তর্কসাপেক্ষে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অন্যতম সেরা পেস বোলিং ইউনিট বাংলাদেশের। অথচ একটা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে হাপিত্যেশ করতে হয়েছে। হন্যে হয়ে খুঁজতে হয়েছে বিশ্বমানের পেসার। কিন্তু কখনোই মনের গহীনে আশার কুঁড়েঘরে জ্বলেনি আলো। কিন্তু দিন বদলেছে। বদলে গেছে বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটও।
সব দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের পেস ইউনিটকে বলা যেতে পারে ‘কম্প্যাক্ট’। গতির ঝড় তোলার জন্যে রয়েছেন নাহিদ রানা। সিম মুভমেন্টে কাবু করতে পটু তাসকিন আহমেদ। কাটার, স্লোয়ারের মিশ্রণে প্রতিপক্ষকে ভরকে দিতে প্রস্তুত মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া আগ্রাসনের সাথে দারুণ স্পট বোলিংয়ের ম্যাজিক নিয়ে আছেন তানজিম হাসান সাকিব।
কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ বিবেচনায় অনায়াসে তিনজনের একটা মিশ্রণ করা যাবে একাদশে। বাংলাদেশের এই পেস বোলিং ইউনিটটা, গেল বছর ওয়ানডেতে ৩২টি উইকেট নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তাসকিন। সাত ম্যাচে তার ঝুলিতে গিয়েছে ১৪ খানা উইকেট। চার ম্যাচে দশ উইকেটের মালিক মুস্তাফিজ।
নাহিদ রানা খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি ওয়ানডেতে। ২০২৪ সালে অভিষেক হওয়ার পর তিনটি ম্যাচ খেলেছেন এই এক্সপ্রেস পেসার। চারটি উইকেট নিজের করে নিতে পেরেছেন। তবে তার সেলিং পয়েন্ট একটু ভিন্ন, তিনি বাইশ গজে প্রতিপক্ষের বুকে আতঙ্কের সৃষ্টি করতে জানেন।
সেই আতঙ্কের পরিবেশ সতীর্থদের উইকেট বাগিয়ে নেওয়ার রাস্তা খুলে দেয়। যদিও নাহিদের অভিজ্ঞতা নেই আইসিসি টুর্নামেন্টের। সেদিক থেকে তানজিম সাকিব অবশ্য এগিয়ে রয়েছেন। যুব বিশ্বকাপ জয় করেছেন তিনি। এছাড়াও মূল দলের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ও একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন সাকিব।
তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেল হয়েছে জম্পেশ। তাছাড়া প্রায় প্রতিটা বোলারই রয়েছেন আপন ছন্দে। তাসকিন আহমেদ সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে হয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ১৬ খানা উইকেট রয়েছে সাকিবের ঝুলিতেও। মুস্তাফিজও পেয়েছেন উইকেটের দেখা। কিন্তু মুস্তাফিজের অভিজ্ঞতা যেকোন মুহূর্তে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিতে সক্ষম।
নাহিদ রানা বিপিএল শুরু করেছিলেন নব উদ্যম্যে, কিন্তু রংপুর রাইডার্সের মতই তিনিও খেই হারিয়েছেন শেষবেলায়। পাকিস্তানের ব্যাটিং উইকেটে, তার গতিশীল বাউন্সারগুলো সৃষ্টি করবে ত্রাসের রাজত্ব। আবার আরব আমিরাতের উইকেটে মুস্তাফিজ দেখাতে পারেন কব্জির ভেলকি। এই দুইয়ের মাঝে সেতুবন্ধন হবেন তাসকিন ও সাকিব।
এমন ব্যালেন্সড একটা পেস বোলিং ইউনিট অধিকাংশ দলেই অনুপস্থিত। প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রকে একটা বৃত্তের মধ্যে নিয়ে আসার মত যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে তাসকিন-মুস্তাফিজদের। শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের দক্ষতার বাস্তবায়ন করতে হবে নির্দিষ্ট দিনে। তেমনটি করতে পারলেই বাংলাদেশের পক্ষে ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।