নিউজিল্যান্ডের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে গৌতম গম্ভীরের ভারত। ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার দুয়ারে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। এই সিরিজই হয়ত প্রধান কোচ গম্ভীরের জন্য নতুন দিগন্ত খুলবে অথবা শেষের পথ ধরতে বাধ্য করবে।
‘হানিমুন পিরিয়ড’ বেশিদিন স্থায়ী হল না গম্ভীরের। তাকে আনা হয়েছিল তিন ফরম্যাটেই ইন্ডিয়ার আধিপত্য বজায় রাখতে। কিন্তু ইতিমধ্যেই ২৭ বছর পর সাদা বলের ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হেরে বসেছে ভারত।
আগুনের উপরে ঘি হিসাবে আছে অপেক্ষাকৃত দূর্বল নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে টেস্টে হোয়াইট ওয়াশ। ৯১ বছরের ইতিহাসে ঘরের মাঠে এটিই সবচেয়ে বাজে পরাজয় ভারতের। তাই চিন্তার ভাজ পড়েছে বোর্ড অব কনট্রোর ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সদর দপ্তরেও।
হঠাৎ এই ছন্দপতনের কারণ খুঁজে পাচ্ছে না অনেকেই। সাম্রাজ্যের পতনের আশংকায়ও আছেন অনেকে। তবে অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজাদের বেলাটা ফুরিয়ে এসেছে সেটাও রয়েছে সকলের মস্তিষ্কে। নতুনদের তৈরি করতেও হয়ত কিছুটা সময় লাগছে গম্ভীরের।
গম্ভীর বলেন, ‘ট্রানজিশন হবার হলে, এমনিতেই হবে। কিন্ত ড্রেসিং রুমে আমি ভালো করতে মরিয়া হয়ে থাকা কিছু খেলোয়াড় দেখেছি।’ এছাড়া গম্ভীর ওয়াশিংটন সুন্দরের উপর আস্থা রেখে কিস্তিমাত করেছেন। এবার তার বাজি নিতিশ রেড্ডি ও হার্শিত রানার উপর।
কোচ হিসেবে ৫ টেস্টে ২ জয়ের বিপরীতে ৩ হার। ওয়ানডেতে ৩ ম্যাচের একটিতেও নেই জয়। লংগার ভার্সনটা যেন কিছুতেই বাগে আসছে না তার। ট্যাক্টিকাল জায়গাটায় মার খেয়ে যাচ্ছেন তিনি বারবার। স্পিনের বিপক্ষে ধুকছে তার দলের তারকা ব্যাটাররা।
গম্ভীর নিজেই ছিলেন স্পিন খেলার মাস্টার। কত নামি-দামি স্পিনার কে কচুকাটা করেছেন তা রেকর্ড বুকে চোখ বোলালেই হয়ত পাওয়া যাবে। তবে তার শিষ্যরা কেন পারছে না স্পিন খেলতে!
এমন প্রশ্নের জবাবে গম্ভীর বলেন, ‘একজন কোচ ও খেলোয়াড়ের মধ্যে অনেক তফাৎ থাকে। কোচ হিসাবে আপনি সামান্য কিছুই কন্ট্রোল করতে পারেন। চাইলেই ব্যাট হাতে নেমে যেতে পারেন না।’
যদিও দর্শক-ভক্ত মহলে চলছে বহু গুঞ্জন। গম্ভীরের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বেশ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে উঠতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের বিরুদ্ধে এই সিরিজে ৪টা টেস্ট জিততে হবে ভারতকে। যা চাট্টিখানি কথা না।
এত চাপ নিয়ে তাই আজীবন লড়াই করে ফিনিক্স পাখির মত ফিরে আসা গম্ভীর কি করবে তাই এখন সবার আগ্রহের বিষয়। পারবে কি সে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে, নাকি গম্ভীর মুখটা নিয়েই নিরবে বিদায় বলতে হবে?