এক জেমিমাহ রড্রিগেজের কাছেই পরাজয় বাংলাদেশের। ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করা জেমিমাহ বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্নকে মলিন করে দিয়েছে। মাত্র ১২০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ হারে ১০৮ রানের বড় ব্যবধানে। সিরিজে তাই এখন ১-১ সমতা।
ভারতের মত শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দুই ভিন্ন ফরম্যাটে টানা দুই জয়। খানিকটা আত্মবিশ্বাস জড়ো করতে পেরেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। অল্পতেই আটকে ফেলা সম্ভব ভারত নারী ক্রিকেট দলকে। এমন এক চিন্তাধারা থেকেই টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিগার সুলতানা জ্যোতির।
শুরুটা হয়েছেও দারুণ। ভারতকে বেশ চাপে রাখতে পেরেছিলেন মারুফা আক্তার, সুলতানা খাতুনরা। যার ফলস্বরুপ ১৭ রানের মাথায় নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় স্মৃতি মান্দানার দল। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে প্রিয়া পুনিয়ার উইকেট উপড়ে ফেলেন মারুফা আক্তার। তখনই স্বল্প রানে বেঁধে ফেলার পরিকল্পনাটা আরও উজ্জ্বল হতে থাকে।
সেটা আরও খানিকটা উজ্জ্বলতা পায় ইয়াস্তিকা ভাটিয়া রান আউট হয়ে ফিরে গেলে। ৪০ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় ভারতের মেয়েরা। বাংলাদেশ তখন আরও খানিকটা প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনার ছক কষতে শুরু করে।
৬৮ রানের মাথায় রাবেয়া খান বোল্ড আউট করেন ভারতীয় অধিনায়ককে। চাপটা তখন অনুভূত হতে থাকে ভারতের। কিন্তু সেখান থেকেই পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। দারুণ সব জুটি গড়ে নিজেদের প্রাথমিক চাপ সামলে নিতে শুরু করে ভারতের ব্যাটাররা। মূল দূর্গটা গড়েন মূলত হারমিতপ্রিত কর ও জেমিমাহ রদ্রিগেজ। দু’জনের ফিফটিতে ভারতের সংগ্রহ চলে যায় বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
৮৬ রান করা জেমিমাহই মূলত বাংলাদেশের সকল পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয়। ২২৯ রানের টার্গেট পায় জ্যোতির দল। বিশাল এই টার্গেটটা বাংলাদেশকে মানসিক চাপের মধ্যে রাখে। সেই চাপ থেকে পরিত্রাণ আর পাওয়া হয়নি শারমিন খাতুনদের।
৩৮ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে জয় পাওয়াটা ভীষণ দূরের এক লক্ষ্যই মনে হতে থাকে। তবে জয়ের আশা তখন দেখাতে শুরু করে ফারজানা হক ও ঋতু মনির ব্যাট। এই দুইজন জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পরিশ্রান্ত ফারজানা অহেতুক এক শট খেলে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন।
স্ট্যাম্পিংয়ে ফারজানার ফিরে যাওয়ার পরই বাংলাদেশের পরাজয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। তাসের ঘরের মত করে মুহূর্তেই মাটিতে মিলিয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ।
১০৬ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, পরবর্তী ১৪ রান তুলতেই খুইয়েছে ৬টি উইকেট। তাতে লজ্জার এক পরাজয়ই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। এই ধসের পেছনেও ছিলেন সেই জেমিমাহ।
বাংলাদেশের অধিনায়কের উইকেট সহ আরও ৩টি উইকেট নিজের করে নেন জেমিমাহ। একা হাতেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ধুলিসাৎ করে দেন ভারতের এই অলরাউন্ডার।