জেসন রয়, কলকাতার ব্যাথার উপশম

সাকিব আল হাসান এবারের আইপিএল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় বদলি হিসেবে কলকাতা দলে ভেরায় জেসন রয়কে। তখন কে ভেবেছিলো কলকাতার বিশাল এক সমস্যা সমাধান হবেন তিনি। আগের ম্যাচ গুলোতে যেখানে ওপেনিং নিয়ে কলকাতার যাচ্ছেতাই অবস্থা, জেসন রয় একাদশে আসতেই যেন বদলে গেলো সব।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পরিকল্পনাতেই ছিলেন না। সাকিব আল হাসান এবারের আইপিএল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় বদলি হিসেবে কলকাতা দলে ভেরায় জেসন রয়কে। তখন কে ভেবেছিলো কলকাতার বিশাল এক সমস্যা সমাধান হবেন তিনি। আগের ম্যাচ গুলোতে যেখানে ওপেনিং নিয়ে কলকাতার যাচ্ছেতাই অবস্থা, জেসন রয় একাদশে আসতেই যেন বদলে গেলো সব।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো ইনিংসের গতিপথ ঠিক করে দেয় পাওয়ার প্লের ব্যবহার। প্রথম ছয় ওভারে ফিল্ডিংয়ের বাধ্যবাধকতা ব্যাটিং করা দল ব্যবহার করতে পারার ওপরই বড় স্কোর গড়া বা বড় স্কোর তাড়া করতে পারার ভিত রচিত হয়।

এবারের আইপিএলের প্রথম কয়েক ম্যাচে এই জায়গাতেই বারবার হতাশ করছিলেন কলকাতার ওপেনাররা। প্রথম থেকে সুযোগ পাওয়া রহমানুল্লাহ গুরবাজ একটি ম্যাচে রান পেলেও বাকি ম্যাচ গুলোতে ছিলেন ব্যর্থ।

৪৬/৩, ৪৭/২,৪৩/২, ৬২/৩, ৫৭/২, ৩৫/৩, ৩৮/২ ; টুর্নামেন্টে কলকাতার পাওয়ার প্লের স্কোরই বলে দেয় ইনিংসের প্রথম থেকেই কতটা ধুঁকছে কলকাতা। রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নারায়ন জগদিশান, লিটন দাসদের নিয়ে বেশ কয়েকটি ওপেনিং কম্বিনেশন সাজানোর চেষ্টা করেছে কলকাতা।

লাভ হয়নি খুব একটা। শেষ পর্যন্ত জেসন রয়ের কল্যানে সেই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছে কলকাতা। কলকাতার নিভতে বসা আশার প্রদীপে আলো দিয়েছেন এই ইংলিশ ব্যাটার।

সবশেষ ম্যাচে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে পাওয়ার প্লে তে বিনা উইকেটে ৬৬ রান করে কেকেআর। জেসন রয় ও নারায়ণ জগদীশানের ওপেনিং জুটিই কলকাতাকে টুর্নামেন্টে টিকিয়ে রাখা জয় এনে দেয়। জুটিতে বিধ্বংসী ভূমিকায় ছিলেন রয়। জগদীশান ১০০ স্ট্রাইক রেটে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে থাকলেও জেসন রয় যেন ব্যাঙ্গালুরু বোলারদের তুলোধুনো করছিলেন।

মূলত জেসন রয় একাদশে আসার পর থেকেই কলকাতার টপ অর্ডারকে আরো শক্তিশালী মনে হচ্ছে। রয় আর জগদীশানের জুটিটি ছিলো গত আট ইনিংসের মধ্যে কলকাতার ষষ্ঠ ওপেনিং জুটি। এই পরিসংখ্যানই সাক্ষ্য দেয় ওপেনিং নিয়ে কতটা ভুগছিলো কলকাতা।

দিল্লীর বিপক্ষে একাদশে প্রথমবারের মত সুযোগ পেয়েই ৩৯ বলে ৪৩ রান করেন রয়। কলকাতার পুরো ব্যাটিং লাইনআপ ব্যর্থ ছিলো সেদিন। প্রথম ম্যাচেই রয় ছিলেন দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

পরের ম্যাচে হ্যামিস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে পাঁচ নাম্বারে নামতে হয় রয়কে। কিন্তু চোট নিয়েও ২৬ বলে ৬১ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন তিনি।

আর ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে তো রয় ছিলেন নিজের সেরা ছন্দেই। পাওয়ার প্লে তে ২০ বল মোকাবেলা করে ৪৮ রান তোলেন রয়। কলকাতায়ও পেয়ে যায় বড় স্কোরের ভিত। স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে রয়ের দুর্বলতার অপবাদ অনেকটাই ঘুচিয়েছেন তিনি এই আইপিএলে।

ব্যাঙ্গালুরুর স্পিনারদের বিপক্ষে ১১ বলে ২৭২ স্ট্রাইকরেটে ৩০ রান তোলেন রয়। কলকাতার টপ অর্ডার নিয়ে মাথা ব্যাথা তাই এখন উপশম হয়ে গেছে পুরোপুরি সেটা বলাই যায়।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় একের পর এক ম্যাচ হেতে টুর্নামেন্টে বেশ ব্যাকফুটেই চলে গিয়েছিলো কলকাতা। কিন্তু প্রায় খাদের কিনার চলে যাওয়া কলকাতার জন্য এক প্রকার ত্রানকর্তা হিসেবেই এসেছেন জেসন রয়। প্রতিটি ম্যাচেই দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।

আইপিএল শুরুর দুইদিন আগেও যিনি কোনো দলই পাননি, সেই রয়ই কিনা এই মূহুর্তে কলকাতার মূল খেলোয়াড়। আইপিএল থেকে সাকিবের নাম প্রত্যাহার কলকাতার জন্য সাপেবর হয়েছে বলাই যায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...