পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা ম্যাচে কখনো এগিয়ে ছিল ভারত, কখনো আবার নিয়ন্ত্রণ ছিল শ্রীলঙ্কার হাতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত বোলিং স্বর্গের দখলটা নিজেদেরই করে নিয়েছে ভারত। ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে দ্বিতীয় জয় পাওয়া হলো না লঙ্কানদের। শক্তিশালী ভারতকে অল্প রানে অলআউট করেও হারতে হয়েছে ৪১ রানে।
আগে ব্যাট করত নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা, শুভমান গিল পাওয়ার প্লের দশ ওভারে তোলেন আশি রান। কিন্তু এরপরই শ্রীলঙ্কার বাঁ-হাতি স্পিনের সামনে খাবি খেতে শুরু করে দলটির ব্যাটাররা। একে একে গিল, কোহলি, রোহিতরা ফিরে যান দুনিথ ওয়েলেলাগের বলে। সেই প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে নেন রাহুল এবং কিশান।
তবে সেই জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি; দলীয় ১৫৪ রানের মাথায় আউট হন লোকেশ রাহুল। এরপরই ধ্বস নামে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপে। অ্যাক্সার প্যাটেল ছাড়া লোয়ার মিডল অর্ডারে আর কেউই পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে। আসালঙ্কা এবং ওয়েলেলাগে এই দুজনে মিলেই তুলে নিয়েছিলেন নয়টি উইকেট; বাকি একটি গিয়েছে থিকসানার ঝুলিতে। শেষপর্যন্ত দশ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রানের সংগ্রহ পায় কোহলিরা।
জবাবে কখনোই পরিকল্পনামত ব্যাটিং করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে ভারতকে উদযাপনের উপলক্ষ এনে দেন জাসপ্রিত বুমরাহকে। সপ্তম ও অষ্টম ওভারে যথাক্রমে কুশল মেন্ডিস এবং দিমুথ করুণারত্নেকে হারিয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় স্বাগতিকেরা।
ইনফর্ম সামারাবিক্রমা এরপর চেষ্টা করেছেন দলকে টেনে তোলার। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি; ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় কুলদীপ যাদবের অহেতুক আক্রমণ করতে গিয়ে উইকেট খুইয়ে বসেন তিনি। আসালঙ্কা, শানাকারাও পারেননি দলকে উত্তরণের পথ দেখাতে।
বল হাতে নায়ক বনে যাওয়া ওয়েলেলাগে অবশ্য ব্যাট হাতেও ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে চেয়েছেন। ডি সিলভার সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন পঞ্চাশোর্ধ জুটি, তবে ডি সিলভা আউট হওয়ায় পুনরায় পরাজয়ের শঙ্কা জেগে উঠেছিল সমর্থকদের মনে। আর সেটাই সত্যি হলো শেষপর্যন্ত, পাঁচ বলের ব্যবধানে শেষ তিন উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা থেমে যায় ১৭২ রানেই।
আক্ষেপ জাগানিয়া এই হারেও অবশ্য আলাদা করে মনে রাখতে হবে দুনিথ ওয়েলেলাগেকে। বল হাতে পাঁচ উইকেট শিকারের পর ব্যাটিংয়েও শ্রীলঙ্কার আশার প্রদীপ হয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে পারেননি দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে। তবে এমন লড়াই ওয়েলেলাগের ভবিষ্যত ক্যারিয়ারকে নিশ্চিতভাবেই অনুপ্রেরণা জোগাবে।