বিমান হয়ে উড়লেন এবাদত

ব্যাট হাতে, দিনটা হয়ত ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে আরও একটি স্মরনীয় দিন হয়ে রইলো এটি এবাদতের জন্য। যুদ্ধবিমানের গতিতেই যেন উড়ে বেড়াচ্ছেন এবাদত। তাকে দমিয়ে দেওয়া যে প্রায় অসম্ভব। আফগানদের প্রথম ইনিংসের প্রায় অর্ধেক গুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি একা হাতেই।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুটা মোটেও সুখকর হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ঘন্টায় গুটিয়ে যায় টাইগাররা। শেষের দিকের ব্যাটারদের দূর্বলতাই যেন কারণ। তবে আগেরদিনই নিজের পুঁজি যথেষ্ট পোক্ত করেই রেখেছিল বাংলাদেশ।

সেটার প্রমাণটাই মিলল আফগানিস্তানের প্রথম ইনিংসের। ৩৮২ রানও যেন আফগান ব্যাটারদের পাহাড়সম মনে হতে থাকে। তবে সেই অনুভূতি দেওয়ার শুরুটা করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। তিনিই প্রথম আফগান ব্যাটিং দূর্গে আঘাত করেন। এরপরের গল্পের পুরোটা জুড়েই রয়েছেন এবাদত হোসেন।

সেই মাউন্ট মঙ্গানুই থেকে শুরু। এবাদত এরপর ক্রমেই বাংলাদেশের জন্য লাল বলে সম্মুখভাগের সেনানী। তিনি একাই প্রতিটা ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে শুরু করেন। এদিন তার প্রথম শিকারে পরিণত হন আবদুল মালিক। এক্ষেত্রে একটুখানি বাড়তি বাউন্স তাকে সহয়তা করে।

অফ স্ট্যাম্পের একটু বাইরে শর্ট লেন্থে পিচ করা বলটা মালিক ব্যাকফুটে গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। তাতে মালিকে গ্লাভস ছুঁয়ে বল হাওয়া ভেসে থাকে খানিকক্ষণ। তৃতীয় স্লিপে থাকা জাকির হাসান সে ক্যাচটি লুফে নিতে ভুল করেননি বিন্দুমাত্র। এরপর সহজ ভঙ্গিমায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রহমত শাহ। আবারও বাড়তি বাউন্সে পরাজিত শাহ।

তিনি বুঝে ওঠার আগেই ব্যাটে বল লেগে জমা পড়ে উইকেটের আশেপাশে থাকা তাসকিনের হাতে। মাঝে অবশ্য রহমত শাহকে স্লিপে আউট করবার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল এবাদতের বলেই। তবে সেই ক্যাচ আর লুফে নেওয়া হয়নি। ঠিক এরপরের এবাদতের ওভারেই রহমতের ঠিকানা সাজঘর।

তারপর এবাদত পরিকল্পনা সাজিয়ে তুলে নেন আফসার জাজাইয়ের উইকেট। শর্ট লেন্থে পড়া বল এগিয়ে যেতে থাকে অফ-মিডেল স্ট্যাম্পের লাইন ধরে। সেই শটে আফসারের সংযোগটা ভাল হলেও, শক্তি স্থানান্তর করতে পারেননি আফসার। ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা শরিফুল খানিকটা জায়গার পরিবর্তন ঘটিয়ে তালুবন্দি করেন আফসারের উইকেট।

এরপর আরও একবার সুযোগ তৈরি করেন এবাদত। যদিও করিম জানাতকে সেদফা আউট করা যায়নি। শর্ট লেগে থাকা জাকির হাসানের হাতে বল আঘাত করলেও তা আর হাতে জমাতে পারেননি তিনি। কিন্তু ঠিক আবার ফিরতি ওভারে সেই একই স্থানে আটকা আমির হামজা।

এবাদতের সেই শর্ট বলেই কাবু আমির হামজা। ডিফেন্ড করতে গিয়ে ব্যাটের খোঁচা। এরপর শর্ট লেগে থাকা মুমিনুল এক হাতে লুফে নেন সেই বল। আরও একটি উইকেট জমা পড়ে এবাদতের ঝুলিতে। তবে পাঁচ উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপের অগ্নিকুণ্ডে পড়তে হয়েছে এবাদতকে।

চা-বিরতির পর দ্রুতই আফগানদের অলআউট করবার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সে অনুযায়ী দুই প্রান্ত থেকেই স্পিনারদের দিয়ে বল করান অধিনায়ক লিটন দাস। শেষের দুইটি উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন, তাইজুল ও মিরাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link