নাসিম যেভাবে খুলনা থেকে কুমিল্লার ডেরায়

‘প্লেয়ার স্ন্যাচিং’- ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সাথে পরিচিত প্রায় সকলেই এই বিষয়ে বেশ অবগত। তবে এবার ক্রিকেট ময়দানে তেমন এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সে ঘটনাও নিশ্চয়ই সবারই জানা। পাকিস্তানের তরুণ খেলোয়াড় নাসিম শাহ-কে ঘিরেই সেই উদাহরণের মঞ্চায়ন হয়েছে বিপিএলের নবম আসরে।

বিপিএল শুরুর আগে খুলনা টাইগার্স ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল, তরুণ এই পেস সেনসেশন খেলবেন টাইগার্সদের হয়ে। তিনি নবম আসর খেলতে এসেছেন ঢাকায়। তবে তিনি খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলছেন না এদফা। এবার তাঁর শিবির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই ঘটনা খানিকটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে।

তবে নাসিমের সাথে আনুষ্ঠানিক কোন চুক্তি হয়নি খুলনা টাইগার্সের। আর সে সুযোগটিই লুফে নিয়েছে কুমিল্লা। বর্তমান সময়ে দারুণ আলোচনায় রয়েছেন নাসিম শাহ। পাকিস্তান বরাবরই পেসারদের আঁতুড়ঘর। প্রতিটা সময়ই সেখান থেকে বিশ্বমানের পেসাররা উঠে এসেছে। ক্রিকেট দুনিয়া আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন নাসিম শাহ।

কিশোর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন। সেই তিনি এখন সব ফরম্যাটেই পাকিস্তানের আস্থাভাজনদের একজন। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তিনি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন গোটা বিশ্ব। তিনি বেশ প্রতিভাবানও বটেই। বিশ বছর বয়সে পা দিতে চলা নাসিম শাহ গতি ঝড়ে প্রতিপক্ষদের মনে কাঁপন ধরাতেও পটু। অভিষেক টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের সমীহ আদায় করেছিলেন। এরপর ক্রমাগত তিনি পরিণত হয়েছেন।

এমন একজন বোলারকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারার বিষয়টা নিশ্চিতভাবেই কুমিল্লার জন্য এক ইতিবাচক সংযোজন। টানা তিন জয়ে, তাদের অবস্থান টেবিলের তিন নম্বরের। গত বারের চ্যাম্পিয়নরা প্রথম দিকে খানিকটা বাজে শুরুই করেছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে তাঁরা নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। মোহাম্মদ রিজওয়ানসহ বেশকিছু পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সংযোজন দারুণভাবে সহয়তা করছে দলটিকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার নাসিম শাহ যুক্ত হয়েছেন দলটির সাথে।

ঢাকায় তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে তাই অনুশীলনে ঘাম ঝড়িয়েছেন নাসিম শাহ। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটের উইকেটের আচরণটা খানিক আন্দাজ করবার প্রচেষ্টা করেছেন তিনি। যদিও বোলিং করেছেন একাডেমি মাঠে। তবে এদিন স্পট বোলিংয়ের উপর জোর দিতে দেখা গেছে কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিনকে। সেই অনুশীলনের বাইরে ছিলেন না নাসিম শাহও। তিনিও নিজের লাইন আর লেন্থ ঠিক রাখবার প্রস্তুতি সেরে নিয়েছেন।

এখন অপেক্ষা কেবল মাঠে আলো ছড়াবার। যদিও ইতোমধ্যেই তিনি রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে নিশ্চিতভাবেই নাসিম শাহ চাইবেন সকল সমালোচনাকে পেছনে ফেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয়ে অবদান রাখতে। দারুণ ছন্দে থাকা কুমিল্লা শিবিরে নাসিম শাহের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতভাবেই বাড়তি সাহস জোগাচ্ছে।

কেননা বয়সে তরুণ হলেও, অভিজ্ঞতায় কমতি নেই নাসিম শাহের। পাকিস্তানের মত দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। পাশাপাশি দেশ বিদেশের ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। সেই সাথে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলেছেন তিনি। এসব কিছু কুমিল্লার জন্য বেশ ইতিবাচক বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে, তেমনটাই প্রত্যাশা দল সংশ্লিষ্ট সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link