৩৬ ইনিংস, পাঁচশোরও কম রান, ২০ গড়। এসব জিনিস অনেক সময় ইতিহাস ভুলে যায়। যদি আপনি বলার মতো একটা ম্যাচ খেলতে পারেন। স্রেফ একটা। কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের কথা মনে করেন, তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব বেশি দূরে যায়নি, কিন্তু বিশ্বকাপের ফাইনালে ওমন চারটা ছয়! অবিশ্বাস্য।
আমার কোনও ক্রিকেট সংক্রান্ত রেফারেন্স এলেই তিনজন ক্রিকেটারের কথা মনে পড়ে, অ্যান্ডি বিকেল, নিক নাইট ও নাথান অ্যাস্টল! তাঁদেরও ক্রিকেট এমন বিশেষ এক কিংবা দুই দিনের জন্য মনে রাখবে, বা একটা টুর্নামেন্ট। যেমন অ্যান্ডি বিকেল।
শচীন ওমন বিশ্বসেরা ব্যাটিং না করলে হয়তো অ্যান্ডি বিকেল সেই টুর্নামেন্টের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের দৌড়ে কালোঘোড়া হতেন। কী করেননি বিকেল সেই টুর্নামেন্টে, বোলিংয়ে সাত উইকেট ব্যাটিংয়ে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে ফিফটি করে বাঁচানো এবং ফাইনালে ফেরারির গতিতে ছুঁটতে থাকা ব্যাটারকে আউট করা।
অ্যান্ডি বিকেল ২০০৩ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৮৪/৭ উইকেট থেকে বেভানের সাথে জুটি গড়ে ২০৮ এ নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই জুটিতে ব্যাটার বেভানের রান ছিল ৫৬, তুলনামূলক কম ব্যাটার বিকেলের রান, ৬৪।
এরপর নিউজিল্যান্ড ১১২ রানে অলআউট সেখানেও বিকেলের ৫ ওভারে ১৫ রান ১ উইকেট। যদিও এই দিন অতিমানবীয় ৬ উইকেটের কারণে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন শেন বন্ড- গিলক্রিস্ট, হেইডেন, পন্টিং, ডেমিয়েন মার্টিনের টাপ অর্ডার একাই ছেঁটে ফেলেছিলেন বন্ড।
একই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা বিকেলের জন্য ছিল আরও স্পেশাল। ইংল্যান্ড ২০৪ রানে অলরাউট, ১০ জনের ৭ জনকেই আউট করেছিলেন অ্যান্ডি বিকেল।
২০ রানে ৭ উইকেট, বোলিং ফিগারটা ছিল এমন। এখানে ম্যাচ শেষ হয়ে যায়নি, ইংল্যান্ডও করেছিল ফাইট ব্যাক।
১৩৫ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৮ উইকেট নেই। সেখান থেকে বিকেল ও বেভান আবারও! বেভানের ৭৪, বিকেলের ৩৪। ২ বল হাতে রেখে সেই ম্যাচ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া, এই সংখ্যাটা বিকেলের ৩ চার ও ১ ছক্কার ইনিংসের বিশেষত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। এই ম্যাচে বেভান এক পাশ ধরে রেখে ৫৮ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছিলেন, বিকেল ছিলেন স্ট্রাইকিং রোলে।
এই বিশ্বকাপের ফাইনালে রাহুল দ্রাবিড়কে বোল্ড করাও ছিল স্পেশাল। বিকেলদের মনে হয় না খুব বেশি মানুষ মনে রাখে, এই মনে না রাখায় খুব বেশি ফারাক পড়েও না।