ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তো প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছিলেন আগেই; ফর্ম হারিয়ে নিজেকেই হারিয়ে খুঁজতে শুরু করেছিলেন। তবু এবারের ইউরোতে আরো একবার প্রদীপ শিখার মত দপ করে জ্বলে উঠতে চাইলেন তিনি; চাইলেন আরো একবার পুরো জাতিকে উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিতে। কিন্তু সেটা আর হলো কই, ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়লো তাঁর পর্তুগাল।
টাইব্রেকারে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল, কেবল ছিল না ডিয়াগো কস্তার সেই অতিমানবীয় পারফরম্যান্স। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক সেভ করে দলকে রক্ষা করলেও এই ম্যাচে একটা বলও ফেরাতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে জোয়াও ফেলিক্সের শট বারে লেগে ফিরে আসায় বৃথা গিয়েছে বাকি সব প্রচেষ্টা। ৫-৩ ব্যবধানে হেরে বাড়ি ফিরেছে পেপে, দিয়াজরা।
রোনালদো নিজেও অবশ্য নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। পেনাল্টি শুটআউটে নিজের কাজটা করলেও পুরো ম্যাচ জুড়ে প্রত্যাশিত রূপ দেখাতে পারেননি। গোলের একটা ভাল সুযোগও পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি।
ফ্রান্স বনাম পর্তুগাল দুই হেভিওয়েট দলের লড়াই বাড়তি রোমাঞ্চ সৃষ্টি করবে এমনটাই ধারণা ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টো; আক্রমণাত্মক মেজাজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিবর্তে দুই দলই বেছে নিয়েছিল সাবধানী পথ। রয়ে সয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল উভয়েরই।
প্রথমার্ধে তাই বলার মত পরীক্ষা দিতে হয় গোলরক্ষকদের, যদিও বিরতির বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। ৬২ আর ৬৪ মিনিটে যথাক্রমে ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও ভিতিনহা গোলমুখে শট নিয়েছিলেন কিন্তু স্কোরবোর্ডে পরিবর্তন আনার জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। পরের পাঁচ মিনিটে ফরাসিরাও একাধিকবার এগিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল।
শেষমেশ অবশ্য স্পট কিক থেকেই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে; আর সেখানে কপাল পুড়েছে লাল জার্সিধারীদের। ১২০ মিনিট ধরে সমানে সমানে লড়াই করেও থেমে যেতে হলো তাঁদের, থেমে গেলো ইউরোতে তাঁদের পথচলা। সেই সাথে প্রশ্ন জেগেছে এটিই কি সিআরসেভনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল?