মাহি ভাই ছিলেন বলে…

একটা সময় ভারতকে যেকোনো দলের বিপক্ষে লড়াই করতে শিখিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তবে এরপর ভারত দলকে সেই জয়টা নিয়মিত এনে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।

সৌরভের দেখানো পথে দলকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। ধোনির নেতৃত্বে ভারত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। অধিনায়ক হিসেবে যতটা সফল, ক্রিকেটার হিসেবেও একই রকম সফল তিনি। কত হারতে বসা ম্যাচ একা ভারতে জিতিয়ে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে ভারত ক্রিকেটের রূপরেখা নতুন করে এঁকেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিরাট কোহলিরা এখন সেই সাহসের উপর দাঁড়িয়েই লড়ে যাচ্ছে যেকোনো জায়গায়, যেকোনো দলের বিপক্ষে।

অধিনায়ক হিসেবে ধোনির কীর্তি নতুন করে বলা বাহুল্য। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর নামের পাশের আছে তিনটি আন্তর্জাতিক ট্রফি। এছাড়া সফল সব অধিনায়কদের মত অন্যান্য ক্রিকেটারদের প্রতিও তাঁর ছিল অগাথ আস্থা। তাঁর দলের ক্রিকেটারদের রীতিমত আগলে রাখতেন এই অধিনায়ক। ফলে তাঁর নেতৃত্ব দলে তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের কয়েকজন ক্রিকেটার। যাদের ক্যারিয়ারের এই সাফল্যের পিছনে অনেকটাই অবদান আছে ধোনির। এমনই কয়েকজন ক্রিকেটারদের নিয়ে এই তালিকা।

  • বিরাট কোহলি

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই কোহলিকে নিয়ে অনেক আশা ছিল ভারতে। তবে শুরুতেই সেই আশা মেটাতে পারেননি কোহলি। ২০১১ সালে ইংল্যান্ড সফরে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন তিনি। তবুও কোহলির প্রতিভার উপর সেই সময় আস্থা রেখেছিলেন ধোনি। নিয়মিত দলে সুযোগ দিয়ে গিয়েছেন এই ব্যাটসম্যানকে। কোহলি আজ ভারতের নতুন অধিনায়ক এবং তিন ফরম্যাটেই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন।

এছাড়া ২০১১-১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাজে সিরিজ পার করার পরেই দল থেকে বাদ পড়তে পারতেন কোহলি। তবে ধোনি লাল বলে কোহলির সক্ষমতা বুঝতে পেরেছিল। কোহলিও আস্তে আস্তে নিজেকে উন্নত করে ধোনির সেই ভরসা রেখেছেন। সেই সময় ধোনি কোহলির উপর এই ভরসা না করলে হয়তো বিরাট হারিয়েও যেতে পারতেন।

  • রবীন্দ্র জাদেজা

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন জাদেজা। তবে প্রায় সময়ই নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে এই অলরাউন্ডারকে। ওদিকে ধোনি সবসময়ই আস্থা রেখে গেছেন জাদেজার উপর। ব্যাট, বল, ফিল্ডিং তিন ডিপার্টমেন্টেই দলে ভূমিকা রাখতে পারেন এই অলরাউন্ডার। ফলে ধোনি বেশ পছন্দের ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিলেন জাদেজা।

যদিও ২০১১ বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি তাঁর। তবে এরপর থেকে নিয়মিতই ভারত দলে খেলেছেন জাদেজা। চেন্নাই সুপার কিংসেও জাদেজাকে কেনার জন্য সুপারিশ করেছিলেন ধোনি। হরভজন সিং অবসরে যাওয়ার পর অশ্বিনের সাথে দারুণ বোলিং পার্টনারশিপ করেছিলেন এই স্পিনার। এছাড়া ব্যাট হাতেও কিছু রান এনে দিতে পারতেন তিনি।

  • সুরেশ রায়না

ধোনির সময়ে রায়নার ব্যাট থেকে অসাধারণ কিছু পারফর্মেন্স পেয়েছিল ভারত। চাপের মুখে দারুণ সব ইনিংস খেলে দলকে সামাল দিয়েছেন রায়না। সেই সময় ধোনির কাছে ভীষণ রকমের সাপোর্ট পেতেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। এছাড়া আইপিএলেও একই দলের হয়ে খেলতেন এই দুইজন।

রায়নার বোলিংয়ের ওপরও ভরসা করতেন ধোনি। ২০১১ বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনাল ও সেমি ফাইনাল ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু রান করেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। সব মিলিয়ে ধোনির নেতৃত্বে ব্যাটিং এ অনেক উন্নতি করেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

  • রোহিত শর্মা

এই মুহুর্তে বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা ওপেনার রোহিত শর্মা। তবে শুরুটা এত বর্নিল ছিল না এই ওপেনারের। ২০১৩ সালের আগে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ৩০.৪৩। অথচ ২০১৩ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালে ধোনিই ওপেনিং এ বারবার সুযোগ দিচ্ছিলেন রোহিত শর্মাকে।

সেটিই পরবর্তীকালে বদলে দেয় সব হিসাব-নিকাষ। ধোনির সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেনই বরং হয়ে উঠেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা। ২০১৩ সালের পর আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই ব্যাটসম্যানকে। আর এখন সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন রোহিত শর্মা।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link