ওয়ানডে বিশ্বকাপে এবার বাংলাদেশকে খেলতে হবে ৯টি ম্যাচ। বেশ লম্বা এক সফর। বাংলাদেশ অবশ্য বেশ দূরের চিন্তাই করছে। তাতে করে ম্যাচের সংখ্যা নি:সন্দেহে বেড়ে যাবে। তেমনটা হলে টানা ৪০-৪৫ দিন পুরো দলকে থাকতে হবে প্রবল চাপের মধ্যে। সেটা যেমন মানসিক তেমনই শারীরিক।
সেজন্যই বাংলাদেশ দল নিজেদেরকে সব রকমভাবেই প্রস্তুত করে নিচ্ছে। ৬ আগস্ট শুরু হবে স্কিল ট্রেনিং ক্যাম্প। সেই ক্যাম্পের আগে ফিটনেস লেভেল যাচাই করাটা ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের এই ফিটনেস যাচাইয়ের ফলে কর্ম পরিকল্পনা সাজাতে সুবিধেই হবে টিম ম্যানেজমেন্টের। প্রতিদিন কোন খেলোয়াড়ের কতটুকু স্কিল ট্রেনিং আর কতটুকু ফিটনেস ট্রেনিং করা দরকার সেটার একটা রুপরেখা নিশ্চয়ই করে ফেলেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।
খেলোয়াড়রা তাই একাধারে নিজেদের ক্রিকেটীয় দক্ষতা শাণিত করার পাশাপাশি নিজেদের ফিটনেসটাও নিয়ে যেতে পারবেন ভিন্ন উচ্চতায়। সবকিছুই হবে সমান্তরালভাবে। যদিও বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে এশিয়া কাপ। সেই টুর্নামেন্টও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ২০-২২ জনের একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ফেলার কথা নির্বাচকদের। তবে এখন অবধি সেই তালিকার কোন হদিস মেলেনি। তবে শীঘ্রই সেই তালিকা নিয়ে হাজির হবে বিসিবি। কিন্তু তার আগে ফিটনেসেই নজর দিচ্ছেন তালিকার আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়রা।
এদিনের ফিটনেস ট্রেনিংয়ে মুশফিকুর রহিমও যুক্ত হয়েছেন। সম্প্রতি জিম অ্যাফ্রো টি-টেন লিগে খেলে এসেছেন এই তারকা। তার দল ফাইনালে গিয়েও হয়েছিল শিরোপা বঞ্চিত। তবে সেই আক্ষেপ দূরে ঠেলে তিনিও মাঠে ঘাম ঝড়িয়েছেন। মূল লক্ষ্য এখন জাতীয় দলের হয়ে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে মাঠ মাতানো।
দলে থাকা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সংখ্যা কমছে ধীরে ধীরে। এশিয়া কাপে তামিম ইকবাল থাকছেন না। সেদিক থেকে দলে মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বটা খানিক বেড়েই গেল। ব্যাট হাতে পারফর্ম করা ছাড়াও তরুণদের দিক নির্দেশনা দিতেও মুশফিককে বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হচ্ছে। প্রস্তুতির বিষয়ে এক বিন্দু ছাড় মুশফিক কখনোই দেননি। এদিক থেকে তিনি বরং আলাদাই।
সম্ভাব্য দুই অধিনায়ক ছাড়াই বাংলাদেশ দল নিজেদের পরিকল্পনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফিটনেস, স্কিল সেই সাথে সঠিক পরিকল্পনার ছক আঁকা। সব কিছুতেই যেন একটু বাড়তি মনোযোগী গোটা দল।