কাগিসো রাবাদা যেন এক উজ্জ্বল আলো। আড়ালে ঢাকা পড়লেও সে আলোর রেখা চোখে পড়ে, চোখে পড়তে বাধ্য। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের সমস্ত গল্প জুড়ে যখন মার্করাম কিংবা বাভুমার নাম, রাবাদা তখন প্রদীপের নিচে অন্ধকারে ঢাকা। তবে ওই গল্পের ক্লাইম্যাক্সটা তো লিখেছিলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস, রাবাদা তাদের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামালেন। ফাইনালের বড় মঞ্চে তুলে নিলেন ফাইফার। অজিদের রানের চাকাও থামে ২১২–তেই।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে আফ্রিকা যখন ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায়, তখন জয়ের সম্ভাবনা প্রায় নিভে যেতে বসেছে। তবে ঘোর অমানিশার মাঝে শেষ অবলম্বন হিসেবে আলো হয়ে এলেন রাবাদা।
তৃতীয় দিনে যখন ব্যাটিং উইকেটে পরিণত হয়েছে লর্ডসের পিচ, তখনও রাবাদার একেকটা বল ভয় ধরিয়েছে অজিদের দুর্ভেদ্য দেয়ালে। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার যখন প্রায় সেট হয়েছে, তখনই রাবাদা করেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ১১তম ওভারটা। ২৮ রানের মাথায় উসমান খাজাকে সাজঘরে ফেরানোর দুই বল পর ক্যামেরুন গ্রীনকেও শিকার করেন এই স্পিডস্টার। ওটাই ম্যাচে ফেরায় আফ্রিকাকে।
দুই ইনিংস মিলে ৯ উইকেট শিকার, তাও আবার ফাইনালে। যদিও রাবাদার এই কৃতিত্ব অনেকটা ম্লান হয়েছে মার্করামের সেঞ্চুরি এবং বাভুমার ইতিহাস লেখার আড়ালে। তবে আফ্রিকার বিশ্বজয়ের পেছনে রাবাদার ওই আগুনে স্পেলই ছিল টার্নিং পয়েন্ট।
নিজেকে প্রমাণের জন্য সবার সামনে আসার দরকার হয় না। আড়ালে থাকলেও সাফল্যের আলো তাকে ঠিকই খুঁজে নেয়। হয়তো সবাই ভুলে যাবে একদিন, হয়তো স্মৃতির কোণে ধুলো পড়ে ঝাপসা হবে সবকিছু।
তবুও রাবাদার একেকটা বাউন্সার, একেকটা উইকেট কিংবা অজিদের ভয় ধরানো একেকটা ওভার হয়তো ক্রিকেট মনে রাখবে, লর্ডসের এই মাঠ ঠিকই মনে রাখবে এই আড়ালের নায়ক কাগিসো রাবাদাকে।