ভারত পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচে লাখ লাখ মানুষের আবেগ জড়িত থাকে। এই ম্যাচে একটা ভাল পারফরম্যান্স যে কাউকে জাতীয় নায়কে পরিণত করতে পারে। আবার উল্টো হলে অর্থাৎ দল হারলে কিংবা বাজে পারফরম্যান্স করলে হতে হয় ভিলেন। কখনও কখনও ভেসে আসে মৃত্যুর হুমকি।
কিন্তু ইন্দো-পাক দ্বৈরথ নিয়ে অদ্ভুত পাগলামি সময়ের সাথে সাথে কমে এসেছে। বিশ শতকের শেষ দিক থেকে একুশ শতাব্দীর শুরুর দশক পর্যন্ত এই ম্যাচ নিয়ে যতটা উত্তেজনার স্ফূলিঙ্গ ছড়াতো সেটাও কমে এসেছে। আর এটির পেছনে প্রধান কারন নি:সন্দেহে ম্যাচসংখ্যা কমে আসা।
এখন আর ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে চলতি বছরে একটু বেশিই দেখা হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এবং পাকিস্তানের। এশিয়া কাপে একে অপরের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলার পর আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দুই দল। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাঠে গড়াবে ইন্দো-পাক দ্বৈরথ।
মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ নিয়ে ভারতকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ। বিগ ব্যাশ লিগে খেলার সুবাদে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড বেশ পরিচিত তাঁর কাছে। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপ ধ্বসিয়ে দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন তিনি।
পাকিস্তানের এই তারকা বলেন, ‘যদি আমি সেরাটা দিতে পারি তাহলে তাঁরা সহজে আমাকে খেলতে পারবে না। আমি খুবই খুশি কারণ খেলাটা হবে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এটা আমার জন্য প্রায় হোম ভেন্যু কেননা আমি মেলবোর্ন স্টারসের হয়ে খেলেছি, মাঠের পরিবেশ আমার পরিচিত। ভারতের বিপক্ষে কিভাবে বোলিং করবো সেই পরিকল্পনা ইতোমধ্যে শুরু করেছি।’
এর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বাবর আজমের দল। এবারের এশিয়া কাপের দুই ম্যাচেই লড়াই হয়েছে সমানে-সমানে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারত জিতলেও সুপার ফোর রাউন্ডে জয়ী দলের নাম পাকিস্তান।
এই তিন ম্যাচেই হারিস রউফ ছিলেন একাদশে। নিজের গতি আর বাউন্সারে ভালভাবেই পরীক্ষা নিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটারদের। মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে উইকেট শূন্য থাকলেও, পরের ম্যাচে আউট করেছেন রোহিত শর্মাকে। তবে ইকোনমিক্যাল বোলিং করে রান আটকানোর কাজ ভালভাবেই করেছেন তিনি।
সর্বশেষ ম্যাচগুলো নিয়ে ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জানান যে, ‘ভারত-পাকিস্তান লড়াই সব সময়ই কঠিন চাপের খেলা। গত বিশ্বকাপের ম্যাচেও আমার তেমনটা অনুভব হয়েছে, তবে এশিয়া কাপের ম্যাচে আমি যথাসম্ভব চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। কারণ আমি বুঝতে পেরেছি আমাকে আমার সেরাটা দিতে হবে।’
চলতি ইংল্যান্ড সিরিজে উড়ন্ত ফর্মে রয়েছেন হারিস রউফ। পাঁচ ম্যাচে ৮ উইকেট তুলে নিয়ে সেরা বোলারের তালিকায় শীর্ষে আছেন তিনি। এছাড়া গত কয়েক বছরের হিসেবে ডেথ ওভারে সবচেয়ে বেশি ডট বল করার রেকর্ডও তাঁর দখলে। এমন ফর্ম বিশ্ব মঞ্চে বয়ে নিতে পারলে ভারত সহ প্রতিপক্ষের দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে উঠবেন এই পেসার।
এশিয়া কাপে ভরাডুবির পর ভারতের জন্য প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হতে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আর সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় বাধা পাকিস্তান এবং পাক পেসাররা। তাই তাদের বিপক্ষে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে রোহিত, কোহলিদের। বিশেষ করে হারিস রউফ যেভাবে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা জানান দিয়েছেন, তাঁকে সমীহ না করলে ভুলই হবে টিম ইন্ডিয়ার।