বেশ রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ! শেষ তিন ওভারে পেন্ডুলামের মত দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। ঢাকা ক্যাপিটালসের হাত থেকে ম্যাচ কেড়ে প্রায় নিয়েই ফেলেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। কিন্তু ঘটনাবহুল এক সমাপ্তিতে ম্যাচের ফলাফল চলে যায় ঢাকার পক্ষে।
শেষ তিন ওভারে সিলেটের জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল ৫১ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনকিছুই অসম্ভব নয়। সে বিশ্বাসটুকু নিজেদের মধ্যে রেখেছিলেন জাকের আলী ও আরিফুল হক। ১৮ তম ওভারের প্রথম বলে ঢাকার অধিনায়ক থিসারা পেরেরাকে ছক্কা হাঁকান আরিফুল। সেই ওভারে ১১ রান নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন সিলেটের দুই ব্যাটার।
কিন্তু তখনও ৪০ রান বাকি। বেশ বন্ধুর একটা পথ। ১৯ তম ওভারে যত বেশি রান নেওয়া যায়, ততই জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে- তেমন চিন্তা থেকেই জাকের ব্যাট চালালেন আপন ঢঙে। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর টানা তিন বলে বাউন্ডারি আদায় করে নেন জাকের। আগ্রাসী এই ব্যাটারের আগ্রাসনে জয়ের সম্ভাবনা দেখতে শুরু করে সিলেট স্ট্রাইকার্স।
তবে টানা তিনটি চার হাঁকিয়ে জাকের চতুর্থ বাউন্ডারির জন্যেও ব্যাট চালালন। কিন্তু ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ ঘটেনি। শর্ট কাভার অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন জাকের। তখন আবার সিলেটের জয়ের সম্ভবনা খানিক স্তিমিত হয়ে যায়।
নিভু নিভু করে জ্বলতে থাকা প্রদীপের জ্বালানি জোগান দেন আরিফুল, সেই ওভারের শেষ বলে আরও একটি চার মারেন সিলেটের অধিনায়ক। ইনিংসের শেষ ওভারে ২৩ রান প্রয়োজন ছিল সিলেটের। অভিজ্ঞ মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল। ভীষণ দুষ্কর জয় পাওয়া- এমন ভাবনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন আফগান ব্যাটার সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।
মুস্তাফিজের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান শেনওয়ারি। এরপরের বলটি শেনওয়ারির পা ঘেষের করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ওয়াইড দেন মুস্তাফিজ। পরবর্তীতে ছোড়া বলে চার মেরে মুস্তাফিজকে ভরকে দেওয়ার সম্পূর্ণ কাজটাই করেছিলেন শেনওয়ারি। তৃতীয় বলেও ব্যাট চালিয়ে এক রান নিতে সক্ষম হন সিলেটের দুই ব্যাটার।
তিন বলে তখন প্রয়োজন ১১ রান। সেই মুহূর্ত থেকেই যেন এলোমেলো হয়ে যায় সিলেটের সকল হিসেব-নিকেশ। একটা ফুলটস বলে সজোরে ব্যাট চালান আরিফুল, কিন্তু দুর্ভাগা আরিফুল ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে।
খালি চোখে সেটিকে নো বল মনে হলেও, থার্ড আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান। আরেক প্রান্ত থেকে স্ট্রাইকিং প্রান্তে যাওয়ার জন্যে উদগ্রীব হয়ে ছিলেন শেনওয়ারি। কিন্তু তিনি আর পৌঁছাতে পারেননি অপরপ্রান্তে। রান-আউট হয়েছেন তিনি।
শেষ বলে রুয়েল মিয়া একটা চার হাঁকিয়ে স্রেফ ব্যবধান কমিয়েছেন। পেন্ডুলামের দোলন শেষে ঢাকাই কেড়ে নিয়েছে জয়। এমন জম্পেশ লড়াই তো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ঝিমিয়ে পড়া দূর করে। এমন ক্রিকেটীয় দ্বৈরথের জন্যেই তো শত অপেক্ষা।