টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চ, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ব্যাটিংটা করার জন্য লিটন দাস বেছে নিলেন সেই ম্যাচকেই। ২৭ বলে ৬০ রানের ইনিংসটা পরিস্থিতি আর প্রতিপক্ষ বিবেচনা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে বিবেচিত হবে।
ওই এক ইনিংসই লিটনকে প্রথমবারের মত খেলার সুযোগ করে দিয়েছে তা বলা যায় অনেকটাই। লিটনের সামর্থ্য আর প্রতিভা তো বটেই, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ইনিংসও যে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষকে লিটনকে দলে ডাকার ক্ষেত্রে মোটাদাগে প্রভাবিত করেছে তা বলতেই হবে।
আব্দুর রাজ্জাক, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ আশরাফুল, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান কিংবা মুস্তাফিজুর রহমানের পর সপ্তম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে এবার আইপিএলে দল পেয়েছেন লিটন দাস। প্রথমবারের মত আইপিএলে খেলতে যাবার আগে দারুণ উচ্ছ্বসিত লিটনও। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে লিটন বলেন, ‘নি:সন্দেহে এটা আমার কাছে দারুণ সুযোগ। একজন বাঙালি হিসেবে কলকাতায় খেলব, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে বলুন। কলকাতায় যেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। আইপিএলে ডাক পাচ্ছি, এটাই বড় ব্যাপার।’
বিশ্বকাপের সেই দুর্দান্ত ইনিংস অনেকটাই প্রভাবক হয়েছে লিটনের আইপিএলে ডাক পাবার পেছনে, এমনটা বিশ্বাস করেন লিটনও, ‘নিশ্চিত ভাবে জানি না ওই একটা ইনিংসের জন্যই হয়েছে কিনা। কিন্তু ফ্রাঞ্চাইজি ও ভাবে ভাবলে, হতে পারে। আসলে মঞ্চটা ছিল বিশ্বকাপ আর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। তবে আমার চেয়েও ভালো বলতে পারবে কেকেআর কর্তৃপক্ষ যারা আমাকে নিয়েছে।’
প্রথমবার আইপিএল খেলার সময় বেশ পরিচিত পরিবেশই পাবেন লিটন। দলে আছেন দীর্ঘদিন কেকেআরে খেলা আর বাংলাদেশ দলে তাঁর সতীর্থ সাকিব আল হাসান। শুধু সাকিবই নন, আছেন বিপিএলে লিটনের সাথে একই দলে খেলা আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনরাও।
লিটন বলেন, ‘সাকিব আমার জাতীয় দলের সতীর্থ। রাসেল, নারাইনদের সাথেও আমি বহুদিন খেলেছি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আমি যে দলে খেলি, সে দলে রাসেল-নারাইনও খেলে। আমাদের মধ্যে ভালো একটা বন্ডিং আছে। একাত্মতা আছে। আর আইপিএলের মত মঞ্চে খেলতে পারলে আমার ভবিষ্যতেও লাভ হবে প্রচুর। দ্বিতীয়ত, বিশ্বকাপ ভারতে খেলা হবে, তাই আইপিএলের পুরোটা খেলতে পারলে মাঠগুলো সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা হবে আমার। পিচ সম্পর্কেও ধারণা পাব।’
একাদশে সুযোগ পেলে ব্যাটিং আর উইকেট কিপিং দুই দিক থেকেই দলকে সাহায্য করতে চান লিটন। জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা নিঙরে দিতে চান কলকাতার জার্সিতে। লিটন বলেন, ‘দেশের হয়ে যখন খেলি একই কাজ করি। সুযোগ পেলে যা অভিজ্ঞতা আছে তা দিয়ে সাহায্য করব দলকে।’
২০২২ সাল থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে আছেন লিটন। সব ফরমেট মিলিয়ে ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এই ব্যাটার। নিজের খেলা সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সত্তোরোর্ধ রানের ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। কেকেআরের জার্সিতেও নিজের সেই দুর্দান্ত ফর্মকে টেনে নিয়ে যেতে চাইবেন লিটন।
কেকেআরের হয়ে নিজের লক্ষ্য কি এমন প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেন, ‘কেকেআরে এবারই আমার প্রথম। প্রথম লক্ষ্য টিমকে প্লে অফে নিয়ে যাওয়া। আমাদের সবারই তাই ভাবনা, কিভাবে দলে পরের রাউন্ডে নিয়ে যাওয়া যায়। চ্যাম্পিয়ন কে হবে তা কেউ বলতে পারে না, তাই আগে প্লে অফে যেতে হবে আমাদের।’