সকাল থেকেই মিরপুরের সেন্ট্রাল উইকেটে চলছিল মুশফিকুর রহিমের অনুশীলন। মধ্য মাঠে এমন অসহনীয় তাপমাত্রা কিংবা নিন্দুকের নানা সমালোচনা কিছুই যেন তিনি গায়ে মাখছেন না। বাইরের কোনকিছুই মনোযোগী ছাত্র মুশফিকের অনুশীলন থামাতে পারেনা। তবে সেই মুশফিকও হঠাত থমকে গেলেন। ব্যাট বলের অনুশীলন থামিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মাঠের একটা পাশে।
কেননা এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দেখতে মাঠে নেমে এসেছেন খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ঘড়ির কাটায় সময় তখন দুপুর বারোটার আশেপাশে। মাথার উপর সূর্য নিয়েই হোম অব ক্রিকেটের সেন্ট্রাল উইকেটে ব্যাটিং করছেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। সাকিব দুই ওভার ব্যাট করছেন আর সেটা ছাতার নিচে বসে মনোযোগ দিয়ে দেখছেন মুশফিকুর রহিম।
মাঠের চারপাশে সাকিবের বড় বড় শট গ্রাউন্ডসম্যানদের ছুটোছুটি বাড়িয়েছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নয়া অধিনায়ক যেন দেখিয়ে দিচ্ছিলেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটটা এভাবেই খেলতে হয়। অধিনায়ক ও বন্ধু সাকিবের এই থিওরি বোধহয় মনে ধরলো সকাল থেকেই ব্যাট চালানো মুশফিকুর রহিমের। এবার সাকিব ছাতার নিচে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। আর মুশফিকুর রহিম মনোযোগ দিলেন পাওয়ার হিটিংয়ে। সেন্ট্রাল উইকেট থেকে মুশফিকের পাঠানো বলগুলো পড়ছিল সীমানার কাছাকাছি গিয়ে। ছাতার নিচে গিয়ে রোদ কিংবা ক্যামেরা লেন্স থেকে লুকিয়ে সাকিব বোধহয় তখন খুশিই হচ্ছিলেন।
কেননা সাকিব জানেন মুশফিকুর রহিমের টি-টোয়েন্টি ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এশিয়া কাপে অন্তত তার হাতে ভালো কোন অপশন নেই। এমনকি ওপেনিং পজিশনেও চিন্তা করা হতে পারে মুশফিকুর রহিমকে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মুশফিকের ওপেন করার সম্ভাবনাই বেশি বলে শোনা যাচ্ছে। ফলে মুশফিক ব্যাট চালানোর অভ্যাস করলে তো দলেরই লাভ।
এমন সময়েই মাঠে প্রবেশ করতে দেখা যায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে। তার সাথে ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও ছিলেন। এছাড়া টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনকেও দেখা যায় এসময়। বিসিবি বস নাজমুল হাসান পাপন মাঠে এসেই প্রথমে কথা বলেন মুশফিকুর রহিমের সাথে। এরপর কাছে টেনে নেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকেও।
এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ দল কেমন প্রস্তুত হচ্ছে সেটা দেখতেই মাঠে এসেছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। পরে সাংবাদিকদের জানান পাওয়ার হিটিং এর ব্যাপারটা নিয়েও নাকি বাংলাদেশ দল বেশি চিন্তিত। এই ব্যাপারে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের সাথে আলোচনা হয়েছে বোর্ড সভাপতির। সেজন্যই দুদিন আগে নিজ বাসায় সিডন্সের সাথে বৈঠকেও বসেছিলেন তিনি।
ওদিকে জেমি সিডন্সও পাওয়ার হিটিং সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। মিরাজ, বিজয়, মুশফিকদের নিয়ে গত দুদিন ধরে এই ব্যাপারেই কাজ করছেন সিডন্স। যদিও বিসিবি চেয়েছিল দ্রুতই একজন পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগ দিতে। তবে জেমি সিডন্সের বেশ আগ্রহ থাকায় আপাতত তার উপরেই ভরসা রাখছে বাংলাদেশ দল।
সবমিলিয়ে এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে এখন সবচেয়ে বড় ইস্যু যেন পাওয়ার হিটিংই। মোটামুটি সব ব্যাটসম্যানই মাঠে বড় বড় শট খেলার অনুশীলন করছেন। ওদিকে সাকিব-মুশফিক বাদেও আজ অনুশীলন করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও এনামুল হক বিজয়। অনুশীলন না করলেও দুপুরে বিসিবি অফিসে এসেছিলেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।