চিরস্থায়ী অনিয়ম, বির্তক আর সমালোচনার বোঝা সব ছাপিয়ে দুর্দান্ত ফাইনালেই শেষ হল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের( বিপিএল) এগারোতম আসর। হাজার খানেক নিন্দা ছাপিয়ে দারুণ কিছু পারফরমেন্সের দেখা মিলেছে এবারের আসরে।
ধুন্ধুমার ব্যাটিং থেকে শুরু করে দূর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্স, সব কিছুই ছিল এই আসরে। দারুণ সব পারফরম্যান্সের ভীড়ে যারা বিষাদ ছড়িয়েছেন তাদেরই একাদশ নিয়ে এবার হাজির খেলা ৭১।
- মোহাম্মদ হারিস (দুর্বার রাজশাহী)
বিপিএলের অন্যতম বড়নাম ছিলেন মোহাম্মদ হারিস। দুর্বার রাজশাহীর প্রত্যাশার আগুনে ছাই ঢেলে দিয়েছেন এই পাকিস্তানী তরুণ তুর্কী। ১০ ম্যাচে ১৬ গড়ে করেছেন মোটে ১৬৮ রান। করতে পারেননি একটি অর্ধশতকও, সর্বোচ্চ রান ৩২।
- স্টেভেন টেইলর (রংপুর রাইডার্স)
বিপিএলের আগেই রংপুর রাইডার্সকে জিতিয়ে এসেছিলেন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ। সেইজন্যই দল তার উপর ভরশা রেখেছিল অনেক। তবে বারবার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ তিনি। ৭ ম্যাচে ১২ গড়ে রান করেছেন মোটে ৮৪। এরমধ্যে একটি ম্যাচেই রান করেছিলেন ৩৯।
- এলেক্স রস (খুলনা টাইগার্স)
আরেক বড় তারকা ক্রিকেটার। খুলনা টাইগার্সের জয়ের স্বপ্নের বড় সেনানী হতেই তাকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল। তাকে একাদশে জায়গা দিতেই এলিমিনেটরে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ,দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার উইলিয়াম বোসিস্টোকেও। অথচ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি তিনি। ৮ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১০৮ রান, গড় মোটে ১৮।
- আফিফ হোসেন (খুলনা টাইগার্স)
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই খুলনার অন্যতম ভরশার নাম ছিল আফিফ হোসেন। মেহেদী হাসান মিরাজের অন্যতম সেনানী বানানোর পরিকল্পনা ছিল দলের তাকে ঘিরে।
অথচ আরও একবার ব্যর্থ আফিফ। ১৩ ম্যাচে রান করেছেন মোটে ২১৭। চার ছক্কার ডামাডোলের বিপিএলে স্ট্রাইকরেটটাও বড্ড সেকেলে, ১২২.৫৯।
- মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (ঢাকা ক্যাপিটালস)
মোসাদ্দেক হোসেন, ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার। বিপিএল ড্রাফটে দল না পাওয়ায় অনেক হাহাকার ছিল তাকে ঘিরে।
একরকম দর্শকদের প্রচণ্ড চাপেই দল পেয়েছিলেন এই বিপিএলে। অথচ তার পারফরম্যান্স যেন প্রকাশ করল তার প্রতি দলগুলোর অনিচ্ছার যোক্তিকতাকে। ৮ ম্যাচে ব্যাট করে রান করেছেন সব মিলিয়ে ৩৬, গড়টা মোটে ৭.২০।
- আকবর আলী (দুর্বার রাজশাহী)
হোক না অনূর্ধ্ব ১৯, বাংলার একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ী কাপ্তান তো আকবর আলীই। তাকে ঘিরেই তো শত সহস্র আশা দেশের ক্রিকেটের।
তবে সেই ২০২০ সালের পরে নিজেকে আর সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। আরও একবার বড় মঞ্চে ফ্লপ তিনি। ১২ ম্যাচে ২৩.৮৩ গড়ে করেছেন মোটে ১৪৩ রান।
- আরিফুল হক (সিলেট স্ট্রাইকার্স)
ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম তারকা, বর্ষীয়ান আরিফুল হকের উপরে ভরশা রেখেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে এলেমেলো দলের ছন্নছাড়া অধিনায়ক হিসেবেই বিপিএল শেষ করলেন তিনি।
১২ ম্যাচে ১৮ গড়ে রান করেছেন মোটে ১৬৩। ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্টের জায়গা, দলকে পিছিয়ে নিতেই যেন বেশি ভূমিকা ছিল তার। এই ফ্লপ একাদশের অধিনায়কও তাই তিনি।
- নাজমুল ইসলাম অপু (ঢাকা ক্যাপিটালস)
বিপিএলে নাগিন সেলিব্রেশন করেই একসময়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। তবে এই বিপিএলে বল হাতে ছিলেন একদমই সাদামাটা। ৭ ম্যাচে নিয়েছেন মোটে তিন উইকেট, গড় ৬০! ইকোনমি রেটটাও নয় ছু্ঁইছুঁই।
- রিচ টপলি (সিলেট স্ট্রাইকার্স)
সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেস আক্রমনের নেতৃত্বের ভার ছিল তার কাধে। যদিও প্রায় ১০ ইকোনমি রেটে ৭ ম্যাচে পেয়েছেন মোটে চার উইকেট। তার উপর প্রত্যাশার বারুদে জল ঢেলে দিয়েছেন তিনি।
- শফিউল ইসলাম (দুর্বার রাজশাহী)
বয়সটা ৩৬ ছু্ঁইছুঁই, দীর্ঘদিন ধরেই ক্রিকেট থেকে বেশ দূরেই সফিউল ইসলাম। তিনি কেনই বা এই বিপিএল খেললেন এটা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েই যায়।
গুঞ্জন, জল্পনাকল্পনার ডানায় হাওয়া দেয় তার পারফরম্যান্সটাও। ৬ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মোটে চারটা। ইকোনমিরেট ১১.৪১। গড়টা ৪৮.৫০!
- আবু জায়েদ চৌধুরী (ঢাকা ক্যাপিটালস)
ঢাকা ক্যাপিটালসে মুস্তাফিজুর রহমানকে যোগ্য সঙ্গী দেওয়ার কথা ছিল তার। অথচ কাজের কাজটা তো দূর, তার পারফরম্যান্স বরং দলকে আরও চাপে ফেলেছে অনেকেটা।
৬ ম্যাচে ৯ এর উপরে ইকোনমি রেটে উইকেট পেয়েছেন মোটে ৫টা। পরবর্তীতে হারিয়েছেন দলে জায়গাটাও।