ফুটবল নিয়ে বিস্ময়কর সব কসরত করেন, সাঁতার কাটেন – মুগ্ধ করেন আশেপাশের সবাইকে। পুরো দেশ ফুটবল মানব হিসেবে চেনে তাঁকে। আর ফুটবল নিয়ে কারিকুরি করতে করতেই গিনেজ বুকে নাম উঠে গেছে মাসুদ রানার। নিজের ভিটে-মাটি বিক্রি করে কিনেছিলেন একটা মোটর সাইকেল।
সেই বাহনে চড়ে এবার চলে এসেছেন নড়াইলে। উদ্দেশ্য একটাই, নির্বাচনী প্রচারণায় পাশে থাকতে চান মাশরাফি বিন মুর্তজার। নড়াইল-২ আসনে নির্বাচনী ডামাডোলের মাঝেই তিনি মুখোমুখি হন খেলা ৭১-এর; জানান নিজের গিনেজ রেকর্ডের কথা।
মাসুদ বলেন, ‘ফুটবল মাথা রেখে সাঁতার কাটার জন্য ৯০ সেকেন্ড সময় নির্ধারণ করেছিল কর্তৃপক্ষ। যদি বাংলাদেশের মাসুদ রানা আমি না, অন্য দেশের কোন মাসুদ রানা টার্গেটের এক সেকেন্ড আগে রেকর্ড ভাঙ্গতে পারত তাহলে বিশ্বের কাছে তাঁর দেশের মর্যাদা উজ্জ্বল হতো।’
‘আমি ওখানে জীবন দিয়ে চেষ্টা করে ৪৪.৯৫ সেকেন্ড রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছি। লাল-সবুজের পতাকা বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল করেছি।’
নিজের প্রিয় মোটর সাইকেল নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়ান সারা বাংলাদেশে। তিনি বলেন, ‘আমার বাবার ভিটে মাটি বিক্রি করে এটা (মোটর সাইকেল) কিনেছি। ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর, টাঙ্গাইলে গিয়েছি। যেখানে বাংলাদেশের বড় বড় ফুটবল ম্যাচ হয় সেখানে গিয়েছি ৷ চুয়াডাঙ্গায় এক ফাইনালে জুনায়েদ হোসেন পলক ভাই আমার মোটর সাইকেল চালিয়েছিল মাঠে। আমি ফুটবল মাথায় রেখে পিছনে বসে ছিলাম।’
কিন্তু এসব কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যান রানা। তবে আক্ষেপও আছে তাঁর, এখনো ঢাকায় মাথা গোঁজার কোনো জায়গা হয়নি যে। সেই আক্ষেপ থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা থাকার জায়গা চেয়ে আবদার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন আমাকে ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন, আমি ঢাকায় গিয়ে কোথাও থাকতে পারি না। ক্রীড়াঙ্গন থেকে যদি আমি সাপোর্ট পাই তাহলে হয়তো আমি দেশের জন্য সামনে আরো অনেক কিছু করতে পারব।’
মাশরাফির সাথে দেখাও হয়েছে এই ফুটবল পাগলের। তাঁর কাছেও দোয়া চেয়েছেন মাশরাফি; বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘উনি যে ভাল মনের মানুষ, ওনাকে বিপদে-আপদে ডাকলে অন্ধকার রাত্রেও মোটর সাইকেল বের করে চলে যায়। যেখানে খেলা হয় সেখানে ছেলেপেলেদের সাথে খেলতে নেমে যান। এই যে উদার মনের মানুষ আমরা যেন না হারাই।’