দায়িত্বশীল ইমনের ‘ক্যালকুলেটিভ’ আগ্রাসন

দূর্বলতা ডিঙিয়ে ঠিকই তিনি দেখাচ্ছেন নিজের ঝলক। ইনকামিং ডেলিভারির বিপক্ষে ইমনের অপারগতার সমাধান ঘটলে, তিনি হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের নতুন দিনের আশার আলো।

ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি পূর্ণ করলেন পারভেজ হোসেন ইমন। সেই সাথে বাংলাদেশের তরী ভেড়ালেন জয়ের বন্দরে। ভয়ডরহীন ব্যাটিং, আগ্রাসনের নতুন মূর্তি। বাংলাদেশের ওপেনিং সংকটের বহুল আকাঙ্ক্ষিত সমাপ্তি।

সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে দুই ফিফটি। একটি শ্রীলঙ্কার মাটিতে, আরেকটি ঘরের মাঠে। মাঝে অবশ্য আছে দু’টো শূন্য। তবে আগ্রাসনের সম্পূরক সেটি। একদিন ব্যর্থ হবেন, আরেকদিন সফল। ‘বিটুইন দ্য লাইন’ বলতে কোন কিছু আগ্রাসনের অভিধানে নেই।

তবে ইমন কি কেবলই আগ্রাসী? মোটেও নয়। মিরপুরের উইকেটটা ছিল ভীষণ কঠিন। সেখানে দাঁড়িয়ে ব্যাটিংটা করতে হতো পরিস্থিতির চাহিদা মেনে। ইমন ঠিক সে কাজটাই করেছেন। কিন্তু খোলসবন্দী হয়ে নেতিবাচক ক্রিকেট বরং তিনি খেলেননি।

স্লটে বল পেলেই তিনি তা বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন। নামের পাশের পাঁচটি ছক্কা তার পাওয়ার হিটিংয়ের প্রতিচ্ছবি। ৩৯ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থেকেছেন পারভেজ হোসেন ইমন। টি-টোয়েন্টিতে একজন ওপেনারের কাছ থেকে নিশ্চয়ই এটাই প্রত্যাশিত।

কেউ একজন বড় ইনিংস খেলে দলের জয় একেবারে নিশ্চিত করবেন। ইমন সে কাজটাই করলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। তবে স্রেফ বড় শটের উপর নির্ভরশীল ছিলেন না। প্রয়োজনের মুহূর্তে স্ট্রাইক রোটেশন করেছেন, তাড়াহুড়ো না করে পরিস্থিতি মোতাবেক ব্যাটিংটা করেছেন।

তিন খানা চারের সাথে সাথে ১৪টি সিঙ্গেলসও নিয়েছেন। আগ্রাসনের সাথে স্থিতিশীলতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। ১৬ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় দফা পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলে ফেললেন ইমন। এই ফিফটিসহ দু’টো ফিফটি, এছাড়াও রয়েছে একটি সেঞ্চুরি।

অতএব তিনি পরিণত হয়েই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়িয়েছেন। তাছাড়া তার ব্যাটিং শৈলি টি-টোয়েন্টির জন্যে দারুণ কার্যকর। যদিও তার দূর্বলতা প্রকাশ্য। তবে দূর্বলতা ডিঙিয়ে ঠিকই তিনি দেখাচ্ছেন নিজের ঝলক। ইনকামিং ডেলিভারির বিপক্ষে ইমনের অপারগতার সমাধান ঘটলে, তিনি হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের নতুন দিনের আশার আলো।

 

Share via
Copy link