রাজাদেরও রাজা বিরাট কোহলি রেকর্ডেরও রাজা বটে। সম্প্রতিই ওয়ানডে ফরম্যাটে ছাড়িয়ে গেছেন সেঞ্চুরিরও অর্ধশতকের কোটাও। অনুমেয় ভাবেই ওয়ানডতে, ৫১ সেঞ্চুরির মালিক কোহলি সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করেছেন নিজ দেশ ভারতেই। তবে এরপরেই যেন তার জন্য পয়া মাটিটাই বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছয়টি সেঞ্চুরি তিনি করেছেন বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে ওয়ানডতে ১৮ ইনিংসে ৭৩ এর উপরে গড়ে রান করেছেন ১০৯৭। স্ট্রাইকরেটটা ১০০ ছাড়িয়ে। ছয় সেঞ্চুরির সাথে আছে তিন অর্ধশতকও। অর্থাৎ গড়ে প্রতি তিন ম্যাচে একটা করে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি বাংলার মাটিতে। এরমধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষেই করেছেন চারটি সেঞ্চুরি। বাকি দুইটি যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। ছয় সেঞ্চুরির সবকটিতেই বেশ স্বাচ্ছন্দেই জিতেছে ভারত।
বাংলাদেশের মাটিতে বিরাট সর্বপ্রথম সেঞ্চুরি করেন ২০১০ সালে। সেই ম্যাচে ২৪৮ রানের টার্গেট চেজ করতে নেমে ৯৫ বলে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। পরের সেঞ্চুরিটাও বাংলাদেশের বিপক্ষেই। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৮৩ বলের ১০০ রানের ইনিংসটা ভারতকে এনে দিয়েছিল ৩৭০ রানের বিশাল পুঁজি।
পরের দুইটা সেঞ্চুরি আবার এশিয়া কাপের মত বড় মঞ্চে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৮ রানের সেই ইনিংসের সুবাদেই ভারত জয় পায় ৫০ রানের বড় ব্যবধানে। তবে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসটা তিনি খেলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই একই ২০১২ এশিয়া কাপে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই লিখেছিলেন ১৮৩ রানের অমর এক ইনিংস। ৩৩০ রান তাড়া করতে নেমে উমর গুল, সাইদ আজমল, শাহিদ আফ্রিদি, ওয়াহাব রিয়াজদের তুলোধনা করে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছিলেন ওভার দুয়েক আগেই।
১৪৮ বলে ২২ চার আর এক ছক্কায় গড়া ১৮৩ রানের ইনিংসটা যেন জানান দিয়েছিল, কিং কোহলি আসছেন ক্রিকেট বিশ্বকে শাসন করতে। মিরপুরের স্লো উইকেটের অনেক বদনাম আছে বটে। তবে সেখানেই নিজের চারটা স্মরণীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। তার বাকি দুইটি সেঞ্চুরি ফতুল্লা আর চট্টগ্রামে। ২০১৪ এশিয়া কাপে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় খেলেছিলেন ১২২ বলে ১৩৬ রানের ইনিংস। সেই ম্যাচেও ২৮০ রানের টার্গেটটা বেশ হেসেখেলেই পার করেছিল ভারত।
বাংলাদেশের মাটিতে খেলা সবশেষ ওয়ানডে ইনিংসেও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ২০২২ সালে চট্টগ্রামে খেলেছিলেন ৯১ বলে ১১৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। স্কোরবোর্ডে ৪০০ এর উপরে রান যোগ করেছিল তার দল। সেই ম্যাচটিও ভারত জিতেছিল ২২৭ রানে। বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপটা যদিও ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। তবুও সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমানরা পাত্তাই পাননি তার কাছে।
১৮ ইনিংসের নয়টিতেই পঞ্চাশ উর্ধ্বো ইনিংস। অর্থাৎ গড়ে দুই ইনিংসে একটি করে ফিফটি প্লাস রান তিনি করেছেন বাংলাদেশে। কোহলি, সেঞ্চুরি, বাংলাদেশকে তাই এক সূত্রে গাঁথাই যায়!