বিপর্যয়ের পরও রাজত্ব বাংলাদেশেরই

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সকালের প্রথমটা ঘণ্টা বাংলাদেশের জন্য ছিল যাচ্ছেতাই। স্টেডিয়ামের বাইরের এক গার্মেন্টসের আগুনের রেশ যেন উইকেটেও পড়েছিল। কিন্তু, সেই আগুন নিভেছে, উইকেট যাওয়া আসার মিছিলও থেমেছে।

শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে চট্রগ্রাম টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। মেইডেন সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন লিটন, সেঞ্চুরির অপেক্ষায় আছেন মুশফিকও। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৩ রান।

টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। বাংলাদেশের হয়ে প্রায় দুই বছর দলের সাথে থাকার পর অভিষিক্ত হন ইয়াসির আলি রাব্বি। অপরদিকে পাকিস্তানের হয়ে অভিষিক্ত হন আব্দুল্লাহ শফিক। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ওপেনিং জুটিতে ১৯ রানের পথে ব্যক্তিগত ১৪ রানে শাহীন শাহ আফ্রিদির শিকার হয়ে ফিরেন সাইফ হাসান। টি-টোয়েন্টির পর টেস্টেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ এই ওপেনার।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিটাও যায়নি বেশিদূর। দু’বার জীবন পেলেও তৃতীয়বার ভাগ্য সহায় হয়নি সাদমানের। হাসান আলীর বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনিও। অল্প কিছুদূর যেতেই পর পর দুই ওভারে ফাহিম আশরাফ ও সাজিদ আলির বলে আউট মুমিনুল ও নাজমুল শান্ত!

টপ অর্ডারের তিনজনই ফিরেন ব্যক্তিগত ১৪ রানে! মুমিনুল করেন ৬ রান। টপ চার ব্যাটারই ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। টি-টোয়েন্টির ব্যর্থতা যেনো ফুটে উঠছিলো টেস্টেও। ঘরের মাটিতে পাকিস্তানি বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের টপ অর্ডার।

মাত্র ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দলের দায়িত্ব কাঁধে নেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাশ। খাদের কিনারে থেকে দলকে টেনে তুলেন দু’জনে মিলে। লাঞ্চ বিরতির পর থেকে বাকিটা সময় পাকিস্তানি বোলারদের আর পাত্তাই দেননি এই দু’জন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দু’জনেই তুলে নেন ফিফটি। সেই সাথে দু’জনের জুটিও পৌঁছে যায় সেঞ্চুরিতে।

দুই প্রান্তে দুই ব্যাটার বেশ দায়িত্ব নিয়েই ব্যাট করছিলেন। টি-টোয়েন্টির ব্যর্থতা কাটিয়ে দিনের শেষভাগে লিটন দাশ তুলে নেন মেইডেন টেস্ট সেঞ্চুরি! মুশফিকের ১৯০ ও লিটনের হার না মানা ১১৩ রানে প্রথম দিনশেষে ৪ উইকেটে ২৫৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

সব সমালোচনা পাশ কাটিয়ে সাদা পোশাকে আবারো নিজেদের সেরাটা দিলেন লিটন-মুশফিক। আলোক স্বল্পতার কারণে ৫ ওভার বাকি থাকতেই দিনের খেলা শেষ হয়। পাকিস্তানের পক্ষে শাহীন, হাসান, ফাহিম ও সাজিদ প্রত্যেকেই শিকার করেন একটি করে উইকেট।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

টস: বাংলাদেশ

বাংলাদেশ – ২৫৩/৪ (৮৫ ওভার); মুশফিক ৮২* (১৯০), লিটন ১১৩* (২২৫) ; শাহীন ১৭-৪-৪৫-১, ফাহিম ১০-২-৩৮-১, সাজিদ ২২-২-৬৮-১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link