আঁধার শেষে আলো আসে, আসেই!

অ্যালেক্স হেলস বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলতে গিয়ে পাকিস্তান সুপার লিগেও ছিলেন নিয়মিত। তাই পাকিস্তানের মাঠ তাঁর বেশ পরিচিত। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনটাও তিনি ভালো জানেন। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে ইংলিশরা হয়তো বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশা রাখছে। 

গলফ খেলতে গিয়ে বাঁ-পায়ের গোড়ালির ইনজুরিতে জনি বেয়ারস্টো। বাদ পড়েছেন আসন্ন পাকিস্তান সফর ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হতে। এতে কপাল খুলেছে আরেক ইংলিশ তারকা অ্যালেক্স হেলসের। প্রায় তিন বছর পর ইংল্যান্ড দলে সুযোগ জুটেছে তাঁর। সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন হেলস। জনি বেয়ারস্টোর অপ্রত্যাশিত গলফিং ইনজুরির কারণে নাটকীয়ভাবে ডাক পেয়ে দলে ফিরছেন তিনি। বেয়ারস্টোর পরিবর্তে আসন্ন পাকিস্তান সিরিজ ও টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে হেলস জায়গা পেয়েছেন।

২০১৯ বিশ্বকাপের অস্থায়ী স্কোয়াডের অংশ ছিলেন হেলস। কিন্তু পরে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পর বিশ্বকাপ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাঁকে। আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে থাকার সময়টায় বসে ছিলেন না হেলস। বিশ্বজুড়ে খেলে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগ। তিনি এরপর থেকে টিটোয়েন্টি সার্কিটে অবিশ্বাস্যভাবে ভালো করেছেন। বিভিন্ন লিগে বিস্ফোরক ব্যাটিং দিয়ে নিজেকে দক্ষতা শীর্ষে নিয়ে গিয়েছেন। আর প্রায় তিনবছর অপেক্ষার পর এবার ভালো ফর্মে থাকায় দেশের জার্সির কাছাকাছি চলে এসেছেন।

হেলস বারবার ‘শৃঙ্খলাজনিত’ সমস্যায় জড়িয়েছেন নিজেকে। ২০১৭ সালে ব্রিস্টলের পানশালায় মারামারিতে জড়িয়ে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন একবার। ক্যারিয়ারের এসব নেতিবাচক আচরণের জন্য তৎকালীন অধিনায়ক ইয়ন মরগান ও টিম ম্যানেজম্যান্টের আস্থা হারিয়েছিলেন।

গত বছর ব্রিটিশ এশিয়ান ক্রিকেটার আজিম রফিক হেলসের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী কটূক্তির অভিযোগও এনেছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তাঁকে গত বছর টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্যও বিবেচনা করা হয়নি। অবশেষে তেত্রিশ বছর বয়সে জীবন তাঁকে আরেকবার সুযোগ দিয়েছে।

বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলতে গিয়ে পাকিস্তান সুপার লিগেও ছিলেন নিয়মিত। তাই পাকিস্তানের মাঠ তাঁর বেশ পরিচিত। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গেও তিনি বেশ পরিচিত। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে ইংলিশরা হয়তো বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশা রাখছে।

ক্রিকেটের এই ব্যাডবয়ের অভিষেক ঘটে ২০১১ সালে। এর মধ্যে তিনি ৬০ টি আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টি খেলেছেন। যার গড় ৩১.০১ আর স্ট্রাইক রেট ১৩৬.৬৫। মোট রান করেছেন ১৬৪৪। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ইতিহাসে ইংল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছিলেন।

সর্বশেষ দ্য হানড্রেডে শিরোপাজয়ী ট্রেন্ট রকেটসের হয়ে ১৫২.৩৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৫৯ রান। ডেভিড ম্যালানের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটি ট্রেন্টের শিরোপা অর্জনে অনন্য অবদান রেখেছিল। তাছাড়া সম্প্রতি ইংল্যান্ডের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টিটোয়েন্টি ফরম্যাটে দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন অ্যালেক্স হেলস।

নিঃসন্দেহে হেলস একজন টি- টোয়েন্টি স্পেশালিষ্ট। আর যেহেতু সামনে হাতছানি দিচ্ছে টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তাই একজন টি- টোয়েন্টি স্পেশালিষ্ট দলে থাকা যেকোনো দলের জন্য বাড়তি পাওনা। অ্যালেক্স হেলস যে আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তনের শক্তিশালী এক ছাপ রাখতে চলেছেন তা তো অনুমানযোগ্য। খুব শীঘ্রই ইংল্যান্ড দলের জার্সিতে ওপেনিংয়ে দেখা যাবে এই তারকাকে। ইংল্যান্ডের এই বেপরোয়া ক্রিকেটার, মাঠে নেমেও বেপরোয়া ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলবেন বাইশ গজের দুনিয়ায় এমনটাই প্রত্যাশা এখন ইংল্যান্ড ভক্তদের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...