লজ্জায় অবসান এশিয়া কাপ স্বপ্নের?

প্রায় দেড় মাসের অপেক্ষা শেষে বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নেমেছিল তখন যতখানি প্রত্যাশা ছিল তার সিকিভাগও পূরণ করতে পারেনি সাকিব, মুশফিকরা। ইনজুরি জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছিল ভক্ত-সমর্থকেরা, অথচ সেই শ্রীলঙ্কাই হারিয়েছে বাংলাদেশকে। শুধু পরাজয়ই নয়, এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে রীতিমতো আত্মসমর্পণ করেছে টিম টাইগার্স।

ওয়ানডে ফরম্যাটে অন্তত শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে রাখা হতো বাংলাদেশকে। শুধু লাল-সবুজের ক্রিকেটপ্রেমীরাই নয়, ভিনদেশী ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও ফেভারিট ভেবেছিলেন সাকিবদের। কিন্তু মাঠের খেলায় সেসবের কিছুই পাওয়া যায়নি, পাঁচ উইকেটের বড় ব্যবধানে সফরকারীদের উড়িয়ে দিয়েছে দাসুন শানাকারা।

টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে সেই সিদ্ধান্ত শুরুতেই ভুল প্রমাণ করে শ্রীলঙ্কান বোলাররা৷ নিজের প্রথম ওভারে অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট তুলে নেন মাহিশ থিকসানা। নাইম শেখের সঙ্গে নাজমুল শান্ত এরপর ইনিংস এগিয়ে নিতে চাইলেও ১৪ রানের মাথায় কাটা পড়েন নাইম।

সাকিব আল হাসানও এদিন পারেননি আস্থা হতে, পাথিরানার বাউন্সে কিপারের গ্লাভসবন্দী হয়ে বিদায় নেন তিনি। ৩৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে টাইগাররা তখন দিশেহারা, বিপর্যয় সামলানোর চেষ্টা শুরু করেন দুই তরুণ শান্ত আর হৃদয়। ৫৯ রানের ধৈর্যশীল জুটিতে দলকে নিরাপদ অবস্থায় এনে দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। হৃদয়ের পর মুশফিক, মেহেদি কারো কাছেই জবাব ছিল না স্বাগতিক বোলিংয়ের বিরুদ্ধে।

নাজমুল শান্ত একাই লড়াই করেছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। তবে সঙ্গীর অভাবে তিনিও দলকে ভদ্রস্থ স্কোর এনে দিতে পারেননি। শেষমেশ এই ব্যাটারের ৮৯ রানে ভর করে ১৬৪ রান করে টিম টাইগার্স।

মামুলি টার্গেট হলেও বাংলাদেশ ম্যাচে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। পর পর দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে আর পাথুম নিশাঙ্কাকে আউট করেছিল তাসকিন, শরিফুলরা। পাওয়ার প্লের মাঝে কুশল মেন্ডিসের উইকেট তুলে খেলা জমিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। এরপর অবশ্য উদযাপনের উপলক্ষ পায়নি বাংলাদেশ; সামরাবিক্রমা এবং আসালঙ্কার ৭৮ রানের জুটিতে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা।

এরপর বাংলাদেশের স্পিনাররা টানা দুই উইকেট তুলেছে ঠিকই, তবে সেটা কেবলই ম্যাচের সময় বাড়িয়েছে। আসালঙ্কার অপরাজিত হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে এগারো ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। বল হাতে বাংলাদেশ লড়াই করার চেষ্টা করেছে ঠিকই, তবে স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।

এমন পরাজয়ে এশিয়া কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথ কঠিন হয়ে গেলো বাংলাদেশের। পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ এখন ডু অর ডাই-এ পরিণত হয়েছে; রশিদ মুজিবদের বলে বাংলাদেশের ব্যাটাররা কতটা সংগ্রাম করেন সেটা ভেবে অবশ্য এখনি টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার মানসিক প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link