ক্রেইগের ভাই জেমি!

ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে অলরাউন্ডার ক্রেইগ ওভারটনের পথচলার প্রায় পাঁচ অতিক্রান্ত হয়েছে। কোনো ফরম্যাটেই অবশ্য থিতু হতে পারেননি তিনি। ক্রেইগ ওভারটন নিজের সামর্থ্যের সেরাটা হয়তো দিতে পারেননি। তবে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দেখা মিললো আরেক ওভারটনের। ব্যাট হাতে অভিষেকেই মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন; ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম করে অভিষেকেই নজর কেড়েছেন দীর্ঘদেহী এই অলরাউন্ডার।

মজার ব্যাপার হলো, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে অভিষেক হওয়া জেমি ওভারটন আর ক্রেইগ ওভারটন দুই জমজ ভাই। দু’জনকে আলাদা করে চেনার যেন কায়দা নেই। প্রথম দেখায় দ্বিধায় পড়ে যেতে পারেন যেকেউ। দু’জনই ক্যারিয়ার শুরু করেছেন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে।

ক্রেইগ অবশ্য জাতীয় দলের গালিচায় জেমির বেশ আগেই পা মাড়িয়েছেন। তবে জাতীয় দলের হয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। বরং অধারাবাহিকতায় তিনি ক্রেইগের সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার হুমকির মুখে। যদিও অভিষেক ইনিংসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান ও বল হাতে শিকার করেছিলেন তিন উইকেট। এরপর আর ধারাবাহিক হতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।

দেরীতে আসলেও জেমির শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। যদিও মাত্র তিন রানের আক্ষেপটা পোড়াচ্ছে এই অলরাউন্ডারকে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে, ব্যক্তিগত ৯৭ রানে আউট হন জেমি। অভিষেকে সেঞ্চুরির হাতছানি থাকলেও সেই মাইলফলকে পা দিতে পারেননি এই ইংলিশ অলরাউন্ডার।

দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে জনি বেয়ারস্টোর সাথে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় জেমির ব্যাট; খেলেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। জেমির সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল পুরো হেডিংলি। কিন্তু বিধিবাম! ট্রেন্ট বোল্টের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা ড্রাইভ করতে গিয়ে ড্যারেল মিশেলের কাছে স্লিপে ধরা পড়েন। ব্যাস, অভিষেকেই সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরেন জেমি।

২৮ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক। জাতীয় দল অবধি উঠে আসতে বেশ সময় লেগেছে জেমির। ক্রেইগ অবশ্য ২৩ বছর বয়সেই জাতীয় দলের সবুজ গালিচায় পথচলা শুরু করেন। ক্রেইগ ও জেমি ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম জমজ ভাই হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলার কীর্তি গড়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবশ্য আরেকটি রেকর্ডের সাক্ষী হতে পারতো হেডিংলি। জেমির অভিষেক টেস্টে বেঞ্চেই ছিলেন ভাই ক্রেইগ ওভারটন।

জেমস অ্যান্ডারসনের ইনজুরিতে জেমির ভাগ্য খুললেও ক্রেইগ নিজের জায়গা একাদশে মেলাতে পারেননি। ম্যাথু পটসের জায়গায় ক্রেইগের দলে আসার একটা গুঞ্জন অবশ্য ছিল। কিন্তু সেই সুযোগটা আর হয়ে উঠেনি। নাহলে হেডিংলিতে এই জমজ ভাইদ্বয়কে একসাথে খেলতে দেখা যেত ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে।

ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্য দুই ভাই একে অপরের পক্ষে-বিপক্ষে খেলেছেন। সপ্তাহখানেক আগেই কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে জেমির বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন ক্রেইগ। জেমির বাউন্সারে আঘাত পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন তিনি। কাউন্টিতে ক্রেইগ বর্তমানে সারে ও জেমি খেলছেন সমারসেটের হয়ে।

দু’জনের মধ্যে জেমি তিন মিনিটের ছোট। সে হিসেবে অবশ্য খানিকটা দেরীতেই জাতীয় দলে এসেছেন তিনি। তবে, দুই ভাই একসাথে খেলার সুযোগটা এখনও আছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হয়তো দেখা যেতে পারে একই ম্যাচে দু’জনকে একসাথে মাঠ মাতাতে। দু’জনই নিশ্চয়ই চাইবেন ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করতে। অস্ট্রেলিয়ার ওয়াহ ভাইদ্বয়ের মত ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদেরকে স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন এই দুই সম্ভাবনাময় ইংলিশ তারকা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link