বাংলাদেশ দল গতরাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। এছাড়া ঈদের ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশ টাইগার্স বা এইচপির ক্রিকেটাররাও এখনো মিরপুরে আসেননি। সব মিলিয়ে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম যেন খাঁ খাঁ করছিল। তবে এর মাঝেই সকালে একজন ক্রিকেটারকে গেট দিয়ে ঢুকতে দেখা গেল। যার আসলে থাকার কথা ছিল এখন বাংলাদেশ দলের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। তবে ভাগ্যের ফেরে সকাল সকাল ইয়াসির আলী রাব্বিকে ছুটে আসতে হয়েছে বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর কাছে।
ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটা খেলতে পারেননি। তবে তরুণ এই ক্রিকেটার আবার নিজের ফেলেভ রাখা জায়গাটায় ফিরে আসতে চান। তাইতো ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই ঢাকায় চলে এসেছেন। পিঠের ইনজুরি থেকে রেহাই পেতে কাজ করবেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর সাথে।
যেকোন ক্রিকেটারের জন্যই এই সময়টা কঠিন। ইনজুরির কারণে জাতীয় দল থেকে ছিটকে গেলে ফিরে আসার লড়াইটা একাই লড়তে হয়। তবে এই সময়টায় ইয়াসির রাব্বি তাঁর পাশে পাচ্ছেন তাঁর বাবা শওকত আলী চৌধুরী। ছেলের সাথে সেই চিটাগাং থেকে ছুটে এসেছেন সঙ্গ দেয়ার জন্য। এমনকি আজ যখন রাব্বি বিসিবিতে নিজের ইনজুরি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তখনো সাথে ছিলেন এই বাবা।
ছেলের ক্রিকেটার হয়ে উঠার পিছনে এই ভদ্রলোকের অবদানই সবচেয়ে বেশি। ছোটবেলায় ছেলেকে কোলে করে ক্রিকেট মাঠে নিয়ে যেতেন। এখনো ইনজুরিতে পড়া ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। বয়স হয়েছে তবে ছেলের ক্রিকেটের প্রতি এখনো একইরকম আবেগ কাজ করে। ছোট ইয়াসির রাব্বি এখন খেলেন জাতীয় দলের হয়ে। তবে এসব কিছুই শওকত আলীকে ভাবায় না। তিনি শুধু ছেলেকে ক্রিকেটের সাথে রাখতে চান।
ইয়াসির আলি রাব্বি খুব সম্ভবত আগামীকাল থেকে রিহ্যাব করা শুরু করবেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন কিনা সেটাও নিশ্চিত নয় এখনো। তবে রাব্বি যখন নিজেকে ফিরে পাবার লড়াইয়ে ব্যস্ত তখন তাঁর বাবার সাথে কথা হচ্ছিল অনেকক্ষণ ধরেই।
এই বয়সেও ছেলেকে এমন সঙ্গ দেয়ার ব্যাপারে শওকত আলী চৌধুরী বলেন, ‘আসলে বাবার মন তো। ছেলেটার শরীরের কী অবস্থা সেটা নিজ চোখে দেখতে চেয়েছিলাম। সেজন্যই একসাথে আজ ভোরে চিটাগাং থেকে চলে এসেছি। সাথে রাব্বির মাও এসেছেন। আমিও দেবশীষ দা’র সাথে কথা বললাম। উনি তো এখন ভালোই বললেন। তবে জিম্বাবুয়ের সাথে খেলতে পারবে কিনা সেটা এখনো বলা যাচ্ছেনা।’
ওদিকে রাব্বির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সুযোগটা তাঁর সামনে অপেক্ষা করছিল। মুশফিকুর রহিম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ছুটি নেয়ায় তাঁর জায়গায় খেলার কথা ছিল ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে তাঁর ব্যাটিং লাইন আপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কথা ছিল। তবে দুর্ভাগ্য যেন রাব্বির পিছুই ছাড়েনা। পিঠের ব্যাথায় আর কোন ম্যাচই খেল হলো না তাঁর।
ছেলের ক্যারিয়ারের এমন একটা সিরিজ খেলা হলো না ইনজুরির কারণে। এতে খানিকটা কষ্ট হয় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে রাব্বির বাবা বলেন,’ কখনোই মন খারাপ হয় না বাবা। আমার ছেলে যে এতদূর আসতে পারবে সেটাই কে জানতো। আমি সবসময় চেয়েছি রাব্বি ক্রিকেটটা খেলুক। সে পরিশ্রম করছে, একদিন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁকে ফল দিবে। যা হয় ভালোর জন্যই হয়।‘