সেরা অধিনায়কদের সেরা একাদশ

ক্রিকেটের শুদ্ধতম সংস্করণে মানে টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করা এক বিশাল কাজ, বড় দায়িত্ব। এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্রিকেট মস্তিস্ক কতটুকু কার্যকর সেটার বিষয়ে বোঝা যায়। কারণ, ক্রিকেটের অন্য যেকোনো ফরম্যাটের চেয়ে টেস্টে একজন অধিনায়কের মানসিকতা আরো ভাল ভাবে বোঝা যায়।। এদের মধ্যে যারা উন্নত ক্রিকেট মানসিকতার অধিকারী ছিলেন তাঁরাই অধিনায়ক হিসেবে সফল হয়েছেন।

ক্রিকেটের শুদ্ধতম সংস্করণে মানে টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করা এক বিশাল কাজ, বড় দায়িত্ব। এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্রিকেট মস্তিষ্ক কতটুকু কার্যকর সেটার বিষয়ে বোঝা যায়। কারণ, ক্রিকেটের অন্য যেকোনো ফরম্যাটের চেয়ে টেস্টে একজন অধিনায়কের মানসিকতা আরো ভাল ভাবে বোঝা যায়।। এদের মধ্যে যারা বেশ ভালো ক্রিকেট মস্তিষ্কের অধিকারী ছিলেন তাঁরাই অধিনায়ক হিসেবে সফল হয়েছেন।

টেস্ট ক্রিকেটে সব পজিশনের ক্রিকেটারাই অধিনায়কত্ব করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে সফল হয়েছেন। এসব সফল টেস্ট অধিনায়কদের নিয়ে যদি একটা একাদশ বানানো যায় – তাহলে কেমন হয়? – চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

  • গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)

টেস্টে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা ক্রিকেটার হলেন গ্রায়েম স্মিথ। ১০০ এর বেশি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর সময়ে ঘরের মাটিতে অপ্রতিরোধ্য ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়াও দেশের বাইরেও নিয়মিতই জিততে শিখেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা।

  • মাইকেল ভন (ইংল্যান্ড)

মাইকেল ভনের অধিনায়কত্বেই অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্য ভাঙে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হিসেবে অ্যাশেজ জিতেছেন তিনি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিলো মাইকেল ভন। ৫০ টি ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ২৬ টিতে জেতান ইংল্যান্ডকে।

ওপেনার হিসেবে একাদশে ঠাঁই হতে পারতো ইংল্যান্ডের অ্যালিস্টেয়ার কুক কিংবা নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। তবে, দু’জনই ব্যাটসম্যানশিপে ভনের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। তবে, ভনকে এখানে এগিয়ে দিয়েছে তাঁর অধিনায়কত্ব।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ারকে ৭৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রিকি পন্টিং। এর মধ্যে মাত্র ১৬ টেস্টে হেরেছিলো অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন তিনি।

পন্টিং শুধু অধিনায়ক নন, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেও ছিলেন দূর্দান্ত। অনেকবারই দলকে জয় এনে দেওয়া ব্যাটিং করেছিলেন তিনি।

  • জাভেদ মিয়াঁদাদ (পাকিস্তান)

বড়ে মিয়া খ্যাত জাভেদ মিয়াঁদাদ ছিলেন নিজের সময়ের অন্যতম সেরা লড়াকু ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক হিসেবেও তিনি বেশ প্রসিদ্ধ। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা টেস্ট অধিনায়কদের নাম নিলে তিনি থাকবেনই। ৩৪ টি ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দলকে জিতিয়েছেন ১৪ টি ম্যাচে, ড্র হয়েছে ১৪ টি। হেরেছেন মাত্র ছয়টিতে।

চাইলে এখানে রাখা যেত সৌরভ গাঙ্গুলিকেও। তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ৪৯ টি ম্যাচ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে তিনি ২১ টি ম্যাচে জিতিয়েছেন।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

টেস্টে কিংবা যেকোনো ফরম্যাটে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের অন্যতম ভরসার নাম ছিলেন বিরাট কোহলি। ক্যারিয়ার এখনো শেষ হয়নি, অথচ, আজো দিব্যি কোনো সর্বকালের সেরা একাদশে ঠাঁই করে নেন কিং কোহলি। সময়ের সেরা তো বটেই, সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদেরও একজন তিনি। শুধু তাই নয়, পরিসংখ্যান বলছে টেস্টে তিনি ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল নেতা। ৬০ ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়েছেন, জয় পেয়েছেন ৩৬ টি!

  • স্টিভ ওয়াহ (অস্ট্রেলিয়া): অধিনায়ক

স্টিভ ওয়াহ নিসন্দেহে সেরা টেস্ট অধিনায়ক। তাঁর অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া খেলেছিলো ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত। এই সময়ে তাঁর অধিনায়কত্বে ৭০ শতাংশ ম্যাচ জিতেছিলো অস্ট্রেলিয়া।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত): উইকেটরক্ষক

অধিনায়ক হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনি কতটা নিখুঁত ছিলেন – তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। টেস্টে তিনি সর্বকালের সেরা অধিনায়কদের একজন। ৬০ টি টেস্ট তিনি ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন ২৭ টিতে। আর উইকেটের পেছনে ভূমিকা তো আছেই। তাঁকে ছাড়া এমন যেকোনো একাদশই অসম্পূর্ণ।

  • সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা বাঁ-হাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার তিনি। পরিসংখ্যান বলে, যেকোনো বিবেচনাতেই টেস্টের সেরা অলরাউন্ডারদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকবে তাঁর নাম। টেস্টে তিনি ১৪ টি ম্যাচ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, এর মধ্যে তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ দল।

  • ইমরান খান (পাকিস্তান): সহ-অধিনায়ক

ইমরান খান পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। অন্য সব অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে এতটা সফল ছিলেন না ইমরান খান। তবে দলের প্রতি তাঁর অবদান এবং ক্রিকেটের প্রতি তাঁর চেষ্টা তাকে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা অধিনায়কে পরিণত করেছে। চাইলে এখানে ভারতের কপিল দেবকেও রাখা যেত। কিন্তু, টেস্ট অধিনায়কত্বের মাপকাঠিতে কপিলের চেয়ে ইমরান একটু এগিয়েই থাকবেন।

  • শন পোলক (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ক্যারিয়ার জুড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা ছিলেন শন পোলক। এছাড়াও নিচের দিকে বেশ ভালোই বোলিং করতে পারতেন তিনি। এই দুই দায়িত্বের পর আবার তাকে অধিনায়ক করা হয়েছিলো। অধিনায়ক হিসেবে বেশ সফল ছিলেন পোলক। ২৬ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন ১৪ টেস্ট।

  • ওয়াসিম আকরাম (পাকিস্তান)

পাকিস্তানের ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার ছিলেন ওয়াসিম আকরাম। এমনিতেই পাকিস্তান ক্রিকেটে যোগ্য পেসারের সংখ্যা বেশ ভালো। সেখানে নিজেকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

পাকিস্তান দলকে ২৫ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ ম্যাচ জিতে নেয় ওয়াসিম আকরাম। ওয়াসিম আকরামের সময় পাকিস্তান দল বেশ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতো। এই কারণেই তাঁর সময়ে পাকিস্তানের বেশির ভাগের ম্যাচের ফলাফল হত। ড্র করার সংখ্যা ছিলো খুবই কম।

  • দ্বাদশ ব্যক্তি: অনিল কুম্বলে (ভারত)

অনিল কুম্বলে ভারতের সেরা লেগ স্পিনার। খুব অল্প সময়ের জন্য ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অধিনায়ক বেশ কার্যকর ছিলেন তিনি। ২০০৭-০৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। এখানে তাঁর সময়ে দল বেশ ভালো পারফর্মেন্স করেছে।

কুম্বলের অধিনায়কত্বে সবাই মুগ্ধ হয়েছিলো। কিন্তু তিনি পরে আর অধিনায়কত্ব করেননি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...