ওপেনারদের লড়াইয়ে একটু পিছিয়ে পড়েছিলেন সৌম্য সরকার।
আজ দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাসকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিলো চট্টগ্রাম। কিন্তু লিটনের অভাব বুঝতে দেননি সৌম্য। লড়াইতে ফিরে এসেছেন তিনি দারুণভাবে। ৬২ রানের এক ইনিংস খেলে দারুন জয় এনে দিয়েছেন চট্টগ্রামকে।
টুর্নামেন্ট জুড়েই প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তি মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে ফরচুন বরিশাল। গত ম্যাচে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর দেওয়া ২২১ রান তাড়া করে জয়ের পর আত্ববিশ্বাসী তামিমের দল আবারো ছন্দ হারিয়েছে আজকের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। গাজি গ্রুপ চট্টগ্রামের কাছে ৭ উইকেটে হেরে প্লে-অফ খেলার সমীকরণ কঠিন করে ফেলেছে তারা।
৭ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শেষে রয়েছে তামিমের দল। সমান ম্যাচে ২ জয় নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থেকে বরিশালের উপরে রয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিজেদের জয়ের সাথে রাজশাহীর হারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে বরিশালকে।
আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করা গাজি গ্রুপ চট্টগ্রাম টসে জিতে ফরচুন বরিশালকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায়। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ফরচুন বরিশালকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। উদ্বোধনী জুটিতে এই দুজন সংগ্রহ করেন ৬৫ বলে ৮৭ রান। সাইফ হাসান ৩৩ বলে ৬ টি চার ও ২ টি ছয়ে ৪৬ রান করে বিদায় নিলে ভাঙ্গে ওপেনিং জুটি।
ওপেনিং জুটি ভাঙার পরই পথ হারায় বরিশালের ইনিংস। সঙ্গী হারিয়ে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি তামিম ইকবালও। দলীয় শতরান পূরন করে মোসাদ্দেকের শিকার হয়ে তামিম ইকবাল বিদায় নেন ৩৮ বলে ৪৩ রান করে।
অধিনায়কের বিদায়ের পরই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ফরচুন বরিশাল। ১০ বলে ১৪ রান করে গত ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমন বিদায় নিলে উইকেটে এসে সময়ের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন তৌহিদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইরফান শুকুর। তৌহিদ হৃদয় ৪, মিরাজ ১ ও ইরফান শুকুর করেন ২ রান। শেষের দিকে আফিফ হোসেনের ১৬ বলে অপরাজিত ২৮ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশাল।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের পক্ষে দারুণ বোলিং করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। বরিশালের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাইফ হাসানকে আউট করে উড়তে থাকা বরিশালের উদ্ভোধনী জুটি ভাঙ্গার সাথে ঝুলিতে পুড়েছেন তামিমের উইকেটও। ৪ ওভারের স্পেলে ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া সঞ্জীত সাহা ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ২ টি এবং জিয়াউর রহমান ৩ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ টি উইকেট শিকার করেন।
১৫০ রানের টার্গেটে সৌম্য সরকারের সাথে ইনিংস উদ্ভোধন করতে নামেন সৈকত আলী। বিশ্রামে থাকায় চট্টগ্রামের একাদশে ছিলেন না নিয়মিত ওপেনার লিটন দাস। উদ্বোধনী জুটিতেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় চট্টগ্রাম। সৈকত আলী ৩৩ বলে ৬ টি চার ও ১ টি ছয়ে ৩৯ রান করে বিদায় নিলে ভাঙ্গে ৭৯ রানের উদ্ভোধনী জুটি। ২য় উইকেট জুটিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার।
৩৭ বলে ৭ টি চার ও ৩ টি ছয়ে ৬২ রান করে সৌম্য ফিরে গেলে উইকেটে এসে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি চট্টগ্রামের অধিনায়কও। সুমন খানের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে মিঠুন ফিরে যান ৩ রান করে। ৮ বল হাতে রেখে তরুণ মাহমুদুলকে সাথে নিয়ে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মাহমুদুল ২৭ বলে ৩১ ও মোসাদ্দেক ১১ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ফরচুন বরিশালের পক্ষে সুমন খান ২ টি ও বাকি ১ টি উইকেট শিকার করেন মিরাজ।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪৯/৬ (সাইফ- ৪৬, তামিম- ৪৩, পারভেজ- ১৪, তৌহিদ- ৪, আফিফ- ২৮, মিরাজ- ১, ইরফান- ২, সুমন- ৬; সঞ্জীত শাহ- ২/২২, মোসাদ্দেক- ২/১৬, জিয়াউর- ২/২৫)
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৮.৪ ওভারে ১৫৩/৩ (সৈকত- ৩৯, সৌম্য- ৬২, মিঠুন- ৩, মাহমুদুল- ৩১*, মোসাদ্দেক- ১১*;সুমন- ২/৩০, মিরাজ- ১/৩২)
ফলাফল: গাজি গ্রুপ চট্পগ্রাম ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সৌম্য সরকার