জোড়া ডাকে ক্যারিয়ার শুরু, এখন বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিয়ান!

৬ বছর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কার সাদিরা সামারাবিক্রমার। লঙ্কান এ ব্যাটারের সেই শুরুটা হয়েছিল টানা দুই ম্যাচে শূন্য দিয়ে। অথচ ৬ বছর বাদে কী আমূল পরিবর্তন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটা হাঁকালেন সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাও আবার সেই অক্টোবর মাসেই!

অক্টোবর ২০১৭ থেকে অক্টোবর ২০২৩— ৬ বছরের এ সময়কালে শুরু আর বর্তমানের মাঝে কী অদ্ভুত বৈপরীত্য। ৬ বছর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কার সাদিরা সামারাবিক্রমার। লঙ্কান এ ব্যাটারের সেই শুরুটা হয়েছিল টানা দুই ম্যাচে শূন্য দিয়ে। অথচ ৬ বছর বাদে কী আমূল পরিবর্তন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটা হাঁকালেন সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাও আবার সেই অক্টোবর মাসেই!

টানা দুই শূন্য দিয়ে শুরু করা সাদিরার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়াই অনুমিত ছিল। হয়েছিলও তাই। ২০১৭ তে ওয়ানডে ক্রিকেটে পথচলা শুরু করা সামারাবিক্রমা দলে থিতু হয়েছেন ২০২৩-এ এসে। তবে অর্ধ-যুগের এ অপেক্ষার ফলটা যেন এখন পাচ্ছেন সাদিরা। এশিয়া কাপ দিয়ে রান করার যে জোয়ার শুরু করেছিলেন, তা অব্যাহত রেখেছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেও।

প্রথম ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে নিজের ছান্দসিক ব্যাটিংয়ের মঞ্চায়ন বিশ্বমঞ্চে ঘটাতে সময় নিলেন না। পাকিস্তানকে ৩৪৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পথে পেয়েছেন সেঞ্চুরি। অবশ্য কুশল মেন্ডিসের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে কিছুটা আড়ালেই যেতে বসেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাদিরার এ সেঞ্চুরি। তবে শ্রীলঙ্কাকে পাহাড়সম সংগ্রহে পৌঁছে দিতে সাদিরা সামারাবিক্রমার ইনিংসের অবদান কোনো অংশেই কম ছিল না।

কুশল মেন্ডিস যেখানে শেষ করেছেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করেছিলেন এ ব্যাটার। আর এ দুই ব্যাটারের সেই সুতোর টানেই রানপাহাড়ে বসেছে শ্রীলঙ্কা। দলীয় ১০৭ রানে ৬১ বলে ৫১ রান করে পাথুম নিসাঙ্কা যখন সাজঘরের পথ ধরেছেন, তখন উইকেটে আসেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। শুরুতে কুশল মেন্ডিসের মতো আক্রমণাত্বক ছিলেন না ঠিকই। তবে মেন্ডিসকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে রান তুলেছেন প্রায় প্রতি বলেই।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে সামারাবিক্রমার সাথে জুটি বেঁধে কুশল মেন্ডিস যোগ করছিলেন ৬৯ বলে ১১১ রান। যার মধ্যে তাঁরই অবদান ছিল ৩৭ বলে ৭২ রান।তবে দলীয় ২১৮ রানে ৭৭ বলে ১২২ রান কুশল মেন্ডিস আউট হলে লঙ্কানদের হয়ে হাল ধরেন সামারাবিক্রমা। পরের ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। এ যাত্রায় অর্ধ-শতক পূরণ করে সেঞ্চুরির পথে দারুণ গতিতে এগিয়ে যান সাদিরা।

শেষ পর্যন্ত সেই মুহূর্তের দ্বারপ্রান্তেও পৌঁছে যান তিনি। ৮২ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পৌঁছে যান সাদিরা সামারাবিক্রমা।  শেষ পর্যন্ত ১১ চার আর দুই ছক্কায় ৮৯ বলে ১০৮ রানের ইনিংস সাজান লঙ্কান এ ব্যাটার। ইনিংসের ৪৭ তম ওভারের শেষ বলে হাসান আলীয় শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত থামেন সাদিরা। তবে ততক্ষণে শ্রীলঙ্কাকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে দিয়েছেন তরুণ এ ব্যাটার। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৩৪৪ রানে গিয়ে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস।

লঙ্কান এ ঝড়ের অধ্যায়ে নিশ্চিতভাবেই থাকছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। অবশ্য সাদিরার ক্রিকেট অধ্যায় তো তাঁকে এই সারথিদের একজন হওয়ার শিক্ষাই দিয়েছে। কে ভেবেছিল, দুই শূন্যতে শুরু করা ছেলেটা ফিরবে বিশ্বকাপে, সেই একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে! ডাবল শূন্য থেকে আবারো ডাবল শূন্য। তবে এবার তার আগে যোগ হয়েছে ‘১’।  সাদিরার স্বপ্নজয়ের অনেকগুলো গল্পে নিশ্চয়ই এটা নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...