পাকিস্তানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দশ উইকেটের হার নিয়ে ব্যাকফুটেই ছিলো ভারত। সেই ক্ষত শুকানোর জন্য সময়টাও পেয়েছিলো বেশ! সাত দিনের বিরতির পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটা নিউজিল্যান্ডের সাথে। যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আইসিসির ইভেন্টে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার জয়ের দেখা পেয়েছে ভারত। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্ল্যাকক্যাপসের কখনো হারাতে পারেনি ভারত।
সেমির দৌড়ে টিকে থাকলে হলে এই ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনাল! আর সেই দৌড়ে জিতে গেলো কিউইরা। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে আট উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে সেমির দৌড়ে অনেকটাই ছিটকে গেছে বিরাট কোহলির দল।
সর্বশেষ বড় কয়েকটা আইসিসি ইভেন্টে ভারতের কপাল পুড়েছে এই নিউজিল্যান্ডের সামনে। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তারা ইংল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারে। সেটা ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এরপর চলতি বছরে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও কেন উইলিয়ামসনের দলের কাছে হারে বিরাট কোহলির দল। সেটা বেশ বাজে ভাবে। এরপর এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের হার। অথচ, তিনটা ম্যাচই ফেবারিট হয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত।
ফেবারিট হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও টানা দুই ম্যাচে ভারতের ভরাডুবিতে বিস্মিত হয়েছে ক্রিকেট ভক্তকূল থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররাও। কেউই বা দুষছেন অধিনায়ককে, কেউ টিম কম্বিনেশন, কেউ বা আবার দোষ দিচ্ছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল)।
সব মিলিয়ে মাঠের খেলার হতাশাজনক অবস্থানেই আছে ভারত। টানা দুই ম্যাচেই ব্যাটারদের অসহায় আত্মসমর্পণ আর বোলারদের নাকানিচুবানি খাওয়ার দৃশ্য যেন আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের। ভারতের এমন পারফরম্যান্স নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাবেক ক্রিকেটাররাও।
সাবেক ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘খুব হতাশাজনক পারফরম্যান্স ছিলো ভারতের। নিউজিল্যান্ড অসাধারণ খেলেছে। ভারতীয় খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষাও ঠিক ছিলো না, বাজে শট আর নিউজিল্যান্ডের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে দিয়েছে আমরা পরের পর্বে যেতে পারছিনা। এটা অবশ্যই ভারতকে আঘাত কবে এবং সময় এসেছে সিরিয়াস হবার।’
অপরদিকে, ম্যাচ হারলেও সমর্থকদের দলকে সমর্থন করতে বললেন সাবেক ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমাদের প্লেয়ারদের উপর নেতিবাচক মনোভাব দেখাবেন না। হ্যাঁ, আমরা তাঁদের কাছ থেকে অবশ্যই আরো ভালো ক্রিকেট আশা করেছিলাম। এমন রেজাল্টের পর সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে প্লেয়ারদেরই। নিউজিল্যান্ড অসাধারণ খেলেই ম্যাচ জিতেছে। তাঁরা সব বিভাগেই বেশ দুর্দান্ত ছিল।’
দুবাইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বোল্ট, ইশ সোধিদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতীয় ব্যাটাররা। মাত্র ১১০ রানের পুঁজি সংগ্রহ করে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের সামনে। আর ড্যারেল মিচেল, উইলিয়ামসনদের ব্যাটে সেই মামুলি লক্ষ্যমাত্রা সহজেই টপকে যায় ব্ল্যাকক্যাপরা।
ভারতের সামনে সেমিতে যাওয়ার পথটা এখন বেশ কঠিন। বাকি তিন ম্যাচে জয় পেলেও তাকিয়ে থাকতে হবে আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের দিকে। সমীকরণের মারপ্যাঁচে কঠিন অবস্থানেই আছে বিরাট কোহলির দল। টুর্নামেন্টে ফেবারিট হিসেবে আসা ভারতের সেমি যাওয়াটা যেন এখন এভারেস্ট পাড়ি দেবার মতোই কঠিন আর অনিশ্চিত।