চিটাগং কিংসের কাছে ৪৬ কোটি টাকা দাবি বিসিবির!

এই অর্থ ফেরত পেলে তা খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিলে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। এখান থেকে সাবেক ও আহত ক্রিকেটারদের সহায়তা দেওয়া হয়। প্রয়োজনে বিসিবি আন্তর্জাতিক আদালতেও যেতে প্রস্তুত।

বিপিএলের পুরনো কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায়ে আইনি পথে হাঁটবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স, বরিশাল বুলস, খুলনা টাইগার্স, চিটাগং কিংসসহ কয়েকটি সাবেক দলের বিরুদ্ধে কোর্ট রেকর্ড তৈরি করেছে সংস্থাটি। একের পর এক আইনি নোটিশ পাঠানো হলেও অনেকেই এর কোনো জবাব দেয়নি।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সাবেক চিটাগং কিংসের মালিকানা থাকা প্রতিষ্ঠান এস কিউ স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনসংক্রান্ত কোর্ট রেকর্ড তৈরি করেছে বিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সামির কাদের চৌধুরীর কাছে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ৫৬ ডলার—যা বাংলাদেশি মূল্যমানে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা—দাবি করে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

২০১২ ও ২০১৩ সালে সামির কাদের ছিলেন চিটাগং কিংসের মালিক। সে সময় স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুক্তি এবং অন্যান্য খরচের ক্ষেত্রে বিসিবির সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তিনি। বিসিবির হিসাব অনুযায়ী, তার কাছে এখনো প্রায় ৪৬ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

তবে সামির কাদের এই দাবিকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন। তার ভাষায়, ২০১৫ সালের পর বিসিবির কেউ তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। অন্যদিকে বিসিবি বলছে, ২০১৫ সাল থেকেই কোর্ট রেকর্ড তৈরি ও আইনি প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছিল। এখন তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) যাওয়ার পরিকল্পনায় আছে।

সামির কাদের অভিযোগ করেন, ২০১২ সালে ৬ কোটি টাকা খরচ করে তিনি চিটাগং কিংস কিনেছিলেন। বিসিবি জানিয়েছিল এই টাকা ফেরত দেবে, কিন্তু সময়মতো দেয়নি। সেই সময় কোনো স্পনসরও ছিল না। সবমিলিয়ে তিনি প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ করেন, কিন্তু কিছুই ফেরত পাননি বলে দাবি তার।

বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চিটাগং কিংস নাম ব্যবহার করে খেলোয়াড় ও কোচদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। কিংস দল বিদেশি ক্রিকেটার এনেছে এবং বিসিবি থেকে নানা সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছে। তবে এরপর তারা বিসিবিকে টাকা ফেরত দেয়নি। বিসিবি এখন তাই বাধ্য হয়েই আইনী পন্থায় হাঁটছে।

চুক্তি অনুযায়ী, খেলোয়াড়, কোচ ও স্টাফদের বেতন মূলত বিসিবি দিত। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সেই অর্থ পরিশোধ করতে হতো। বিসিবির দাবি, তারা চিটাগং কিংসের হয়ে ২৮ জন খেলোয়াড়, কোচ ও স্টাফের চুক্তির টাকা পরিশোধ করেছে, এখন সেই অর্থ ফেরত চায়।

এই অর্থ ফেরত পেলে তা খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিলে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। এখান থেকে সাবেক ও আহত ক্রিকেটারদের সহায়তা দেওয়া হয়। প্রয়োজনে বিসিবি আন্তর্জাতিক আদালতেও যেতে প্রস্তুত।

Share via
Copy link