২০১১ বিশ্বকাপের পর আর সেমিফাইনালে পা রাখা হয়নি পাকিস্তানের। ২০১৫ আর ২০১৯ বিশ্বকাপের পর এবারও সেই একই ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি আঁকছে বাবর আজমের দল। রান রেটের মারপ্যাঁচে পড়ে সেরা চারের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া আসন্ন পাকিস্তানের।
অবশ্য সেমিতে উঠতে না পারার দায়টা পাকিস্তানেরই। টুর্নামেন্টের শুরুতে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে দারুণ কিছুর আভাস দিলেও এরপর পাকিস্তানের সঙ্গী হয়েছে টানা চার হার। আর সেখানেই মূলত পাকিস্তানের সেমির স্বপ্নে বড় ধাক্কা আসে। সেই ধাক্কা পরে কাটানোর চেষ্টা করলেও শেষ চারে জায়গা করে নেওয়ার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।
এক বিংশ শতাব্দীতে এ নিয়ে ৬ বার ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাঠে গড়াচ্ছে। অথচ এই ৬ আসরে পাকিস্তান সেমিতে উঠতে পেরেছে মাত্র এক বার। অথচ প্রতি আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশাকে পুঁজি করে আসে দলটি। বৈশ্বিক আসরে তাহলে পাকিস্তানের এই অধারাবাহিকতার কারণ কি? সম্প্রতি ‘এ’ স্পোর্টসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সেটিই খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন পাকিস্তানের ৪ সাবেক অধিনায়ক।
ওয়াসিম আকরামের মতে, পাকিস্তান ৪ বছর আগেও যেমন দল ছিল, এখনও তেমন দলই আছে। কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো পরিবর্তনই দেখছি না। একটা টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে যে ধরনের পরিকল্পনা থাকা উচিৎ তার কোনোটাই ছিল না এবারের দলে।’
পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার মঈন খান মনে করেন, দলটির মধ্যে সমস্যা খোঁজারই কোনো চেষ্টা নেই। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা আমাদের দলের সমস্যাটাই ধরতে পারিনি। এ দলের ফিটনেস ইস্যু সহ অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার কোনো চেষ্টা আমি দেখিনি।’
এ পর্যায়ে ওয়াসিম আকরাম যুক্ত করে বলেন, ‘এই বিশ্বকাপের পর আমাদের এই ব্যাপারগুলা নিয়েই ভাবা উচিৎ। অবশ্যই কোনো রকম তাড়াহুড়ো করে নয়। সময় নিয়েই এই কাজগুলো করা উচিৎ। আমরা পরামর্শ দিতে পারি। এরপর সময় নিয়ে সেই কাজগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে হবে।’
পাকিস্তানের আরেক সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিকের মূল অভিযোগের জায়গাটা হচ্ছে, রিবিল্ডিং প্রসেসে দল গঠনের কাজ করলেও, পাকিস্তান ক্রিকেটে তা মাঝপথে থেমে যায়। এতে করে বড় টুর্নামেন্টের আগে ব্যালান্সড টিমটা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে না। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় ভবিষ্যৎ দল গড়ার কাজ করি। কিন্তু সেটা পরিকল্পনাতেই আটকে থাকে, বাস্তবে হয়ে ওঠে না।’
মিসবাহ-উল-হক মনে করেন, একটা দলের উন্নতির মানসিকতা সব সময় থাকা উচিৎ। পাকিস্তান দলে সেটারই ঘাটতি রয়েছে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ম্যাচ জিতলেই উন্নতির জায়গা থাকে না, তা কিন্তু নয়। এটা একটা প্রসেস। দল পারফর্ম করলেও উন্নতির জায়গা খুঁজতে হবে। আমাদের দলে পেসাররা ভাল করছিল বলে কিন্তু স্পিনারদের ব্যর্থতা আড়ালে চলে গিয়েছিল। এটা হওয়া উচিৎ নয়।’