নাম দিয়েছি ভালবাসা

আগাসির মতে স্টেফি গ্রাফই হলেন, তাঁর জীবনের কঠিনতম জয়। সাবেক এই টেনিস তারকা তার ক্যারিয়ারে উইম্বলডন, অলিম্পিকে সোনাসহ একের পর এক পদক জিতলেও রীতিমতো চড়াই উৎরাই পার করে গ্রাফকে তাঁর জীবনে পেয়েছেন। হ্যাঁ, নারীর মন জয় করা এর যেকোনোটা থেকে কঠিন। আর সেই নারীটি যদি হন - স্টেফি গ্রাফ তাহলে তো কথাই নেই।

ভালবাসা – সে তো কমবেশি সবার জীবনেই আসে। তা সে সাধারণ কোনো জীবন কিংবা হোক অসাধারণ তারকা। কিছু কিছু প্রেমকাহিনী একদম হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এবার আমরা সেরকমই একটি সফল প্রেমের দুর্দান্ত গল্প জানব। যে গল্পের মূলচরিত্র টেনিসের দুনিয়ার দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র – তাঁরা হলেন আন্দ্রে আগাসি এবং স্টেফি গ্রাফ।

আগাসির মতে স্টেফি গ্রাফই হলেন, তাঁর জীবনের কঠিনতম জয়। সাবেক এই টেনিস তারকা তার ক্যারিয়ারে উইম্বলডন, অলিম্পিকে সোনাসহ একের পর এক পদক জিতলেও রীতিমতো চড়াই উৎরাই পার করে গ্রাফকে তাঁর জীবনে পেয়েছেন। হ্যাঁ, নারীর মন জয় করা এর যেকোনোটা থেকে কঠিন। আর সেই নারীটি যদি হন – স্টেফি গ্রাফ তাহলে তো কথাই নেই।

স্টেফি গ্রাফকে নিজের করে পাওয়ার ঠিক নয় বছর আগের ঘটনা। সময়টা তখন ১৯৯২। সে বছর উইম্বলডনের নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হলেন স্টেফি গ্রাফ। আর পুরুষদের এককে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী হলেন আগাসি। উইম্বলডন এর নিয়মানুযায়ী নারী ও পুরুষ দুই চ্যাম্পিয়নকে একটা বল ডান্সে অংশগ্রহণ করতে হতো।

অধীর আগ্রহে আগাসি অপেক্ষা করছিলেন তাঁর জীবনের আকাঙ্ক্ষিত ললনা স্টেফি গ্রাফের সাথে বল ডান্সের সুযোগের জন্য। এমনকি এই উপলক্ষে টাক্সিডো শপিংয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু খুব সম্ভবত ভাগ্য একটু উপহাস করতে চাইলো আগাসির সাথে। নইলে কেন সে বছর থেকই বল ডান্স প্রথা হুট করে বন্ধ হয়ে যাবে উইম্বলডনে!

আগাসী হতাশ হয়ে পড়লেন। আকাঙ্ক্ষিত স্টেফি গ্রাফের সাথে কেবল আনুষ্ঠানিক পরিচিতি এবং ছবি তুলেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাঁর। এই গল্প এখানেই থেমে গেল, কিংবা গল্পের মোড় ঘুরে গেল! এরপর আগাসি ১৯৯৩ সাল থেকে মার্কিন অভিনেত্রী ব্রুক শিল্ডের সাথে সম্পর্কে জড়ালেন। আর ওদিকে স্টেফি গ্রাফ ১৯৯২ থেকে ৯৯ অবধি ফর্মুলা ওয়ান রেসার মাইকেল বার্তেলস এর সাথে সম্পর্কে ছিলেন।

আগাসী ও গ্রাফের পুনরায় দেখা হয় ১৯৯৯ সালে। ততদিনে শিল্ডের সাথে আগাসীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে এবং গ্রাফ আর বার্তেলসও আর একসাথে ছিলেন না। নতুন করে এখান থেকে শুরু হলো ‘আগাসী – গ্রাফ অধ্যায়’।

এই অধ্যায়ে আগাসি খুব করে চেষ্টা চালিয়েছেন গ্রাফের মন জয় করার। এবার আর সুযোগ এর অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজেই সুযোগ তৈরি করে নিয়েছেন। নিজের টেনিস কোচকে দিয়ে স্টেফি গ্রাফের কোচের সাথে যোগাযোগ করিয়ে একসাথে একটি প্র্যাকটিস সেশনেরও আয়োজন করিয়েছিলেন তিনি। গ্রাফকে গোলাপের বিশাল তোড়া পাঠানো থেকে শুরু করে, কোচের সাথে প্রেম প্রস্তাবের লাইন অনুশীলন – কি করেননি তিনি!

অবশেষে ফ্রেঞ্চ ওপেন ও সেই উইম্বলডনই তাঁদের একে অপরের কাছে আসার সুযোগ করে দেয়! এই দুই টুর্নামেন্ট এর মধ্যে বিমানে লন্ডন যাত্রাকালে আগাসী বিমানের মেন্যু কার্ড দিয়ে গ্রাফের জন্মদিনের কার্ড বানিয়ে দিয়েছিলেন। অবশেষে এবারের চেষ্টায় আগাসি সফল হলেন।

সেই গ্রীষ্ম থেকে তাদের উষ্ম প্রেম শুরু হলো। ১৯৯৯ সালে আগাসী এবং গ্রাফের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। তারপর গ্রাফ ও আগাসি লাস ভেগাসে একসাথে বাস করতে শুরু করেন। ২০০১ সালের ২২ অক্টোবর তারা নিজেদের বাড়ির অঙ্গিনায় খালি পায়ে এবং জিনস পড়ে একেবারে অনাড়ম্বরভাবে বিয়ে করেন। যেখানে শুধুমাত্র তাঁদের দু’জনের মা উপস্থিত ছিলেন। কিছু ভালবাসার পূর্ণতায় খুব বেশি আয়োজন দরকার হয়না।

তাঁদের সোনার সংসারে জাদেন জিল নামে এক পুত্র এবং জাজ এলি নামক একটি কন্যা রয়েছে। গত বছর অক্টোবরেই ‘টেনিসের পাওয়ার কাপল’ নামে খ্যাত আন্দ্রে আগাসি এবং স্টেফি গ্রাফ উদযাপন করে ফেলেছেন দাম্পত্য জীবনের কুঁড়ি বছর! একটি সফল প্রেমের গল্প বলতে যা বোঝায়, তাঁরা ঠিক তাই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...