হাসান আলী, কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগের সদ্ব্যবহার

দৃশ্যপটের একাবারে বাইরে থেকে এসে সবচেয়ে বর্ণিল আলোয় পরিণত হয়েছেন হাসান আলী। বিশ্বকাপের ভাবনাতেই ছিলেন না পাকিস্তানের এই পেসার। ভাগ্য তার সহায় হয়েছে। তিনি দলে এসেছেন, জায়গা পেয়েছেন একাদশে। আর শূন্য়ের গভীর থেকে পাওয়া এই সুযোগটা দু’হাত ভরেই লুফে নিচ্ছেন হাসান আলী।

হায়দ্রাবাদে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে জয়ের রেকর্ড নেই লংকানদের। এই রেকর্ডে পরিবর্তনের ব্রত নিয়েই মাঠে নেমেছিল দাসুন শানাকার দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তা অবশ্য তাতিয়ে দিয়েছিল দ্বীপ দেশের খেলোয়াড়দের।

পাকিস্তানের বোলারদের উপর তাই চড়াও হয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামাভিক্রামারা। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে হাসান আলী লঙ্কানদের থামানোর আপ্রাণ চেষ্টাই করে গেছেন। বাগিয়েছেন ৪ খানা উইকেট। লঙ্কানদের ব্যাটিং তাণ্ডবের বহু আগেই হাসান আলী লঙ্কা দূর্গে আঘাত হেনেছিলেন।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নতুন বলে হাসানের উইকেট শিকার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুশল পেরেরা। তবে এরপর লম্বা সময় ধরে উইকেট শূন্য থাকতে হয়েছে পাকিস্তানি বোলারদের। এরপর যখন আবারও ফোকাসে এলেন হাসান আলী, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটিই নিজের করে নিয়েছেন তিনি।

দারুণ আগ্রাসনে শতক হাঁকানো কুশল মেন্ডিস হাসানের শিকারে পরিণত হন। মিডউইকেট বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ইমাম উল হক ক্যাচটি লুফে নেন। সেই স্পেলে আবারও বল হাতে এসে আরও একটি উইকেট নিজের করে নেন। এদফা শ্রীলঙ্কার অন্যতম আস্থাভাজন ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কা মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

জায়ান্ট কিলার হয়েই এদিন আবির্ভূত হয়েছিলেন হাসান আলী। নিজের চতুর্থ উইকেট হিসেবে তিনি শিকার করেন সাদিরা সামাভিক্রামাকে। শতকের দেখা পেয়েছিলেন সামাভিক্রামাও। ইনিংসের একেবারে শেষভাগে তাকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়েছেন হাসান আলী।

এর আগে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও হাসানের নামের পাশে দুইটি উইকেট যুক্ত হয়েছিল। সেই ধারায় আরও চারটি উইকেট নিজের ঝুলিতে জুড়ে নিলেন হাসান। যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭১ রান হজম করতে হয়েছে। অবশ্য এদিন পাকিস্তানের প্রতিটি বোলারই ছিলেন বেশ খরুচে। স্কোরবোর্ডে ৩৪৪ রান উঠেছে ঠিক সে কারণেই।

তবে হাসান একটা স্টেটমেন্ট রেখে দেওয়ার চেষ্টাই করছেন। কোন ভাবনায় না থেকেও এখন পরিকল্পনার মূল চরিত্রে পরিণত হচ্ছেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানকে সর্বাত্মক সহয়তাই করে যাওয়ার প্রয়াসে রয়েছেন হাসান আলী।

এবারের বিশ্বকাপে ঠিক কোথায় গিয়ে থামবেন হাসান আলী তা এখন বলা মুশকিল। তবে হঠাৎ পাওয়া গুপ্তধনের মত এই সুযোগটা কাজে লাগাতে মরিয়া তিনি। নিজের একটা ছাপ রেখে যেতেই যেন অঙ্গিকার বদ্ধ হাসান আলী। নাসিম শাহর অনুপস্থিতি বুঝতে দিতে নারাজ ডানহাতি এই পেসার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link