বাংলাদেশের ক্রিকেট যেন এক গোলকধাঁধা। মাঠের পারফরম্যান্স কিংবা বাইরের কর্মকাণ্ড—সবই যেন বোধগম্য শক্তির একেবারেই ঊর্ধ্বে। এর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকায় থাকা একটা অংশের নাম নির্বাচকদের প্লেয়ার সিলেকশন। যা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ হয় মূলত পরিকল্পনাহীন কার্যকলাপের জন্যই।
একেক সিরিজ যেন একেক জনের জন্য পরীক্ষাগার। যাওয়া আসার মাঝেই থাকতে হয় তাঁদের। স্কোয়াডে কেন ডাক পেয়েছেন, কেনই বা বাদ পড়লেন তা বোঝার কোন উপায় কোথাও নেই!
শুরুটা পারভেজ হোসেন ইমনকে দিয়ে করা যেতে পারে। শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে ছিলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তিন ম্যাচের সেই সিরিজে করেছিলেন ১০৮, গড় ছিল ৩৬। তবে পরের সিরিজেই বাতিলের খাতায় নাম ওঠে তাঁর।
মাঝের সময়জুড়ে ছিল এশিয়া কাপে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অবশ্য ব্যাট হাতে আশানুরূপ কিছুই করতে পারেননি। চার ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ১০ গড়ে করেছিলেন ৪০ রান। আর এতেই যেন বন্ধ হয়ে যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে সুযোগের দরজা।
ইমনের শূন্যস্থান পূরণের ডাক পড়ে নাইম শেখের। তবে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র এক ম্যাচ। সেখানেও বলার মতো কিছুই করতে পারেননি তিনি। অগত্যা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই কাটা পড়ল নাম।
নাইমের জায়গায় আবার নতুন করে পরিচয় করানো হলো সৌম্য সরকারকে। সবশেষ তিনি দলের সাথে ছিলেন এ বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন সময়ে। তাঁর বাদ পড়া নিয়েও একটা প্রশ্নচিহ্ন ছিল, এখন সুযোগ পাওয়া নিয়েও একই কথা বলা যায়।
কে কখন সুযোগ পাবেন সেটা অনুমান করার কোন উপায় অবশ্য রাখেননি নির্বাচকরা। এক ম্যাচ কিংবা সিরিজ খারাপ করলে তাঁকে সরিয়ে ফেল নীতিতে যেন চলছে বোর্ড। তবে এটাও যে একশ শতাংশ সঠিক, তা বলার উপায় নেই। কারণ অনেকেই ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখিয়ে গেলেও দলে জায়গাটা পাকাপোক্ত থাকে।
বাদ পড়ার আরও এক ধাপ অবশ্য আছে। এখানে একক ফরম্যাটের পারফরম্যান্স বিবেচনায় আনা হয় না। সেক্ষেত্রে টি-টোয়েন্টিতে খারাপ করলে সরিয়ে দেওয়া হয় ওয়ানডে থেকেও। কেন বাদ দেওয়া হলো প্রশ্নে মেলেনা কোন সদুত্তর। আবার কেনই বা দলে নেওয়া হলো প্রশ্নে, ওই এক মুখস্থ বুলি- পাইপলাইনে নেই পর্যাপ্ত খেলোয়াড়। এ গোলকধাঁধা যেন বোঝা বড় দায়।
Share via: