শুরুতে মুজিবুর রহমানের মিস্ট্রি স্পিন, সাথে ফজল হক ফারুকীর ইনসুইং, আউট সুইং। এরপর রশিদ খানের গুগলি আর মোহাম্মদ নবীর অফ স্পিন – আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ বরাবরই সমীহ করার মত।
তবে, বাংলাদেশের বিপক্ষে সেটি একটু বেশিই দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে; তাই তো বড় মঞ্চে আফগানদের বোকা বানানোর জন্য ব্যাটিং অর্ডারে চমক রেখেছিল টিম টাইগার্স।
গত পাঁচ বছর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এর ইভেন্টে টাইগার ম্যানেজম্যান্ট আশ্রয় নিয়েছিল ভিন্ন ট্যাকটিক্সের। সেজন্যই আফগানিস্তান শুরুতেই তাঁদের পরিকল্পনাকে পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিল।
শেষমেশ আউট অব দ্য বক্স সিদ্ধান্ত নেয়ায় সফলতাও মিলেছিল সাকিব, মুশফিকদের। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপ দিয়ে শুরু। টুর্নামেন্টের মাঝ পথেই দেশ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল ওপেনার ইমরুল কায়েসকে, আফগানিস্তান ধরেই নিয়েছিল ওপেন করতে নামবেন এই অভিজ্ঞ তারকা।
কিন্তু, সবাইকে অবাক করে দিয়ে মিডল অর্ডার ব্যাটার বনে যান ইমরুল। ছয় নম্বরে খেলতে নেমে সেদিন অপরাজিত ৭২ রান করেছিলেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৭৪ এর পাশাপাশি তাঁর সেই ইনিংসে ভর করেই ২৪৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশ; পরবর্তীতে মাত্র তিন রানের ব্যবধানে জয় লাভ করেছিল।
এরপরের গল্পটা ২০১৯ বিশ্বকাপের। বাঁ-হাতি ব্যাটারের বিপক্ষে মুজিবুর রহমানের অভাবনীয় সাফল্যের কথা ভেবেই সৌম্য সরকারক সেই ম্যাচে পাঁচ নম্বরে খেলিয়েছিল ম্যানেজম্যান্ট। অবশ্য সৌম্য নিজে সেদিন সফল হতে পারেননি, সেই মুজিবের বলেই আউট হয়েছিলেন তিনি।
তবে সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স আর মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত এক ইনিংসের কল্যাণে রশিদ খানদের বড় ব্যবধানে পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছিল টাইগাররা।
সর্বশেষ এশিয়া কাপেও ঘটেছে একই ঘটনা, সাত নম্বর থেকে মেহেদী হাসান মিরাজকে ওপেনিংয়ে নিয়ে আসা হয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে। স্পিনের বিরুদ্ধে সাবলীল মিরাজ সেই সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে কোন ছাড় দেননি। তিন নম্বরে নামা নাজমুল শান্তের সঙ্গে গড়েছিলেন রেকর্ড গড়া জুটি।
দুজনে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। আর তাতেই ৩৩৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই পাহাড় আর ডিঙাতে পারেনি আফগানিস্তান, হেরেছে ৮৯ রানের বড় ব্যবধানে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে; সেদিনও হয়তো এমন কোন চমক আনবে টিম ম্যানেজম্যান্ট। আপাতত সেই চমক জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে পুরো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের।