ধোনি ইজ বেটার দ্যান যুবরাজ

ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং যুবরাজ সিংয়ের মাঝের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা কম হয়নি। যুবরাজের বাবা তো প্রকাশ্যেই তাঁর ছেলের ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার জন্য আঙুল তুলেছিলেন ধোনির দিকে।

ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং যুবরাজ সিংয়ের মাঝের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা কম হয়নি। যুবরাজের বাবা তো প্রকাশ্যেই তাঁর ছেলের ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার জন্য আঙুল তুলেছিলেন ধোনির দিকে। এই দুই ক্রিকেটার অবশ্য কখনোই মুখ খোলেননি, বরং নিজের দায়িত্বটা পালন করে গেছেন। এবারে সাবেক শ্রীলংকান অলরাউন্ডার রাসেল আর্নল্ড এই দুজনের মাঝে তুলনা টেনে যেন পুরনো বিতর্কটাকে উসকে দিলেন। 

মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনেই ২০০৭ টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। তবে ধোনি অধিনায়ক হলেও দুইটি টুর্নামেন্টেই ব্যাটে বলে দারুণ পারফর্ম করেছিলেন যুবরাজ। ২০১১ বিশ্বকাপে তো ছিলেন অপ্রতিরোধ্য, জিতেছিলেন টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব। 

তবে সাবেক লংকান ক্রিকেটার রাসেল আর্নল্ড দুজনের পাশে তুলনা করে ধোনিকে এগিয়ে রাখেন। তাঁর মতে, ধোনি ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় ধারাবাহিকভাবে ব্যাট করতে জানতেন। তাঁর এই গুণাবলিই ধোনিকে যুবরাজের চাইতে ভালো ফিনিশার হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে বলে অভিমত আর্নল্ডের। 

তিনি বলেন, “সে যেকোনো পরিস্থিতিতেই ব্যাট করতে জানতো। বিশ্বের খুব কম ক্রিকেটারেরই এই গুণ থাকে। সে চাপটা নিতে জানতো। আমি হয়তো ওভারে একটি বাউন্ডারি হাঁকাতে পারবো কিন্তু নিয়মিত ওভারে ১৫ রান করে তোলা আমার জন্য কঠিন। আট কিংবা দশ রান করতে হলে আমি সেটা পারবো। অন্যদিকে, ধোনি ওভারে ১৫ কিংবা ২০ রান প্রয়োজন হলেও সেটা নিতে জানে এবং সে নিয়মিত ছক্কা হাঁকাতে পটু।” সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ডব্লিউভি রমনের সাথে আলাপচারিতায় এসব কথা জানান রাসেল আর্নল্ড। 

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেই জাতীয় দলে আবির্ভাব ধোনির। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪৮ এবং শ্রীলংকানদের বিপক্ষে অপরাজিত ১৮৩ রানের ইনিংস তাঁর বিস্ফোরক ব্যাটিংয়েরই সাক্ষ্য দেয়। তবে অধিনায়কত্ব পাবার পর নিজের ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আনেন ধোনি।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্নক ব্যাটিংয়ের বদলে বরং ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে শুরু করেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিয়াই ম্যাচের কথাই স্মরণ করা যাক, সেবারে ২৯ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে রীতিমত ধুঁকছিল ভারত। কিন্তু দারুণ এক সেঞ্চুরি করে সেদিন ভারতকে ২২৭ রানের লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন ধোনি। শুরুতে খানিকটা ধীরে শুরু করলেও শেষদিকে রীতিমত রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন, ওভারে প্রায় ১৫ রান তোলেন। 

অন্যদিকে, যুবরাজ বোলারদের উপর আরো প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পছন্দ করতেন। বেশিরভাগ সময়েই তাঁর জন্য মঞ্চটা প্রস্তুতই থাকতো, যুবরাজ কেবল ম্যাচটাকে প্রতিপক্ষের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যেতেন। আর্নল্ডের মতে চাপ সামলাতে ধোনির চাইতে খানিকটা পিছিয়েই ছিলেন এই অলরাউন্ডার। 

তিনি বলেন, ‘ধোনি খেলার ধরণটা একদমই আলাদা। তাঁর মানের ক্রিকেটারই ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। আপনি এমন ক্রিকেটারদের পাবেন যারা কিনা ক্রিজে এসেই বাউন্ডারি এনে দিতে পারবে, যেমন যুবরাজ সিং। কিন্তু যুবরাজ চাপটা সামলাতে পারবেন না যেমনটা ধোনি করে গেছেন ক্যারিয়ারজুড়ে। যুবরাজ চাইলেও পরিস্থিতি অনুসারে খেলতে পারবেন না, তিনি স্বভাবতই আক্রমণাত্নক ব্যাটার। অন্যদিকে, ধোনি পরিস্থিতি বিবেচনায় যেমন খোলসে ঢুকে যেতে পারে, তেমনি হাত খুলে খেলতেও সমান পটু।’

ধোনি এবং যুবরাজ দুজনেই ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বেশ কয়েক বছর হল। এখন দেখার বিষয় আর্নল্ডের এমন বক্তব্যের পর কেমন প্রতিক্রিয়া দেখান এই দুই ক্রিকেটার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...