দীর্ঘ বাজে ফর্মের অবসান ঘটিয়ে ঘুড়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে চেলসি। চেলসির এই ঘুড়ে দাঁড়াতে পারার পেছনে যেই ব্যক্তির অবদান সব থেকে বেশি তার নাম – এনজো মারেসকা। প্রিমিয়ার লিগে শেষ কয়েক মৌসুমে চেলসি তেমন একটা ভালো সময় কাটাতে পারেনি।
গত কয়েক মৌসুমে চেলসিতে ঘটে গিয়েছে বেশ কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ক্লাবের মালিকানা পরিবর্তন থেকে শুরু করে একের পর এক ম্যানেজার বরখাস্ত হওয়া, প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের মাঝামাঝি মৌসুম শেষ করা। অবশেষে মনে হচ্ছে এসকল হতাশার অবসান ঘটতে যাচ্ছে এনজো মারেসকার হাত ধরে।
১৯৮০ সালের, ১০ ফেব্রুয়ারি। ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন এনজো মারেসকা। তার ম্যানেজেরিয়াল ক্যারিয়ার তেমন আহামরি নয়। তবে তিনি বর্তমান ফুটবল বিশ্বের বিভিন্ন ডাগ-আউট মাস্টারমাইন্ডের থেকে দীক্ষা নিয়েছেন। তিনি ম্যানুয়াল পেলেগ্রিনি এবং পেপ গার্দিওলার মতো ম্যানেজারদের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। মূল দলের ম্যানেজার হিসেবে তিনি এর আগে লিস্টার সিটি এবং পারমার মত ক্লাবের হয়ে কাজ করেছেন।
চেলসিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হওয়া মাত্রই সমালোচনার শুরু হয়। চেলসির এমন বাজে দশা কি সামলে নিতে পারবে এই ইতালিয়ান? এমন প্রশ্ন উঠেছে বারবার। তবে তার দক্ষতার বলে সবাইকে চুপ করিয়ে দেয় মারেসকা। চেলসি সম্প্রতি বেশ ভালো খেলা প্রদর্শন করছে তার কারিকুরির বলে।
মারেসকার আক্রমণাত্মক খেলার ধরনের সাথে বেশ মানিয়ে নিয়েছে চেলসি দল। তার কৌশলে বেশ ভালো ফল পাচ্ছে তার দল। চেলসি এই প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে সর্বাধিক গোল করা দল। তবে মারেসকার এমন আক্রমণাত্মক খেলার ধরনে সমস্যাও রয়েছে বেশ। রক্ষণভাগে তারা তেমন একটা কার্যকরী হতে পারছেন না। ফলে তাদের বেশ কিছু গোল হজম করতে হচ্ছে।
চেলসি বর্তমানে বেশ বড় একটি দল গঠন করেছেন। বর্তমানে তাদের দলে মোট ৩২ জন খেলোয়াড় রয়েছেন যা ইউরোপের অন্য যেকোনো দলের থেকে সবথেকে বেশি। এতো বড় একটি দল পরিচালনা করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। সকল খেলোয়াড়কে খেলার সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে খেলোয়াড়দের সাথে ম্যানেজারের মনোমালিন্য দেখা যায়।
তবে মারেসকা এই বিষয়টিকে বেশ ভালো ভাবেই সামলে নিয়েছেন। তিনি সকল খেলোয়াড়কেই মোটামুটি সুযোগ দিতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে খেলোয়াড়রা তার অধীনে বেশ খুশি বলেই মনে হচ্ছে।
চেলসির ঘুরে দাঁড়ানোর এই গল্প এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, তবে এনজো মারেসকার নেতৃত্বে দলটি নতুন আশার আলো দেখছে। আক্রমণাত্মক ফুটবল ও খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করার মাধ্যমে তিনি চেলসিকে পুনরায় শীর্ষে তুলে আনতে শুরু করেছেন।
যদিও রক্ষণভাগের দুর্বলতা এবং বিশাল স্কোয়াড ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ তার সামনে বড় বাধা হয়ে আছে। তবে মারেসকা দেখিয়েছেন যে তিনি চাপ মোকাবিলা করে ইতিবাচক ফল আনতে সক্ষম। চেলসির সমর্থকরা এখন আশাবাদী যে দলটি আবার তাদের সোনালি দিনগুলোতে ফিরে যাবে।
এনজো মারেসকা হয়তো চেলসির জন্য দীর্ঘমেয়াদী একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করছেন। তার এই যাত্রা প্রিমিয়ার লিগের প্রতিযোগিতায় একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে।চেলসির ইতিহাসে নতুন সাফল্যের গল্প যোগ করাই হবে তার আসল লক্ষ্য।