বাবা বেকার, সংসারে অভাব তাই লেগেই আছে। লটারি জেতা ছাড়া এই অভাব থেকে পালানোর পথ ছিল না শুভাম দুবের। অপ্রত্যাশিত সেই ঘটনাই ঘটেছে শেষমেশ, লটারি জিতেছেন তিনি। না গড়পড়তা কোন র্যাফেল ড্র নয়, বরং আইপিএলের নিলামে ৫.৮০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক পেয়ে বসেছেন এই ক্রিকেটার।
কিন্তু কয়েক মিনিটে কোটিপতি বনে যাওয়া বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি নিজেই; স্রেফ ভাগ্য যাচাই করতে নিলামের ফর্ম জমা দিয়েছিলেন, আর সেটাই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছে চরম দারিদ্র্যের হাত থেকে। বিস্ময় লুকাতে না পেরে এই ব্যাটার বলেন, ‘দল পাওয়ার আশা ছিল, কিন্তু এত দাম হবে ভাবতেই পারিনি।’
পরিবারের দুঃসময়ে এমন প্রাপ্তিতে তিনি বলেন, ‘আমার বাবার চাকরি নেই। সেজন্য আমদের খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নতুন গ্লাভস কেনার জন্যও আমার কাছে টাকা ছিল না, তখন সুজিত জসওয়াল নামের একজন কোচ আমাকে সাহায্য করেছিলেন। আজ সব কিছু মনে আসলো যখন দেখলাম রাজস্থান আমাকে কিনে নিচ্ছে।’
মাত্র দুই মৌসুম আগে রাজ্য দলে সুযোগ পেয়েছিলেন দুবে। অভিষেক মৌসুমে বলার মত কিছু করতে পারেননি তিনি, কিন্তু সর্বশেষ আসরে বদলে যায় দৃশ্যপট। মুশতাক আলী ট্রফিতে ২০ বলে ৫৮ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে দলকে জেতানোর পরই লাইমলাইটে চলে আসেন এই ডানহাতি। সবমিলিয়ে সেবার ১৯০ স্ট্রাইক রেটে ২২১ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
তাই তো এই হার্ড হিটারকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত রাজস্থান রয়্যালস। দলটির ডিরেক্টর অব হাই পারফরম্যান্স জুবিন বরুচা বলেন, ‘সে অবিশ্বাস্য দৃঢ়তা দেখিয়েছে। তাঁর পথচলা জসওয়ালের (যশস্বী) মতোই বন্ধুর ছিল। এই বছর নিজের ব্যাট কেনার সামর্থ্যও ছিল না; এত প্রতিকূলতার মাঝেও সে নিজেকে প্রতিনিয়ত শাণিত করেছে, এক ধাপ এক ধাপ করে এতদূর এসেছে।’
আলোচিত এই উদীয়মান তারকার কোচ প্রীতম গান্ধে শিষ্যের সামর্থ্য নিয়ে বলেন, ‘সে মুহূর্তের মাঝে খেলার গতিপথ পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে, তাঁর পাওয়ার আছে, যা লোয়ার মিডল অর্ডারে তাঁকে বিধ্বংসী করে তুলেছে।’
আইপিএলের মত মঞ্চে সহসা হয়তো সুযোগ পাবেন না শুভাম দুবে। তবে যখনি সুযোগ পাবেন তখন দুই হাত ভরে সেটা লুফে নিতে চাইবেন তিনি, ভরসার প্রতিদান দিতে চাইবেন নিশ্চয়ই।