নানা পথ হয়ে বাইশ গজে

একজন খেলোয়াড় যখন ব্যাট কিংবা বল হাতে বাইশ গজে নামেন তখন তাঁর পরিচয় শুধুই একজন ক্রিকেটার। বাইশ গজের পারফর্মেন্স দিয়েই তিনি ক্রিকেট প্রেমীদের মন জয় করে নেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতে হলে তো আসলে শুধু ক্রিকেটার পরিচয় নিয়েই বেড়ে উঠতে হয়। নিজের জীবনের পুরোটাই বিসর্জন করতে হয় ওই ক্রিকেট মাঠে।

তবে কেউ কেউ আছেন যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উঠে আসার আগে একটা ইতিহাস রেখে এসেছেন। ক্রিকেটটা তাঁদের রক্তে থাকলেও নানাকারণে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার আগে অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকা সেই ক্রিকেটারদের নিয়েই এই তালিকা।

  • মিশেল জনসন (অস্ট্রেলিয়া)

অজি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল বোলারদের একজন মিশেল জনসন। বাইশ গজে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিলেন এই বোলার। তবে ক্রিকেটার পরিচয়ের আগেও তাঁর আছে ভিন্ন পরিচয়। অস্ট্রেলিয়ার রাস্তায় ট্রাক চালাতেন তিনি। নানারকম সরঞ্জাম বোঝাই ট্রাক চালিয়েছেন ক্রিকেট খেলার আগে। অথচ তিনিই পরে অজিদের হয়ে লাল বলের ক্রিকেটে নিয়েছেন ৩১৩ উইকেট।

  • ব্র্যাড হগ (অস্ট্রেলিয়ান)

ক্রিকেট দুনিয়ায় তাঁকে নিয়ে আলোচনাটা হয়তো সেভাবে হয় না। তবে অজিদের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আরেক নায়ক ছিলেন ব্র্যাড হগ। অজি এই ক্রিকেটারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার আগে কাজ করতেন পেট্রল পাম্পে।

  • শেলডন কটরেল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ক্রিকেট মাঠে কটরেল তাঁর ইতিহাসটা বেশ ভালো ভাবেই জানান দিয়েছেন। মাঠে উইকেট পাওয়ার পর তাঁর স্যালুট পুরো ক্রিকেট দুনিয়াতেই বেশ জনপ্রিয়তা পাওয়া গিয়েছে। তিনি কাজ করতেন পুলিশের হয়ে। এরপর ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন কটরেল।

  • এবাদত হোসেন (বাংলাদেশ)

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট তুলে নিয়ে এখন বাংলাদেশের নায়ক এই পেসার। প্রতিবারই উইকেট পাওয়ার পর স্যালুট দিয়ে উদযাপন করেন এই পেসার। কেননা ক্রিকেট খেলতে আসার আগে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একজন সদস্য। এছাড়া তিনি ভলিবলও খেলতেন।

  • ইয়ান চ্যাপেল ( অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ক ক্রিকেট খেলতে আসার আগে খেলতেন বেসবল। এরপর ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়কে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর অবশ্য কমেন্ট্রি বক্সেও দেখা যায় তাঁকে।

  • নাথান লিঁও (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল অফ স্পিনারদের একজন নাথান লিঁও। অথচ ২০১০ সালেও তিনি অ্যাডিলেডে গিয়েছিলেন পিচ কিউরেটরের চাকরি করতে। এরপর অজিদের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে এই স্পিনারের ঝুলিতে আছে ৩৪৩ উইকেট।

  • যুজবেন্দ্র চাহাল (ভারত)

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন যুজবেন্দ্র চাহাল। ভারতের হয়ে ৪৮ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৮৩ উইকেট। তবে ক্রিকেটে আসার আগে তিনি ছিলেন দাবা খেলোয়াড়।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)

ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক ভাবা হয় মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। ভারতের ক্রিকেটকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন এই কিপার ব্যাটসম্যান। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা ছিল ধোনির। তবে চাকরি নিয়েছিলেন ভারতের রেলওয়েতে। সেখানে টিকিট কালেক্টরের কাজও করতে হয়েছে তাঁকে। তবুও নিয়মিত অনুশীলন করে ভারত দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন ধোনি।

  • এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাট হাতে বাহারি সব শট খেলে পুরো ক্রিকেট দুনিয়া শাসন করেছেন। তবে এর আগে তিনি ছিলেন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link