বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ফিনিশার কে এমন প্রশ্ন করা হলে নি:সন্দেহে সবচেয়ে বেশিবার শোনা যাবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম। কেবল সবচেয়ে বেশি শোনা যাবে তা নয়, সবাই-ই আসলে একবাক্যে তাঁকে সেরা মেনে নিবেন। অন্তত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোমাঞ্চকর একটা জয় এনে দেয়ার পর এই ব্যাপারে কারও মাঝে বিন্দুমাত্র সংশয় থাকার কথা না।
কেন রিয়াদ দেশসেরা সেটার প্রমাণ আছে পরিসংখ্যানে। চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলো যদি অনুসরণ করা হয় দেখা যাবে আট থেকে বিশ ওভার পর্যন্ত সময়ে ১০৫ বল খেলেছেন তিনি; বিপরীতে করেছেন ১৪২ রান। এসময় তাঁর ব্যাটিং গড় প্রায় ৩৬ আর স্ট্রাইক রেট ১৩৫.২!
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন স্ট্রাইক রেট এবং ব্যাটিং গড় নিঃসন্দেহে অভাবনীয়। এই ডান-হাতি যে এখন দুর্দান্ত ফর্মে আছেন সেটা যেমন স্পষ্ট হয়েছে তেমনি স্পষ্ট হয়েছে তাঁর ইন্টেন্ট, অ্যাপ্রোচও। কেবল রান করা নয়, তিনি এখন মনোযোগী ইম্প্যাক্টফুল পারফরম্যান্সের দিকে।
অথচ বছর দুয়েক আগেও তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন সাইলেন্ট কিলার। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক কেউ বাদ ছিলেন না তাঁর সমালোচনা করা থেকে, চায়ের টেবিল থেকে শুরু টক শো সর্বত্র তাঁকে বাদ দেয়ার দাবি তোলা হয়েছিল।
অবশ্য সে সব অযৌক্তিক নয় মোটেই; যেই পরিসংখ্যানে ২০২৪ সালে এই তারকাকে ইনফর্ম ভাবা হচ্ছে সেই একই পরিসংখ্যানে ২০২১ ও ২০২২ সালের দিকে লক্ষ্য করা যাক। ২০২১ সালে মোট ২৬ বার আট থেকে বিশতম ওভারে ব্যাট করেছেন তিনি; ২৩ গড়ে ৪৬১ রান করলেও স্ট্রাইক রেট ছিল মাত্র ১০৮! পরের বছর মাত্র ১১১ স্ট্রাইক রেটে রান করেছিলেন, সেই সাথে পূর্বের তুলনায় ব্যাটিং গড় হ্রাস পেয়েছিল কিছুটা।
সে সময় মাহমুদউল্লাহর খেলার ধরনেই ছিল সমস্যা; বাড়তি সতর্ক হতে গিয়ে অতিরিক্ত ডট বল খেলা, নেতিবাচক শরীরী ভাষা কিংবা বাজে ফিল্ডিং সবই দেখা গিয়েছিল তাঁর মাঝে। কিন্তু স্বস্তির বিষয় তিনি এসব সমালোচনা গ্রহণ করেছেন, নিজেকে নিয়ে কাজ করেছেন। সেটারই প্রতিফল হিসেবে টিম টাইগার্স পেয়েছে রিয়াদ ২.০।