সাত ম্যাচে মাত্র দুই জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সুবিধাজনক স্থানে ছিলো না কলকাতা নাইট রাইডার্স। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে তাই প্রতিটা ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো কলকাতার কাছে।
জয় ছাড়া কোন বিকল্পও ছিলো না তাদের। নিজেদের অষ্টম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে কাঙ্খিত সেই জয় দিয়েই আইপিএলের দ্বিতীয় অংশ শুরু করলো ইয়ন মরগানের দল।
এই জয়ের ফলে পাঞ্জাব কিংসকে পিছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে উঠে এলো কলকাতা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে কলকাতার জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। বরুণ চক্রবর্তী ও আন্দ্রে রাসেলের দারুণ বোলিংয়ে ৯৩ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েছিল কলকাতা। দু’জনই শিকার করেন তিনটি করে উইকেট। রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের দারুণ ব্যাটিংয়ে সহজেই লক্ষ্যে পৌছে যায় মরগানের দল।
রান তাড়া করতে নেমে উদাবোধনী জুটিতেই ৮২ রান তুলে ফেলেন দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ভেঙ্কটেস আইয়ার। জয় থেকে মাত্র ১১ রান দূরে থাকতে যুবেন্দ্র চাহালকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে আউট হয়ে যান গিল। আউট হওয়ার আগে গিলের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৪৮ রান। আরেক ওপেনার আইয়ার অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ৪২ রান করে।
গিলের ইনিংসে ছয়টি চারের সাথে ছিলো একটি ছয় এবং আইয়ার সাতটি চারের সাথে মারেন একটি ছয়। বেঙ্গালুরুর হয়ে একমাত্র উইকেটটি শিকার করেন যুবেন্দ্র চাহাল।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বেঙ্গালুরুর শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর বলে লাইন মিস করে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান বিরাট কোহলি। ৪ বলে ৫ রান করে কোহলি ফিরে যাওয়ার পর সুবিধা করতে পারেননি আরেক ওপেনার দেবদূত পাডিকালও। রানের জন্য সংগ্রাম করতে থাকা পাডিকাল ফিরে যান পাওয়ার প্লের শেষ বলে।
লকি ফার্গুসনকে কাট করে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ২২ রান। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারিয়ে ৪১ রান সংগ্রহ করে বেঙ্গালুরু। এরপর আন্দ্রে রাসেলের জোড়া আঘাতে শ্রীকার ভারত ও এবি ডি ভিলিয়ার্স ফিরে গেলে চাপে পড়ে বেঙ্গালুরু। ১৯ বলে ১৬ রান করেন ভারত, আর রানের খাতায় খুলতে পারেননি ভিলিয়ার্স।
৪১ রানে ৪ উইকেট হারানো বেঙ্গালুরু এরপর আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি। ১২ তম ওভারে টানা দুই বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ফিরে গেলে বড় রানের স্বপ্নও শেষ হয় কোহলির দলের। ১৭ বলে ১০ রান আসে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। আর শূন্য রানে ফিরে যান হাসারাঙ্গা। দুটি উইকেটই শিকার করেন বরুণ চক্রবর্তী।
এই পেসারের পরের ওভারে ফিরে যান শচিন বেবি ও এক ওভার পর রান আউটের ফাঁদে পড়েন কাইল জেমিসন। শচিন করেন ৭ রান এবং জেমিসনের ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। এরপর হার্শাল প্যাটেল ও মোহাম্মদ সিরাজ ফিরে গেলে এক ওভার বাকি থাকতেই ৯২ রানে অল আউট হয়ে যায় বেঙ্গালুরু।
কলকাতার বোলারদের ভিতর তিনটি উইকেট শিকার করেন বরুণ চক্রবর্তী ও আন্দ্রে রাসেল। এছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেন লকি ফার্গুসন এবং একটি উইকেট পেয়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ৯২/১০ (ওভার: ১৯; কোহলি- ৫, পাডিকাল- ২২, ভারত- ১৬, ম্যাক্সওয়েল- ১০, ভিলিয়ার্স- ০, শচিন- ৭, জেমিসন- ৪, প্যাটেল- ১২, সিরাজ- ৮) (বরুণ- ৪-০-১৩-৩, ফার্গুসন- ৪-০-২৪-২, রাসেল- ৩-০-৯-৩)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ৯৪/১ (ওভার: ১০; গিল- ৪৮, আইয়ার- ৪১*, রাসেল- ০*) (চাহাল- ২-০-২৩-১)
ফলাফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৯ উইকেটে জয়ী।