ক্যারিয়ারের সমাপ্তি রেখায় জেমস অ্যান্ডারসন

সংখ্যার হিসেবে সেটা ২১ বছর! নেহাতই কম নয়; তাও আবার একজন পেস বোলারের ক্যারিয়ার। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি করে গিয়েছেন ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফর্ম্যান্স। বাজে ফর্ম তো দূরে থাক, বরং দিনে দিনে যেন তাঁর বোলিংয়ের ধার বেড়েছে, গল্পটা ইংলিশ বোলার জেমস অ্যান্ডারসনের।
৪১ বছর ৩৪৮ দিন বয়সী এই পেসার ঐতিহাসিক লর্ডসে অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি রেখা টেনে দিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টেই রাঙিয়ে গেলেন তিনি। বিদায় জানাবেন ক্রিকেটকে, তা তিনি আগেই জানিয়েছিলেন। দিনশেষে এলো সেই অন্তিম লগ্ন।
১৮৮ টেস্টে বাগিয়েছেন ৭০৪ উইকেট, যেখানে ৩২ বার ৫ উইকেট এবং ৩ বারের মত ১০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতিহাসের অন্যতম সফল বোলার অ্যান্ডারসন। তাঁর অসংখ্য জাদুকরী সুইং, অজস্র অসাধারণ স্পেল স্মরণে রয়ে যাবে আজীবন।

ক্রিকেটে বল যেন তাঁর হাতের তুলি, আর সেই তুলি দিয়ে তিনি এঁকেছেন উইকেট নামক অসংখ্য চিত্র। সুনিপুণ হাতে তিনি দেখিয়েছেন তাঁর শৈল্পিক গুণাবলী।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যখন তাঁর অভিষেক ঘটেছিল, সেই একবিংশ শতাব্দীর সূচনা লগ্নে, তখন তাঁর বর্তমান সতীর্থদের অনেকেই সদ্য হাটতে শেখা শিশু। কিংবা সবে পা দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে। এই ২১ বছরে নানা ধরনের হাজারো ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কত শত ব্যাটার ২২ গজে দেখিয়েছেন দাপট, তবে অ্যান্ডারসন এলেই যেন নড়েচড়ে বসতে হতো তাঁদের।

অ্যান্ডারসন যেন আদি সংস্করণের আদর্শ এক বিজ্ঞাপন। বেদনাদায়ক হলেও সত্যি যে, এই ডান হাতি বোলারের এমন ঝলক আর দেখা যাবে না ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে। তোলা হয়ে থাকবে সেই জার্সি, স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে তাঁর সব শিল্প।

তাঁর এই বিদায় বেলায় যেন লর্ডসের চারপাশ থেকে অদৃশ্য এক করুণ সুরে ধ্বনিত হচ্ছিল, যেতে নাহি দিব হায়, তবু চলে যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়। বিদায় জেমস মাইকেল অ্যান্ডারসন, বিদায় কিংবদন্তী; দেখা হবে নতুন কোনো ঠিকানায়, নতুন কোনো ভূমিকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link