বিশ্বকাপের আগে অফফর্মের গ্যারাকলে আটক ছিলেন ফখর জামান। সেই এপ্রিলে তার ব্যাট থেকে এসেছিল পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস। তবে এরপর টানা ১২ ম্যাচ ফখরের ব্যাটে আসেনি বড় রান। বাধ্য হয়েই তাকে ছেড়ে দিতে হয় বিশ্বকাপ একাদশের নিজের জায়গা।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি খুব একটা কার্য্যকর প্রমাণিত হচ্ছিল না। ঠিক সে কারণেই ফখর জামানের বদলে সুযোগ দেওয়া হয় আবদুল্লাহ শফিককে। তিনি বেশ ভালও করেন। নিয়মিত ইমাম উল হকের সাথে উদ্বোধনে হাজির আবদুল্লাহ শফিক।
তবে তাতেও যে খুব একটা পরিবর্তনের দেখা পেয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান তা কিন্তু নয়। তবুও লম্বা সময় ডাগ-আউটে বসে কাটাতে হয়েছে ফখর জামানকে। তবে অবশেষে ৫ ম্যাচ পড়ে আবারও একাদশে ফিরলেন ফখর জামান। ফিরেই তিনি দেখালেন নিজের ব্যাটের ঝলক। ১২ ইনিংস পর আরও একটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস এলো ফখরের ব্যাট থেকে।
ঠিক যেই মুহূর্ত থেকে ফখরের অফফর্মের যাত্রা শুরু, তার আগ মুহূর্তেই ১৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তাও আবার নিউজিল্যান্ডে বিপক্ষে। ঠিক সে কারণেই ফখর জামানের অফফর্মকে সঙ্গী করেই ভারতে পা রেখেছিল পাকিস্তান। তিনি নিজের দিনের ঠিক কতটা কার্য্যকর, সেটার প্রমাণই আরও একবার দিয়ে দিলেন ফখর জামান।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেমিফাইনালের আশা একেবারেই ফুরিয়ে যায়নি। নিভু নিভু করে জ্বলতে থাকা প্রদীপের আলোর জ্বালানি বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়। সেই জয় পেতেই ফখর জামান খেলে ফেললেন ৮১ রানের এক ঝকঝকে ইনিংস। তিনি একাই যেন বাংলাদেশের একেবারে ভঙ্গুর আত্মবিশ্বাসকে গুড়োগুড়ো করে দেন।
৭ খানা ছক্কা মেরেছেন তিনি বাংলাদেশী বোলারদের। তাসকিনরা স্রেফ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছেন ফখর জামানের তাণ্ডব। সেখানে আবার তিনখানা চারও মেরেছেন তিনি। ৭৪ বলে খেলা তার এই ইনিংসটিতে ভর করেই জয়ের ভীত আরও বেশি পোক্ত হয় পাকিস্তানের।
তিনি আউট হয়ে ফিরে গেলেও জয় পেতে একটুও বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানকে। ১০৯.৪৫ স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংস খেলার পথে উদ্বোধনী জুটি গড়েন তিনি ১২৮ রানের। সে জুটিতে আবদুল্লাহ শফিকও যোগ্য সঙ্গ দেন। ধারাবাহিকভাবে পারফরম করতে থাকা শফিক আউট হয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ৬৮ রানে।
এই উদ্বোধনী জুটিই আসলে জয় ত্বরাণ্বিত করেছে পাকিস্তানের জয়। তবে ফখর জামান যেন এদিন নিজেকে প্রমাণ করতেই নেমেছিলেন। তিনি যেন আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন ফুরিয়ে যাননি ফখর। নিজের দিনে এখনও বিধ্বংসী তিনি। নিজের দিনে এখনও দলকে এনে দিতে পারেন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল।
খারাপ সময়ের বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে খুব বেশি সময় নেননা ফখর জামান। স্রেফ একটু ভরসা করে সুযোগটা দিতে হয় তাকে। তবে তিনি ভরসার প্রতিদান দিয়ে দেন সুদে-আসলে। তেমনটিই করলেন তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে। সামনের ম্যাচগুলোতে তাই ফখরের ব্যাটে ভর করেই জয়ের সন্ধান করতে চাইবে পাকিস্তান।