নেট রান রেটের সমীকরণ জানতোই না আফগানরা

২০১৮ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ রানের পরাজয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওভারে হার। ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে শেষ মুহুর্তে জয় বঞ্চিত – আফগানিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে অর্জনের চেয়েও বোধহয় দু:খগাঁথা বেশি। বারবার তীরে এসে তরী ডোবানো হয়তো আফগানদের স্বভাবে মিশে গিয়েছে।

এবারের এশিয়া কাপেও সেই স্বভাব বদলাতে পারেনি তাঁরা; বাগে পেয়েও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার ফোরে জায়গা করতে পারলো দলটি। ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারলেই মিলবে পরের রাউন্ডের টিকিট, অথচ ৩৭ ওভারে ২৮৯ রান করেও রশিদ খানেরা শেষমেশ হেরেছে ২ রানে।

তবে এই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ বোধহয় একটু বেশিই তেতো ঠেকবে আফগানিস্তানের কাছে। কেননা এই পরাজয়ে ভাগ্যের চেয়ে নিজেদের বোকামিই বেশি দায়ী। ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রান করতে হবে সুপার ফোরে খেলতে হলে – শুধু এই একটা সমীকরণই জানতো ব্যাটার রা।

কিন্তু, ৩৭.৪ বলে ২৯৫ কিংবা ৩৮.১ বলে ২৯৭ রান করলেও ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেত – সেটাই জানা ছিল না কার। ম্যাচ শেষে এই ইস্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জোনাথন ট্রট, আফগানদের কোচ।

তিনি ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে বলেন, ‘আমাদেরকে একটা হিসেব জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, জিততে হবে ৩৭.১ ওভারে মধ্যে। ২৯৫ ও ২৯৭ করলেও যে জেতা যাবে সেটা বলা হয়নি, আমাদের ৩৮.১ ওভার পর্যন্ত যে সুযোগ ছিল – সেটা আমরা জানতামই না।’

আর জানতো না বলেই  মুজিবুর রহমান ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে আউট হতেই হতাশায় মুষড়ে পড়েন নন-স্ট্রাইকে থাকা রশিদ খান। নতুন ব্যাটার ফজল হক ফারুকীর মাঝেও ছিল না জয়ের তাড়না। অথচ সব সমীকরণ জানা থাকলে অন্তত শেষ চেষ্টা করতে পারতো আফগানিস্তান।

আফগানিস্তান সাহসী ক্রিকেটই খেলেছে; প্রায় অসম্ভব হয়ে যাওয়া একটা সমীকরণই মিলিয়ে ফেলার দ্বারপ্রান্তে ছিল। কিন্তু ক্ষনিকের ভুলে সব স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে গিয়েছে; ড্রেসিংরুমে থাকা রহমানউল্লাহ গুরবাজ, গুলবাদিন নাইবদের চেহারায় ফুটে ওঠে বেদনায় ভাষা বুঝতে সমস্যা হয়নি কারোই।

দায়টা ম্যাচ অফিসিয়ালদের সাথে সাথে অবশ্যই আফগানিস্তান দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্টের। ম্যাচের ব্রডকাস্টার কিংবা ম্যাচ অফিসিয়ালরা স্বাভাবিকভাবেই সব সমীকরণ দেখাবেন না; তাই সেসব খুঁজে বের করা অ্যানালিস্টের কাজ। সেটাই করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি; আর মাশুল দিতে হলো পুরো দলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link