বিশ্বকাপের বাকি আর মাস তিনেক। ফিক্সার ঘোষণা নিয়ে নানান টালবাহানা হলেও প্রস্তুতি থেমে নেই ভারতের। এক দশকের শিরোপা খড়া ঘোচাতে বেশ কোমড় বেঁধেই নামার কথা ২০১১ এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। তবে গত আটটি আইসিসি টুর্নামেন্টে মোটাদাগে ব্যর্থ ভারত এবার ঘরের মাঠে কতটা শক্তিশালী হয়ে বিশ্বকাপে নামবে সেটা একটা বড় প্রশ্ন খোদ ভারতীয়দের মনেই।
বিশ্বকাপের ১০০ দিন বাকি থাকতে আর মাত্র দুটি সিরিজই পাবে ভারত। সামনের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজের পর আগস্টে এশিয়া কাপ খেলবে ভারত। তাই বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করতে আর দুটো ধাপই বাকি আছে টিম ইন্ডিয়ার।
২০১১ সালে সহ আয়োজক হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিলো ভারত। তাই ২০১১ এর দলের সাথে ভারতের এখনকার দলের শক্তিমত্তার পার্থক্য কতটা সেটা ভাবাও গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্য। ভারতের সাবেক কোচ রবী শাস্ত্রী মনে করেন ওপেনিং জুটি সহ কিছু কিছু জিনিস নিয়ে এখনই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে ভারতকে।
এছাড়াও ভারতের বর্তমান দলটায় ২০১১ বিশ্বকাপের তুলনায় বেশ কিছু জিনিসের অভাবও দেখেন শাস্ত্রী। শাস্ত্রী মনে করেন, ব্যাটিং লাইনআপের ভারসাম্যের জন্য পর্যাপ্ত বাঁহাতি ব্যাটার নেই ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে। ভারতের সাবেক এই কোচ মনে করেন সেরা ছয় ব্যাটারের মধ্যে অন্তত দুইজন বাঁহাতি ব্যাটার দরকার ভারতের যেমনটা ২০১১ বিশ্বকাপ দলে যুবরাজ, গম্ভীর ও রায়নার মত ব্যাটাররা ছিলেন।
ভারতের একটি গণমাধ্যমকে শাস্ত্রী বলেন, ‘এটা ভারতের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হবে। আপনাকে সঠিক ভারসাম্য খুঁজে পেতে হবে। একজন বাঁহাতি ব্যাটারই কি টপ অর্ডারে পার্থক্য গড়ে দেবে? সেটা ওপেনিংই হতে হবে এমনটা নয়, তিন-চার নম্বরেও হতে পারে। সবধরণের বিকল্প গুলোই ভেবে দেখতে হবে। আদর্শ পরিস্থিতিতে, আমি চাইব ছয় নম্বর পর্যন্ত দু’জন বাঁহাতি ব্যাটার থাকবে।’
শাস্ত্রী মনে করেন যুগে যুগে বিশ্বকাপে সফল হওয়া দল গুলোতে বড় অবদান রেখেছেন বাঁহাতি ব্যাটাররা। উদাহরণ টানেন প্রতিটি বিশ্বকাপের বাঁহাতি ব্যাটারদের।
শাস্ত্রী বলেন, ‘যখনই কোনো দল ভালো করেছে, বাঁহাতি ব্যাটাররা অবদান রেখেছে। ১৯৭৪ সালে কালিচরণ, ১৯৭৯ সালে ফ্রেড্রিক্স, ক্লাইভ লয়েড। ১৯৮৩ সালের দলটাই একমাত্র উদাহরণ যেখানে কোনো বাঁহাতি ব্যাটার ছিলো না। ১৯৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়ারও যথেষ্ট বাঁহাতি ব্যাটার ছিলো। তাদের অ্যালান বর্ডার সহ আরো দুই-তিনজন ব্যাটার ছিলো। ১৯৯৬ সালের শ্রীলঙ্কা দলটাও এই তত্ত্ব প্রমাণ করেছে জয়সুরিয়া ও রানাতুঙ্গাকে দিয়ে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার গিলক্রিস্ট ও হেইডেন ছিলো। এই ভারসাম্যটা দলে আনাটা জরুরি।’
আপাতত ভারতীয় দল পুরোটাই ডানহাতি নির্ভর। ওপেনিংয়ে রোহিত আর শুভমান গিল এর পর তিন নম্বরে খেলেন বিরাট।। মিডল অর্ডারের জন্য দলে ফেরানো হয়েছে আরেক ডানহাতি সানজু স্যামসনকে। তাই ভারতীয় দলে বাঁহাতি ব্যাটারদের সেই জায়গাটা আছে কিনা সেটাও প্রশ্ন। তবে শাস্ত্রী মনে করেন ভারতের হাতে যথেষ্ঠ বিকল্প আছে।
তিনি বলেন, ‘আপনার হাতে ইশান কিষান আছে। উইকেটকিপিং বিভাগে আপনার সানজু স্যামসন আছে। তবে বাঁহাতির কথা চিন্তা করলে জয়সওয়াল, তিলক ভার্মারা আছে। ভারতের হাতে অনেক বাঁহাতি প্রতিভাই আছে যারা যেকোনো সিনিয়র খেলোয়াড়ের বিকল্প হতে পারে।’