ক্লাসেনের এক ইনিংসেই ওলট পালট রেকর্ডবই!

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস তখন অর্ধেক পথ গড়িয়েছে। রান রেট ৬ এর নিচে ; ম্যাচ পরিস্থিতিতে যা চলনসই বটে। কিন্ত সেঞ্চুরিয়নে পরে যে একটা ঝড় বইতে চলেছে, তার পূর্বাভাস যেন ঠাওর করে উঠতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। 

দৃশ্যপটে হাজির হলেন হেনরিখ ক্লাসেন। ক্রিজে নেমেই অজি বোলারদের উপর রীতিমত চালালেন ধ্বংসলীলা। ১৩ চার আর ১৩ ছক্কায় খেললেন ৮৩ বলে ১৭৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। আর তাতেই প্রোটিয়াদের ইনিংস শেষ হয় ৪১৬ রানের পাহাড়সম সংগ্রহে। 

এ দিকে এক ইনিংস দিয়েই রেকর্ডের বই ওলট পালট করে দিয়েছেন ক্লাসেন। আর  ২ রান করলেই ভাঙতে পারতেন ৪০ বছরের পুরনো এক রেকর্ড। ১৯৮৩ সালে ৬ নম্বরে নেমে ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কপিল দেব। যেটি ছিল ৫ বা তার পরে নেমে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচে নেমে সেঞ্চুরিয়নে সেই রেকর্ডই ভাঙার পথে ছিলেন ক্লাসেন। তবে আটকে যান ১৭৪-এ। তাই এ রেকর্ড তালিকায় দুইয়ে থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে প্রোটিয়া এ ব্যাটারকে। 

কিন্তু তাতে কী! ক্লাসেন উঠে এসেছেন আরো বেশ কয়েকটা রেকর্ডের চূড়ায়। ২৫ ওভার বা এর পরে ব্যাটিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটার এখন ক্লাসেন। আর এর আগে দুই শতাধিক স্ট্রাইক রেটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড ছিল এ বি ডি ভিলিয়ার্সের।

২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৬ বলে ১৬২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।  ৮ বছর বাদে ভিলিয়ার্সের সেই রেকর্ডই এবার ভেঙে গেল ক্লাসেনের ৮৩ বলে ১৭৪ রানের ইনিংসে। 

এখানেই শেষ নয়। জুটিতেও নতুন এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন ক্লাসেন। পঞ্চম উইকেটে মিলারকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৯৪ বলে ২২২ রানের জুটি গড়েন তিনি। যা পৌঁছে গিয়েছে ওয়ানডেতে দ্রুততম ২০০ রানের জুটির নতুন রেকর্ডে। 

ক্লাসেনের এমন রেকর্ডময় দিনে বিব্রতকর রেকর্ডে আবার নাম জড়িয়ে গিয়েছে অজি স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়েছিলেন মাইকেল লুইস। ওয়ানডেডে এক ম্যাচে খরুচে বোলারের রেকর্ডে এতদিন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান এ স্পিনার ছিলেন নি:সঙ্গ। 

তবে ১৭ বছর পর তাঁর সেই নিঃসঙ্গতা কাটালেন তাঁরই স্বদেশী অ্যাডাম জাম্পা। সেঞ্চুরিয়নে এ দিন লুইসের মতোই ১১৩ রান দেন জাম্পা।

হেনরিখ ক্লাসেনের রেকর্ডগাঁথা দিনে জয়টাও গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার শিবিরে। বড় রান তাড়া করতে নেমে ৩৪.৫ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া  অলআউট হয় ২৫২ রানে। ফলত, ৫ ম্যাচের সিরিজে ১৬৪ রানের এ জয় নিয়ে সিরিজে সমতায় আসলো প্রোটিয়ারা। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link